Monday, May 5, 2025

আজ কী ঘটেছিল?

Date:

Share post:

জোসেফ স্টালিন(১৮৭৮-১৯৫৩) এদিন শেষনিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। তিনি ৩০ বছর ধরে যে দেশের শাসনকর্তা ছিলেন, সেই সোভিয়েত ইউনিয়নও বিলুপ্ত হয়েছে আজ থেকে প্রায় ৩১ বছর আগে। পুঁজিবাদ–সমাজতন্ত্রের দ্বন্দ্বময় ‘ঠান্ডা যুদ্ধ’ থেকে মুক্ত পৃথিবী নতুন সহস্রাব্দে প্রবেশ করার পরেও প্রায় ২ দশক হতে চলল। কিন্তু স্তালিন বিস্মৃত বা অপ্রাসঙ্গিক হলেন না। তাঁকে নিয়ে আলোচনা ও তর্ক–বিতর্ক চলছে। এক পক্ষের কাছে স্তালিন ভয়ংকর এক দানবের নাম, তিনি কয়েক কোটি মানুষকে হত্যা করেছেন। অন্য পক্ষের কাছে স্তালিন এক মহান রাষ্ট্রনায়কের নাম, তিনি পৃথিবীর প্রথম সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্র সোভিয়েত ইউনিয়নকে খুব শক্তিশালী ভিত্তির ওপর দাঁড় করিয়েছিলেন, পুঁজিতান্ত্রিক শিবিরের বিপরীতে সমাজতান্ত্রিক শিবির গড়ে তুলেছিলেন এবং সর্বোপরি সোভিয়েত ইউনিয়নকে পৃথিবীর দুই পরাশক্তির একটিতে পরিণত করেছিলেন। তাঁর প্রশংসাকারীদের আরও একটা বক্তব্য হল, তিনি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে ফ্যাসিবাদের পরাজয়ে প্রধান ভূমিকা পালন করেছিলেন।

২০১৩ সালে উগো চাভেস (১৯৫৪-২০১৩) এদিন শেষনিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। ১৭ বছর বয়সে ভেনেজুয়েলার সামরিক অ্যাকাডেমিতে নাম লেখান উগো। এবং দ্রুত উঠতে থাকেন। সেনাবাহিনীর গেরিলা-দমন ইউনিটের সদস্য হয়ে দায়িত্ব পান মাওবাদী গোষ্ঠী ‘রেড ফ্ল্যাগ’কে ধ্বংস করার। গেরিলাদের প্রতি রাষ্ট্রের নির্মম আচরণ ক্রমে তাঁকে ক্ষুব্ধ, বিদ্রোহী করে তোলে। তখন তিনি জুনিয়র কমিশন্ড অফিসার। সহমর্মী অফিসারদের নিয়ে উগো গড়ে তুললেন গোপন সংগঠন, বামপন্থী গেরিলা নেতা ডগলাস ব্রাভোর প্রেরণায়। নিজে যোদ্ধা হলেও এবং একবার সামরিক অভ্যুত্থানের ব্যর্থ চেষ্টা সত্ত্বেও চাভেস সরাসরি বন্দুকের সঙিন উঁচিয়ে ভেনেজুয়েলার ক্ষমতা দখল করেননি। ১৯৯৮ সালে নির্বাচনে জিতেই তিনি প্রেসিডেন্ট হন। তাঁর ১৪ বছরের শাসনকালে প্রতিটি নির্বাচনেই তাঁর সাফল্য বিপুল। মৃত্যুর আগের কয়েকটা বছর কালান্তক ক্যান্সার রোগের সঙ্গে চাভেসের লড়াইটা আগাগোড়া কাস্ত্রোর কিউবাতেই হয়। ক’দিন আগেই ফিরেছিলেন কিউবা থেকে। আবার জনতার সামনে এসে দাঁড়াবেন, ভাবছিলেন তাঁর অনুরাগীরা। কিন্তু ইতিহাস তাঁর জন্য অন্য ছক তৈরি করেছিল। চাভেসের মৃত্যুকে ঠিক গার্সিয়া মার্কেস-রচিত কুলপতির হেমন্তের সঙ্গে তুলনা করা যাবে না। কারণ রাজনৈতিক স্বৈরাচারের অনন্তমেয়াদি হওয়ার যে রূপক তাঁর উপন্যাসে আখ্যায়িত, ভেনেজুয়েলায় তার বাস্তবায়ন হয়নি।

শচীন্দ্রনাথ সেনগুপ্ত (১৮৯২-১৯৬১) এদিন শেষনিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। তিনি তাঁর নাটকে ব্যক্তি ও পারিবারিক জীবনের বিচিত্র জটিলতা ও সমস্যা তুলে ধরেছন। স্বাধীনতার পূর্বে তিনি ঐতিহাসিক ও সামাজিক নাটক রচনা করেন। স্বাধীনতার পর বাংলাদেশের নবনাট্য আন্দোলনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে যুক্ত হয়ে পড়েন এবং নানা আলোচনা উপদেশ, গঠনমূলক কাজ ও নাট্যকার ও নাট্য প্রযোজকদের মধ্যে সংঘশক্তি উদ্বোধনের মধ্যে দিয়ে নাট্য আন্দোলনকে পরিপুষ্ট করে তোলেন। তাঁর ঐতিহাসিক ও রাজনৈতিক নাটক ‘গৈরিক পতাকা’, ‘দেশের দাবি’, ‘রাষ্ট্রবিপ্লব’, ‘সিরাজদ্দৌলা’, ‘ধাত্রী পান্না’, ‘সবার উপরে মানুষ সত্য’ এবং ‘আর্তনাদ ও জয়নাদ’। তাঁর ঐতিহাসিক নাটক সিরাজদ্দৌলা সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয়তা অর্জন করে। তাঁর লেখা সামাজিক নাটক ‘রক্তকমল’ , ‘ঝড়ের রাতে’ , ‘নার্সিংহোম’, ‘স্বামী-স্ত্রী’, ‘তটিনীর বিচার’, ‘জননী’ ইত্যাদি। তিনি তাঁর নাটকে ব্যক্তি ও পারিবারিক জীবনের বিচিত্র জটিলতা ও সমস্যা তুলে ধরেছেন।

দিব্যেন্দু পালিত (১৯৩৯-২০১৩) এদিন বিহারের ভাগলপুরে জন্মগ্রহণ করেন। শিয়ালদহ স্টেশনে রাতের পর রাত না খেয়ে কাটিয়েছেন। কিন্তু, লেখালেখি ছাড়েননি। নাগরিক মানুষের মনের জটিলতা, অসহায়ত্ব, নিরুপায়তাকে ধারণ করেই দিব্যেন্দু পালিত তাঁর গল্প-উপন্যাস লিখে গিয়েছেন। সেই সব নাগরিক কথন ধরা রয়েছে তাঁর ‘ঘরবাড়ি’, ‘সোনালী জীবন’, ‘ঢেউ’, ‘সহযোদ্ধা’, ‘আমরা’, ‘অনুভব’-এ। পাশাপাশি তাঁর একাধিক ছোটগল্প বাংলা সাহিত্যকে সমৃদ্ধ করেছে। যেমন— ‘জেটল্যাগ’, ‘গাভাসকার’, ‘হিন্দু’, ‘জাতীয় পতাকা’, ‘ত্রাতা’, ‘ব্রাজিল’ ইত্যাদিতে। আনন্দ পুরস্কার, রামকুমার ভুয়ালকা পুরস্কার, বঙ্কিম পুরস্কার, সাহিত্য অকাদেমি পুরস্কার-সহ একাধিক সম্মান ও পুরস্কার পেয়েছেন।

কলকাতার বেথুন কলেজের ছাত্রী হিসেবে কাদম্বিনী বসু ও চন্দ্রমুখী বসু এদিন কৃতিত্বের সঙ্গে বিএ ডিগ্রি লাভ করেন। তাঁরাই ছিলেন ভারতে এবং সমগ্র ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের প্রথম মহিলা গ্র্যাজুয়েট (বিএ), কেননা, তখনও ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের কোনও বিশ্ববিদ্যালয়ে মহিলাদের স্নাতকস্তরের পরীক্ষায় বসার অধিকার ছিল না। ব্রিটিশ মহিলারা বিলেতের বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতকস্তরে পড়ার অনুমতি পান কাদম্বিনীদের এক বছর পর। এই অনুমতি দিয়ে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় নারীশিক্ষার ক্ষেত্রে এক বিরাট প্রগতিশীল দৃষ্টান্ত স্থাপন করে, কাদম্বিনী ও চন্দ্রমুখী নারীশিক্ষার জগতে এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা করেন। এরপর কাদম্বরী চলে যান ডাক্তারি পড়তে আর চন্দ্রমুখী কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতকোত্তর স্তরে পড়াশোনা করেন।

 


spot_img
spot_img

Related articles

সব জায়গায় সব মন্দির আছে, বিজেপি-র এত রাগ কেন: জগন্নাথধাম নিয়ে মোক্ষম জবাব মমতার

পুরীর মন্দিরকে সম্মান করি। সব জায়গায় সব মন্দির আছে। দিঘায় জগন্নাথমন্দির নিয়ে বিজেপির কটাক্ষের মোক্ষম জবাব দিলেন মুখ্যমন্ত্রী...

রিষড়ার সাউভাই দ্রুত ফিরে আসুন: বিএসএফ জওয়ানের জন্য অপেক্ষা মুখ্যমন্ত্রীর

১২ দিন অতিক্রান্ত হলেও বাংলার বিএসএফ জওয়ান পূর্ণমকুমার সাউকে দেশে ফিরিয়ে আনতে ব্যর্থ নরেন্দ্র মোদি সরকার। এমনকি রবিবার...

মোহনবাগানের পথে রবসন রবিনহো!

ইস্টবেঙ্গলে(Eastbengal) যাওয়ার কথা শোনা গেলেও দল বদলের বাজেরা হঠাত্ই যেন পট পরিবর্তন। রবসন রবিনহো(Robson Robinho) ইস্টবেঙ্গলে নয়, যেতে...

আমি লালকেল্লার উত্তরাধিকারী! বেগমের আবেদন নাকচ সুপ্রিম কোর্টের

লালকেল্লার মাথায় ত্রিবর্ণ পতাকা। এটাই স্বাধীন ভারতের প্রতীক গোটা বিশ্বের কাছে। এবার সেই লালকেল্লার অধিকার দাবি করেই সুপ্রিম...