আজ কী ঘটেছিল জানেন?

মহাশ্বেতা দেবী (১৯২৬-২০১৬) এদিন বাংলাদেশের পাবনা (অধুনা রাজশাহি) জেলার নতুন ভারেঙ্গা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। বাবা : কল্লোল যুগের বিখ্যাত লেখক যুবনাশ্ব বা মণীশ ঘটক। কাকা : ঋত্বিক ঘটক। বড়মামা : অর্থনীতিবিদ, ‘ইকনমিক অ্যান্ড পলিটিকাল উইকলি’ পত্রিকার প্রতিষ্ঠাতা শচীন চৌধুরী। মায়ের মামাতো ভাই : কবি অমিয় চক্রবর্তী। ক্লাস ফাইভ থেকে শান্তিনিকেতনে পড়াশোনা। সেখানে রবীন্দ্রনাথ বাংলার ক্লাস নেন, নন্দলাল বসু ও রামকিঙ্কর বেইজকে শিক্ষক হিসেবে পাওয়া যায়। জ্ঞানপীঠ থেকে ম্যাগসাইসাই পুরস্কারে ভূষিত মহাশ্বেতা যতখানি লেখক, ততখানিই অ্যাক্টিভিস্ট। একটিমাত্র অভিধায় মহাশ্বেতাকে ধরা তাই অসম্ভব। তিনি ‘হাজার চুরাশির মা’। ‘অরণ্যের অধিকার’-এর সেই প্রবাদপ্রতিম লাইন ‘উলগুলানের মরণ নাই’-এর জননী। অন্যদিকে তিনি সিঙ্গুর-নন্দীগ্রাম আন্দোলনের অন্যতম মুখ। একদিকে তাঁর লেখায় বিহার-মধ্যপ্রদেশের কুর্মি, দুসাদ, ভাঙ্গিরা সজোরে বাঙালি পাঠকের দরজায় ঘা দেয়। আর এক মহাশ্বেতা অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি প্রেস থেকে দিল্লি বোর্ডের শিক্ষার্থীদের জন্য ‘আনন্দপাঠ’ নামে সঙ্কলন তৈরি করেন, জিম করবেট থেকে লু স্যুন, ভেরিয়ের এলউইনকে নিয়ে আসেন বাংলা অনুবাদে। তাঁর বাড়িতে গ্রাম থেকে আসা হতদরিদ্র মানুষের ছিল নিত্য আনাগোনা। নিম্নবর্গের ইতিহাসচর্চা জনপ্রিয় হওয়ার অনেক আগেই তো মহাশ্বেতার লেখায় উঠে আসছিল অশ্রুত সব স্বর। ১৯৬৬ সালে বেরিয়েছিল ‘কবি বন্দ্যঘটী গাঞির জীবন ও মৃত্যু’। সেখানে ঔপন্যাসিকের স্বীকারোক্তি : ‘অনেকদিন ধরেই ইতিহাসের রোমান্স আমাকে আর আকর্ষণ করছিল না। এমন এক যুবকের কথা লিখতে চেয়েছি যে তার জন্ম ও জীবনকে অতিক্রম করে নিজের জন্য একটি জগৎ তৈরি করতে চেয়েছিল, যে জগৎ তার নিজের সৃষ্ট।’ ‘চোট্টি মুণ্ডা ও তার তীর’-এও সেই অবিনশ্বর স্পিরিট: ‘চোট্টি দাঁড়িয়ে থাকে। নিরস্ত্র। দাঁড়িয়ে থাকতে থাকতে সে চিরকালের সঙ্গে মিলেমিশে হয়ে যায় নদী, কিংবদন্তী। একমাত্র মানুষই যা হতে পারে।’ এই প্রান্তিক জীবনের কাহিনিকার হিসেবেই মহাশ্বেতা পরিচিত আন্তর্জাতিক দুনিয়ার বিদ্বৎসমাজে।

১৯৭২ অনুভা গুপ্ত (১৯৩০-১৯৭২) এদিন প্রয়াত হন। আসল নাম মৃদুলা। ‘সমর্পণ’ ছবিতে নায়িকার চরিত্রে অভিনয় করতে গিয়ে মৃদুলা তাঁর মায়ের ‘আভা’ নামটিকে ‘অনুভা’ করে নিয়েছিলেন প্রযোজকদের অনুরোধে। ১৯৪৩ থেকে ১৯৪৫ সাল পর্যন্ত মোহনবাগানের ক্যাপ্টেন ছিলেন অনিল দে। এহেন জনপ্রিয় ও কৃতী এক ক্যাপ্টেনের প্রেয়সী সুন্দরী অনুভাকে কলকাতা ময়দানের ফুটবলপ্রেমীরা ভালমতোই চিনতেন। বলা যেতে পারে, পরবর্তী কালের শর্মিলা ঠাকুর-মনসুর আলি খান পতৌদি, ভিভ রিচার্ডস-নীনা গুপ্ত বা আজকের অনুষ্কা শর্মা ও বিরাট কোহালির পূর্বসূরি হলেন চল্লিশের দশকের কলকাতা ময়দানের অনিল-অনুভার জনপ্রিয় জুটি। সেই কারণেই অনুভা গুপ্ত বাংলা চলচ্চিত্রের পরিচালক ও প্রযোজকদের চোখে পড়েছিলেন ওই মোহনবাগান ক্লাবের গ্যালারি থেকে, ১৯৪৬ সালেই। তার পর তাঁকে নিয়ে বাংলা চলচ্চিত্র এতটাই মেতে উঠেছিল যে, দেখা যাচ্ছে পরবর্তী ছ’বছরে তিনি চব্বিশটি ছবিতে অভিনয় করছেন। অর্থাৎ প্রতি বছর তাঁর চারটি করে ছবি মুক্তি পেয়েছিল। ষোলো বছর বয়সে অভিনয় জীবন শুরু করে মাত্র বিয়াল্লিশ বছর বয়সে তাঁর ছাব্বিশ বছরের অভিনয় জীবন হঠাৎই থেমে যায়।

১৮৯৮ লুইস ক্যারল (১৮৩২-১৮৯৮) এদিন প্রয়াত হন। ছোটদের স্বপ্নবিলাসী করে তুলতে, তাদের নিয়ে কল্পনার রাজ্যে ভ্রমণ করতে তার জুড়ি মেলা ভার। তার গল্পে থাকত না নীতিবাক্যের ঘেরাটোপ, নেই ছোটদের ভয় পাওয়ানো শাস্তির জুজু। গল্প জুড়ে শিশুদেরকে নানা ফ্যান্টাসির জগতে ভ্রমণ করিয়ে আনার এক অসাধারণ প্রতিভা ছিল লুইসের। তিনি ছিলেন একাধারে গণিতজ্ঞ, কবি, আবিষ্কারক, প্রাবন্ধিক, যাজক এবং শখের আলোকচিত্র শিল্পী। তাঁকে সেই সময়ের অন্যতম শ্রেষ্ঠ আলোকচিত্রগ্রাহক বলেও মনে করা হয়। অবসর সময়ে তিনি ব্যাডমিন্টন, দাবা, বিলিয়ার্ড, তাস ইত্যাদি খেলতে খুব ভালবাসতেন।

১৯৩৮ বেলুড় মঠে শ্রী রামকৃষ্ণদেবের সুবৃহৎ মন্দিরটি স্বামী বিবেকানন্দর পরিকল্পনা অনুযায়ী ভারতীয় ও পাশ্চাত্য শিল্পকলার সমন্বয়ে নির্মিত হয়েছিল। এদিন চতুর্থ সংঘ গুরু স্বামী বিজ্ঞানানন্দ মন্দিরটি উৎসর্গ করেন।

১৯২৯ শ্যামল মিত্র (১৯২৯-১৯৮৭) এদিন জন্মগ্রহণ করেন। বিগত শতাব্দীর পঞ্চাশ ও ষাটের দশকের সবচেয়ে জনপ্রিয় গায়কদের অন্যতম। তাঁর অনেক গান আজও বাঙালি শ্রোতাদের কাছে আদৃত। তাঁর সুর করা জনপ্রিয় চলচ্চিত্রগুলির মধ্যে আছে ‘দেয়ানেয়া’, ‘আনন্দ আশ্রম’, ‘অমানুষ’-এর মতো ছবিও। তাঁর রেকর্ডের সংখ্যা প্রায় সাড়ে চার হাজার। প্রথম প্লে ব্যাক গায়ক হিসেবে ১৯৪৮ সালে ‘সুনন্দার বিয়ে’তে সাড়া ফেলেন।