Sunday, August 24, 2025

অভাবের তাড়নায় স্কুল ছেড়ে পথে! ট্যাক্সিচালক জালালউদ্দিনের কাহিনী সিনেমাকে হার মানাবে

Date:

Share post:

ক্লাস টুতে পড়ার সময় অভাবের তাড়নায় লেখাপড়া ছেড়েছিলেন। মনে লেখাপড়ার অদম্য ইচ্ছে থাকলেও বাস্তবে তা করতে বেশ ভালো অর্থের প্রয়োজন। কিন্ত পরিবারে চরম অর্থাভাবের কারণে তা আর সম্ভব হয়ে ওঠেনি। তবে মনের কোনও এক দুরূহ কোনে কোথাও যেন এক নাছোড় মনোভাব ছিল। আর সেকারণে নিজের লেখাপড়া করতে না করার যন্ত্রণা ভুলতে বড় পদক্ষেপ নিলেন এক ট্যাক্সি চালক (Taxi Driver)। নিজের এলাকাতে দুটি স্কুল খুলে রীতিমতো রাজ্যবাসীকে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন তিনি। হ্যাঁ, ভাবছেন তো একজন ট্যাক্সি চালকের পক্ষে এমন অসাধ্যসাধন কীভাবে সম্ভব? কিন্তু কথায় আছে “রাখে হরি, মারে কে”? আর এমন প্রচলিত কথাকেই বাস্তবায়িত করলেন জালালউদ্দিন গাজী (Jalaluddin Gazi)। তবে শুধু স্কুলই (School) নয়, হারিয়ে যাওয়া শিশুদের জীবনের মূল স্রোতে ফেরাতে একটি অনাথ আশ্রমও (Orphanage) নির্মাণ করেছেন তিনি।

তবে প্রথম জীবনে লেখাপড়া ছেড়ে সংসারের অভাব দূর করতে কলকাতার এন্টালি, মৌলালি-সহ বিভিন্ন অঞ্চলের ফুটপাতে ভিক্ষা করতেন জালালউদ্দিন। এরপর একটু একটু করে সঞ্চয় করে ভিক্ষা ছেড়ে দিয়ে একটি রিকশা কিনে চালাতে শুরু করেন তিনি। যদিও বর্তমানে একজন ট্যাক্সি চালক হিসাবে জীবিকা নির্বাহ করছেন তিনি। তবে লেখাপড়ার প্রতি জালালউদ্দিনের ছিল গভীর টান। আর সেকারণে নিজে না পারলেও তাঁর সঞ্চিত অর্থ দিয়েই নিজের একালায় দুটি স্কুল ও একটি অনাথ আশ্রম বানিয়েছেন তিনি। কিন্তু কীভাবে এমন অসাধ্যসাধন সম্ভব হল? জালালউদ্দিন জানান, তিনি প্রথমে ‌যে বাড়িতে থাকতেন সেই বাড়ির এক কামরায় তৈরি হয় তাঁর প্রথম স্কুল। এরপর এক কামরার গণ্ডি ছাড়িয়ে তৈরি হয় একটি বড় স্কুল। তারপর ধীরেধীরে আরও একটি স্কুল এবং একটি অনাথ আশ্রম তৈরি করেছেন তিনি। তাঁর এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছে সব মহল। বর্তমানে পেশায় ট্যাক্সি চালকের দুটি স্কুলে পড়ুয়াদের উপস্থিতির সংখ্যা বেশ উল্লেখযোগ্য।

 

তবে এখানেই শেষ নয় জালালউদ্দিনের গল্প। নিজের কৃতিত্বের জন্য এরপর তিনি কেবিসির মতো মঞ্চে ডাক পান তিনি। তাঁর এই পদক্ষেপে খুশি হয়ে তাঁকে আর্থিক সাহায্য করেছেন অভিনেতা অমিতাভ বচ্চন থেকে শুরু করে আমির খানের মতো বলিউডের প্রথম সারির অভিনেতা। ইতিমধ্যে সেই অর্থসাহায্য পেয়ে অভিভূত শহর কলকাতার এই ট্যাক্সি চালক। আর বর্তমানে সেই টাকা দিয়েই নরেন্দ্রপুর এলাকায় জমি কিনে একটি উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের স্কুল খোলার কাজে চূড়ান্ত ব্যস্ত জালালউদ্দিন। তাঁর এই মহান প্রচেষ্টাকে ‘সাধুবাদ’ জানায় এখন বিশ্ব বাংলা সংবাদ। আমরা আগামীদিনে তাঁর সাফল্য ও সুস্বাস্থ্য কামনা করি।

 

 

 

 

spot_img

Related articles

পরিযায়ী শ্রমিকদের জন্য ‘শ্রমশ্রী’ প্রকল্পে নাম নথিভুক্তি শুরু

পরিযায়ী শ্রমিকদের সুবিধার্থে এবার আরও এক পদক্ষেপ রাজ্য সরকারের। ‘আমাদের পাড়া আমাদের সমাধান’ কর্মসূচির আওতায় দুয়ারে সরকার শিবিরেও...

‘নিখুঁত ভুলগুলি’, উৎপল সিনহার কলম

একটা দুঃখের কথা পথে ও বিপথে ঘুরে প্রত্যাখ্যাত হতে হতে গান হয়ে ওঠে ...একটি দুঃখের কথা পথে ও বিপথে ঘুরে প্রত্যাখ্যাত হতে হতে গান...

ষোলতেই ১৩০ কেজি! ছেলের খাবার জোগাতেই নাজেহাল বাবা-মা

মুর্শিদাবাদ জেলার সাগরদিঘি থানার কাবিলপুর পঞ্চায়েতের মথুরাপুর গ্রাম। এখানেই থাকেন দিনমজুর মুনশাদ আলি। তাঁর ছোট ছেলে জিশান আলি...

কবে থেকে শুরু জয়েন্টের কাউন্সেলিং? দিনক্ষণ জানিয়ে দিল বোর্ড

ফলপ্রকাশের পর এবার ১৫ দিনের মধ্যেই কাউন্সেলিং প্রক্রিয়া তথা ভর্তি প্রক্রিয়া শেষ করবে জয়েন্ট এন্ট্রান্স বোর্ড। এবার কাউন্সেলিং...