Saturday, August 23, 2025

‘লঙ্ঘিত হবে অরণ্যবাসীর অধিকার’, নয়া বনসংরক্ষণ বিল পাশ লোকসভায়

Date:

Share post:

একদিকে যখন মণিপুর হিংসা নিয়ে উত্তাল সংসদ, ঠিক সেই সময়ে কোনও আলোচনা ছাড়াই লোকসভায় পাশ করিয়ে নেওয়া হল বিতর্কিত বন সংরক্ষণ (সংশোধনী) বিল। মোদি সরকারের(Modi Govt) এহেন পদক্ষেপে ক্ষুব্ধ বিরোধীরা(Opposition)। তাঁদের অভিযোগ, ” ঘনিষ্ঠ শিল্পপতিদের হাতে হাজার হাজার বর্গ কিলোমিটার অরণ্যভূমি তুলে দেওয়ার উদ্দেশ্যেই নজিরবিহীন দ্রুততায় নয়া বন সংরক্ষণ আইন কার্যকর করতে সক্রিয় হয়েছে কেন্দ্র।” তাৎপর্যপূর্ণ বিষয় হল কোনওরকম আলোচনা ছাড়াই পাশ করানো হয়েছে বিলটি।

কেন্দ্রীয় বন ও পরিবেশ মন্ত্রী ভূপেন্দ্র যাদব বুধবার লোকসভায় বন সংরক্ষণ সংশোধনী বিল পেশ করেন। কোনও আলোচনা ছাড়াই তা পাশ হয়ে যায়। গত এপ্রিলে বাজেট অধিবেশনে সরকার পক্ষের তরফে বিলটি পেশের পরে তা পাঠানো হয়েছিল সংসদের সিলেক্ট কমিটিতে। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে বন ও পরিবেশ মন্ত্রকের সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে বিল পাঠানো হয়নি। স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান, ইউপিএ সরকারের বন ও পরিবেশ মন্ত্রী জয়রাম রমেশ সে সময় বলেছিলেন, “আমি স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান বলেই ওই কমিটিতে বিল পাঠানো হয়নি।” বিজেপির ঘনিষ্ঠ শিল্পপতিদের সুবিধা পাইয়ে দিতে ওই বিলের খসড়া চূড়ান্ত করা হবে বলে সে সময়ই অভিযোগ করেছিলেন রমেশ। নয়া বিলে যে ভাবে সীমান্ত থেকে ১০০ কিলোমিটার এলাকা পর্যন্ত বনভূমি ধ্বংসের বন্দোবস্ত রাখা হয়েছে, তাতে জনজাতিদের স্বার্থে ইউপিএ আমলে চালু করা ‘অরণ্যের অধিকার আইন’ লঙ্ঘিত হবে বলে আশঙ্কা রয়েছে। চিড়িয়াখানা, সাফারি পার্ক এবং ইকো-ট্যুরিজ়মের অছিলায় শিল্পগোষ্ঠীগুলি সহজেই সরকারি ব্যবস্থাপনা কাজে লাগিয়ে অরণ্যবাসী জনজাতিদের উৎখাত করতে পারবে বলে অভিযোগ। যদিও ভূপেন্দ্র বলেন, “রেললাইন, সড়কের মতো উন্নয়ন প্রকল্পের জন্যই অরণ্যভূমির নিয়ন্ত্রিত ব্যবহারের সুযোগ দেওয়া হয়েছে বিলের খসড়ায়।”

১৯৮০ সালের বন সংরক্ষণ আইন অনুযায়ী, অরণ্য এলাকায় কোনও অন্য ধরনের কাজ করা যাবে না। তার জন্য মন্ত্রকের অনুমতি লাগবে। সেই আইনে সংশোধন করে ‘জাতীয় স্তরে গুরুত্বপূর্ণ কৌশলগত প্রকল্প ও নিরাপত্তা বিষয়ক প্রকল্প’-এর ক্ষেত্রে এই বিধিনিষেধ তুলে দেওয়া হচ্ছে। এর ফলে অরণ্যের অধিকার আইন নির্বিচারে লঙ্ঘনের পথ তৈরি হবে বলে অভিযোগ। জঙ্গলে যাঁদের অধিকার, সেই আদিবাসীদের গৃহহীন হওয়ার সম্ভবনা বাড়বে। ঝাড়খণ্ডের গোড্ডায় অরণ্যভূমিতে আদানিদের বিদ্যুৎ প্রকল্প নিয়ে অতীতে প্রবল বিতর্ক হয়েছে। এ বার অনেক সহজে রূপায়ণ করা যাবে এমন প্রকল্প।

spot_img

Related articles

সঠিক পরিকল্পনাই ডায়মন্ডহারবারের সাফল্যের চাবিকাঠি, মনে করছেন আকাশ বন্দ্যোপাধ্যায়

মাত্র তিন বছরের ক্লাব। কিন্তু কী অসাধারণ সাফল্য। কলকাতা লিগ, আইলিগ থ্রি থেকে আইলিগ টু জিতে এবার আইলিগের...

অসংগঠিত শ্রমিক-ক্ষেত্রে পথ দেখাচ্ছে বাংলা: সাহায্য পেলেন ৭২০ শ্রমিক

একের পর এক নতুন প্রকল্প, অসংগঠিত শ্রমিকদের দাবিদাওয়া নিয়ে লাগাতার আলোচনা, তাঁদের পরিবারের প্রতি নজর রাখার ব্যাপারে তৎপর...

প্রাপ্য চায় বাংলা, উপহার না: মোদিকে জবাব তৃণমূলের

বাংলার মানুষ উপহার চায় না, প্রাপ্য চায়। উপহার দিয়ে বাংলার মানুষকে অপমান করবেন না। বাংলায় বরাদ্দ নিয়ে শুক্রবার...

অনুপ্রবেশ ঠেকাতে ব্যর্থ শাহ, শাক দিয়ে মাছ ঢাকার চেষ্টা মোদির: কটাক্ষ তৃণমূলের

অনুপ্রবেশ ইস্যুকে বার বার জাগিয়ে তুলে কেন্দ্রের বিজেপি সরকার আদতে নিজেদের ভুল নিজেরাই চোখ আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেয়।...