Saturday, August 23, 2025

জ্ঞানবাপীর সমীক্ষা রিপোর্ট নিয়ে সন্দীহান মসজিদ কমিটি!

Date:

Share post:

জ্ঞানবাপী মামলা নিয়ে এএসআই-এর রিপোর্ট প্রকাশ্যে এসেছে। গত বৃহস্পতিবার রাতে ভারতের পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণ বিভাগের মসজিদ নিয়ে করা বৈজ্ঞানিক সার্ভে রিপোর্ট প্রকাশ্যে নিয়ে আসে হিন্দু পক্ষ। ৮৩৯ পেজের এই রিপোর্ট মামলাকারী দুই পক্ষের হাতেই তুলে দেওয়া হয়েছে।হিন্দু পক্ষের আইনজীবী বলেন, এএসআই রিপোর্টে জ্ঞানবাপী মসজিদের নীচে মন্দির থাকার ৩২ রকমের প্রমাণ পাওয়া গিয়েছে। মহামুক্তি মণ্ডপ, হিন্দু দেব-দেবীর মূর্তি, স্বস্তিক চিহ্ন, নাগ দেবতার চিহ্ন, শঙ্খের মতো একাধিক তথ্য প্রমাণ পাওয়া গিয়েছে। এ ছাড়াও শিলালেখ এবং ফারসি ভাষায় নানা হরফ পাওয়া গিয়েছে। যেখানে ঔরঙ্গজেব মন্দির ভেঙে এই মসজিদ নির্মাণের আদেশ দিয়েছিলেন, তা স্পষ্ট হয়েছে, বলে দাবি করা হয়েছে।

হিন্দুরা মনে করেন, কেন্দ্রের কাশী বিশ্বনাথ মন্দিরের পাশে অবস্থিত জ্ঞানবাপীকে মসজিদ বলা যায় না। হিন্দু ধর্মগ্রন্থে জ্ঞানবাপী তৈরি হওয়ার সাফ উল্লেখ করেছে বলে দাবি।এএসআই রিপোর্টেও মন্দিরের অস্তিত্বের প্রমাণ পাওয়া গিয়েছে বলে এবার সরব হিন্দু পক্ষ। তাদের দাবি জ্ঞানবাপী একটি কুয়ো ছিল। যার অর্থ জ্ঞানের কুয়ো। এটি কাশী বিশ্বনাথ মন্দির এবং জ্ঞানবাপীর মধ্যবর্তী অংশ অবস্থিত ছিল। ১০ ফিট গভীর এই কুয়োটি নিজের ত্রিশূলের মাধ্যমে খুঁড়েছিলেন ভগবান শিব। এমনটাই উল্লেখ রয়েছে হিন্দু পূরাণে। কাশী বিশ্বনাথ মন্দিরের শিবলিঙ্গের প্রাণ প্রতিষ্ঠার জন্য এই কুয়োর জল ব্যবহার করা হয় বলেও দাবি হিন্দুদের।

জ্ঞানবাপীর জল দিয়েই কাশী বিশ্বনাথ মন্দিরের শিবলিঙ্গের জলাভিষেক এবং প্রাণ প্রতিষ্ঠা হয়। এই পরম্পরা যুগ যুগ ধরে চলে আসছে বলে দাবি হিন্দু পক্ষের। পরবর্তীতে ১৬৬৯ সালে ঔরঙ্গজেব সেই কুয়ো ভেঙে সেখানে মসজিদ তৈরি করেন। এই মসজিদের পিছনের অংশ এখনও সম্পূর্ণ মন্দিরের মতোই দেখতে বলে দাবি তাদের।সমীক্ষা রিপোর্টে আরও উল্লেখ রয়েছে যে এখান থেকে পুরনো মুদ্রা এবং নুড়িপাথর পাওয়া গিয়েছে। যেখানে পার্সি ভাষার উল্লেখ রয়েছে।এই সব বিষয়গুলিই প্রমাণ করে যে ১৭ শতাব্দীতে মোঘল সম্রাট ঔরঙ্গজেবের আমলেই মন্দির ভেঙে মসজিদ করা হয়েছিল।

এদিকে, মুসলিম পক্ষ এএসআই-এর এই রিপোর্ট নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছে। তাদের দাবি, যে মূর্তি এবং হিন্দু মন্দিরের চিহ্নগুলোর কথা রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে তা নতুন নয়। মসজিদের পিছনের অংশে তাদের একাধিক ভাড়াটে ছিলেন। তারা এই মূর্তিগুলো নির্মাণ করতেন। অবশিষ্টাংশ ফেলে দিতেন। সেগুলিকেই পুরনো মূর্তি ভেবে ভুল করা হচ্ছে।

অঞ্জুমান আঞ্জামিয়া (জ্ঞানবাপী) মসজিদ কমিটির তরফে আখলাখ আহমেদ দাবি করেন, এর আগে অ্যাডভোকেট কমিশনের যা পর্যবেক্ষণ ছিল, এএসআই তার চেয়ে নতুন কিছুই পায়নি। শুধু নতুন করে সমস্ত মাপঝোপের বিস্তারিত তথ্য দিয়েছে মাত্র। মসজিদ কমিটির সম্পাদক মহম্মদ ইয়াসিনের দাবি, এটা একটা রিপোর্ট মাত্র। কোনও চূড়ান্ত রায় নয়। নানা ধরনেরই রিপোর্টই আছে। তাই এএসআই সমীক্ষার রিপোর্টই যে চূড়ান্ত, তা নয়।

spot_img

Related articles

আমেরিকায় চিঠি–পার্সেল পাঠানোয় বিধিনিষেধ, সিদ্ধান্ত কেন্দ্রীয় ডাক বিভাগের 

ভারত–মার্কিন শুল্কযুদ্ধের জেরে এবার বড়সড় প্রভাব পড়ল ডাক পরিষেবায়। আমেরিকায় চিঠি ও পার্সেল পাঠানোর প্রক্রিয়ায় বিধিনিষেধ জারি করল...

ডেঙ্গি সংক্রমণ রুখতে তৎপর রাজ্য! জেলাগুলিকে একগুচ্ছ কড়া নির্দেশ মুখ্যসচিবের 

রাজ্যে ডেঙ্গি সংক্রমণ ক্রমশ বাড়তে থাকায় শনিবার নবান্নে জেলাশাসক ও স্বাস্থ্য দফতরের আধিকারিকদের নিয়ে জরুরি বৈঠকে বসেন মুখ্যসচিব...

দায় বেসরকারিকরণ নীতির! মোদিরাজে পাঁচ বছরে চাকরি হারিয়েছেন লক্ষাধিক কর্মী

মোদি সরকারের আমলে বিগত পাঁচ বছরে চাকরি হারিয়েছেন লক্ষাধিক সরকারি কর্মী। সম্প্রতি লোকসভায় এমনই চাঞ্চল্যকর তথ্য দিল কেন্দ্র।...

পুজোর আগে প্রায় দ্বিগুণ দুধ উৎপাদনে বাংলার ডেয়ারি 

কলকাতা এবং সংলগ্ন জেলাগুলিতে প্যাকেটজাত দুধের জোগান বাড়াতে রাজ্য সরকারি ব্র্যান্ড বাংলার ডেয়ারি বড় পদক্ষেপ নিতে চলেছে। পুজোর...