মঙ্গলবার এই পথেই গজেন্দ্র গমনে রোড শো করেছিলেন নরেন্দ্র মোদি। বারো ঘণ্টাও নয়। শ্যামবাজার থেকে সিমলা স্ট্রিটে মমতার পদযাত্রা যেন এক অন্য মাত্রা নিল বুধবার দুপুরে। কেউ এক ঝলক মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে দেখার জন্য গ্রিলের ফাঁক দিয়েও মাথা গলানোর চেষ্টা যেমন করেছেন, তেমনই অনেকে তারস্বরে চিৎকার করেছেন একবার মমতার দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য। স্থানীয় মানুষের এই উৎসাহের উল্লেখ করে মোদির রোড-শোয়ের ‘বহিরাগত’ ভিড়কেও কটাক্ষ করেন মমতা।

শ্যামবাজার থেকে পদযাত্রা শুরুর আগে নেতাজীর মূর্তিতে মাল্যদান করেন তৃণমূল নেত্রী। সেখানে তিনি কেন্দ্র সরকার ও নরেন্দ্র মোদির বিরুদ্ধে সরব হন।


কলকাতা উত্তর কেন্দ্রের প্রার্থী সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের সমর্থনে শ্যামবাজার পাঁচ মাথার মোড় থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে প্রার্থী সহ হাঁটেন মন্ত্রী শশী পাঁজা, মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম, মন্ত্রী ইন্দ্রনীল সেন, রাজ্যসভার সাংসদ শান্তনু সেন, প্রাক্তন রাজ্যসভার সাংসদ কুণাল ঘোষ, কলকাতা পুরসভার ডেপুটি মেয়র অতীন ঘোষ ও উত্তর কলকাতার অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।

প্রায় দুই কিলোমিটার রাস্তা শহরের মানুষের বাঁধভাঙা উচ্ছ্বাস চোখে পড়ে। পথের দুধারে যেমন মানুষের ভিড় উপচে পড়ে, তেমনই বাড়ির ছাদও জানালা থেকেও উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন মানুষ। একজন মহিলা উৎসাহী হয়ে নিরাপত্তার দড়ি পেরিয়ে আসার চেষ্টা করলে মমতা নিজে এগিয়ে তাঁর সামনে চলে যান। সিমলা স্ট্রিটে স্বামী বিবেকানন্দের বাড়ি পৌঁছানো পর্যন্ত একইভাবে উৎসাহী জনতাকে দেখা যায়। স্বামী বিবেকানন্দের বাসভবনে রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনের মহারাজদের সঙ্গে আলাপচারিতাও করতে দেখা যায় মমতাকে। নিজে স্বামীজীর মূর্তিকে শ্রদ্ধা জানানোর পাশাপাশি স্বামীজীদের ফুল এগিয়ে দেন শ্রদ্ধা জানানোর জন্য। সেই সঙ্গে স্থানীয় সমস্যা নিয়ে স্বামীজীদের সঙ্গে কথা বলার পরে মেয়র ফিরহাদ হাকিমকে ডেকে তাঁদের সঙ্গে আলোচনা করতেও দেখা যায় তাঁকে।


তবে গোটা রাস্তায় যেভাবে উত্তর কলকাতার সাধারণ মানুষ ভিড় করেছিলেন তাঁদের উৎসাহকে শ্রদ্ধা জানান মমতা। সেই সঙ্গে উল্লেখ করেন, মঙ্গলবার মোদির রোড শো-এর সঙ্গে এই ভিড়ের পার্থক্য। তিনি বলেন মোদির রোড-শো তে লোক ভরাতে হাওড়া, হুগলি, এমনকি ঝাড়খণ্ড থেকেও লোক আনতে হয়েছিল। অথচ বুধবার শ্যামবাজার এলাকার মানুষের ভিড়েই পথের দুধার ভরে যায়।
