Thursday, November 6, 2025

“সব আশা ছেড়ে দিয়েছিলাম, ভেবেছিলাম ম.রেই যাব”! ভ.য়াবহ অভিজ্ঞতা করমণ্ডল এক্সপ্রেসের যাত্রীদের

Date:

Share post:

ঘড়িতে সন্ধে ৬:৫০ মিনিট। আচমকাই প্রবল চিৎকার, তারপরেই ঝাঁকুনি দিয়ে থেমে গেল ট্রেন! দুর্ঘটনার ১ সেকেন্ড আগে ঠিক কী ঘটল, হাড়হিম করা সেই অভিজ্ঞতা জানিয়েছেন করমণ্ডল এক্সপ্রেসের (Coromandel Express) যাত্রীরা। পেশায় পেন্টার এক ব্যক্তি যিনি কলকাতার বাসিন্দা। জানা গিয়েছে, বেশ কয়েকজনের সঙ্গে তাঁরা চেন্নাই (Chennai) যাচ্ছিলেন নিজেদের কাজে। কিন্তু তা আর যাওয়া হল না। আপাতত বাড়ি ফেরার প্রহর গুণছেন আটকে থাকা যাত্রীরা।

এক যাত্রী সংবাদ জানিয়েছেন, শুক্রবার হাওড়া থেকে ছেড়ে যাওয়া করমণ্ডল এক্সপ্রেসের এস৫-কোচে ছিলেন তিনি। সন্ধ্যা ৬:৫০ মিনিট নাগাদ আচমকা বিকট শব্দ হয়। দাঁড়িয়ে যায় ট্রেন। তারপরেই শুরু হয় আর্তনাদ, চিৎকার, চেঁচামেচি, হাহাকার। যদিও তিনি যে কামরায় যাচ্ছিলেন সেই কামরায় তেমন তীব্র প্রভাব পড়েনি দুর্ঘটনার। তবে সকলেই কম-বেশি আহত হয়েছেন। অন্যদিকে, কাঁপা কাঁপা গলায় বাড়িতে ফোন, বেঁচে আছি। চিন্তা করো না। কেউ আবার স্টেশনে বসে রীতিমতো কাঁপছেন। স্থানীয় বাসিন্দার হাত ধরে বলছেন, একটু বলে দেবেন বাড়িতে, বেঁচে আছি আমি। বেঁচে থাকার যে এত আনন্দ তা বোধ হয় আগে বোঝেননি তাঁরা।

জানা গিয়েছে, দুর্ঘটনাগ্রস্ত করমণ্ডল এক্সপ্রেসে ছিলেন গোবিন্দ মণ্ডল নামে এক যাত্রী। তিনি সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, আমি সব আশা ছেড়ে দিয়েছিলাম। ভেবেছিলাম হয়তো মরেই যাব। একটা ভাঙা জানলা দিয়ে কোনওরকমে বেরিয়ে এসেছি। প্রথমে একটি ডিসপেন্সরিতে প্রাথমিক চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। তবে এখন বিপদ থেকে বড় বাঁচা বেঁচে গিয়েছি।

অপর এক যাত্রী জানিয়েছেন, দুর্ঘটনার আগেও বুঝতে পারলাম না এত বড় কিছু হতে পারে। কিছুর সঙ্গে ধাক্কা লেগেছে এটাও বুঝতে পারলাম না। তাহলে তো প্রচন্ড ঝাঁকুনি হত। কিন্তু এটা বুঝতে পারলাম ট্রেনটি লাইন থেকে নেমে গিয়েছে। পাশাপাশি অপর এক যাত্রী জানিয়েছেন, দুর্ঘটনার আগেও বুঝতে পারলাম না এত বড় কিছু হতে পারে। কিছুর সঙ্গে ধাক্কা লেগেছে এটাও বুঝতে পারলাম না। তাহলে তো প্রচন্ড ঝাঁকুনি হত। কিন্তু এটা বুঝতে পারলাম ট্রেনটি লাইন থেকে নেমে গিয়েছে।

উল্লেখ্য, রেললাইনে সাদা কাপড়ে ঢাকা মৃতদেহের সারি। ১২ ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও এখনও উদ্ধারকাজ চলছে। ট্রেনের দুমড়েমুচড়ে যাওয়া কামরা থেকে একের পর এক দেহ বের করেন নিয়ে আসছেন রাজ্য এবং কেন্দ্রীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর সদস্যরা। শেষ পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, মৃতের সংখ্যা ২৮৮, আহত প্রায় ১০০০ জন। তবে উদ্ধারকারীদের অনুমান মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। আহতের সংখ্যাও আরও বাড়বে। ওড়িশার রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলী বাহিনী, সেনাবাহিনী, রেল পুলিশ, একাধিক এনজিও-র পাশাপাশি উদ্ধারকাজে হাত লাগিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।

 

 

spot_img

Related articles

রাত পোহালে প্রথম দফার নির্বাচন বিহারে: হিংসা ঠেকানোই চ্যালেঞ্জ

নির্বাচনের এক সপ্তাহ আগে পরপর খুন। রাজনৈতিক নেতা থেকে সমর্থক। বিহার বিধানসভা নির্বাচনে তাই শান্তি বজায় রাখাই চ্যালেঞ্জ...

বাংলা কথায় দক্ষতা, কোন পদে পান তৃপ্তি? দীপ্তিকে নিয়ে স্মৃতির ঝাঁপি খুললেন ‘অভিভাবক’ মিঠু

সন্দীপ সুর বাংলার প্রথম ক্রিকেটার হিসাবে আইসিসি একদিনের বিশ্বকাপ জিতেছেন রিচা ঘোষ কিন্তু ভারতীয় দলের আরও এক ক্রিকেটারের সঙ্গে...

দিঘার জগন্নাথ ধামে প্রথম রাস উৎসবে ভক্তদের ঢল 

দিঘার জগন্নাথ ধামে এবারই প্রথম পালিত হল রাস উৎসব, আর সেই উপলক্ষে সকাল থেকেই উপচে পড়েছে ভক্তসমুদ্র। উৎসবের...

বেঁচে আছেন, তাই জানতে পারলেন ‘দোষী নন’: আজব বিচার উত্তরপ্রদেশে

বিচারের বাণী নীরবে নিভৃতে কাঁদে। উত্তরপ্রদেশের আলিগড়ের (Aligarh) মিঠু সিংয়ের জীবনে যেন সেটাই সত্যি হতে বসেছিল। অবশেষে ৫৫...