হাতে মাত্র আর কিছু সময়। তারপরেই শেষ হবে চলতি বছরের লোকসভা নির্বাচন (Loksabha Election)। ইতিমধ্যে শেষ দফার ভোটের প্রস্তুতি তুঙ্গে। দেশের পাশাপাশি রাজ্যের ৯ কেন্দ্রে ভোটগ্রহণকে (Voting) কেন্দ্র করে ইতিমধ্যে জোরদার করা হয়েছে নিরাপত্তা ব্যবস্থা। কিন্তু ভোট শেষের আগে চলতি বছর কত টাকা বাজেয়াপ্ত (Property Seized) করল মোদি সরকার (Modi Govt), তার এক হিসাব প্রকাশ্যে আনল নির্বাচন কমিশন। কমিশনের তরফে সাফ জানানো হয়েছে ভোট চলাকালীন দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে রেকর্ড সংখ্যক টাকা বাজেয়াপ্ত করেছে আয়কর বিভাগ (Income Tax)। যার সংখ্যা ইতিমধ্যে ১০ হাজার কোটির গণ্ডি অতিক্রম করেছে। যা এখনও পর্যন্ত যে কোনও নির্বাচনে রেকর্ড বলেই মত নির্বাচন কমিশনের। তবে কমিশন সূত্রে খবর, ভোট পর্ব মিটে গেলে চূড়ান্ত সম্পত্তি বাজেয়াপ্তর পরিমান ১২ হাজার কোটি টাকার গণ্ডি ছাড়িয়ে যেতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। কিন্তু কমিশন সূত্রে খবর, চলতি বছর সবচেয়ে বেশি অবৈধ সম্পত্তি উদ্ধার হয়েছে মোদিরাজ্য গুজরাট (Gujrat) থেকেই।

আয়কর দফতর সূত্রে খবর, চলতি লোকসভা নির্বাচনে ১০ হাজার কোটি টাকার নগদ ও গয়না বাজেয়াপ্ত করেছে তারা। যা ২০১৯ লোকসভা নির্বাচনের সময় বাজেয়াপ্ত করা ৩৯০ কোটির তুলনায় ১৮২ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। কমিশন আরও জানিয়েছে, আদর্শ আচরণবিধি ১৬ মার্চ কার্যকর হয়েছিল। তারপর থেকেই আয়কর বিভাগ বেহিসাবি নগদ ও সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করতে উঠেপড়ে লাগে। যার ফলস্বরূপ দেশের পাশাপাশি মূলত বিরোধী শাসিত রাজ্যগুলিতে ম্যারাথন তল্লাশি অভিযান চালায় মোদি সরকারের অধীনস্থ আয়কর বিভাগ-সহ কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার আধিকারিকরা। ভোটের মুখে মোদির এমন গাজোয়ারির চরম বিরোধিতা করে তৃণমূল কংগ্রেস-সহ বিরোধীরা। তবে কমিশনের তরফে এমন রিপোর্ট সামনে আসতেই মোদি সরকারকে একহাত নিয়েছেন বিরোধীরা। তাঁদের অভিযোগ চলতি ভোটে নিজের হার নিশ্চিত বুঝতে পেরে নিজের গায়ের জোরে বিরোধী নেতাদের হেনস্থা করা হয়েছে। কারণে, অকারণে তাঁদের বাড়িতে ঢুকে তল্লাশির নামে হেনস্থা করা হয়েছে বলে অভিযোগ।


অন্যদিকে, লোকসভা নির্বাচনের জন্য নির্বাচন কমিশনের তরফে প্রকাশিত তথ্যে চোখ রাখলে দেখা যায়, ১ মার্চ থেকে ১৮ মে পর্যন্ত নগদ, মাদক, মদ, মূল্যবান ধাতু-সহ মোট ৮,৮৮৯ কোটি টাকা বাজেয়াপ্ত হয়েছে৷ এর মধ্যে প্রায় ৪৫ শতাংশই নেশার সামগ্রী থেকে এসেছে বলে খবর। এদিকে ২০১৯ সালে মোট ৩,৪৭৬ কোটি টাকার নগদ ও সামগ্রী বাজেয়াপ্ত করা হয়েছিল বলে কমিশন সূত্রে খবর। তবে এবার সব রেকর্ড ছাপিয়ে গিয়েছে। নগদ টাকা বাজেয়াপ্ত হয়েছে ০.৬১ শতাংশ, মদ আটক করে ১৬৭.৫১ শতাংশ, মাদকদ্রব্য বাজেয়াপ্ত করে ২০৯.৩১ শতাংশ, মূল্যবান ধাতু বাজেয়াপ্ত করে ২৭.৬৮ শতাংশ এবং বিনামূল্যে সামগ্রী বন্টন করে ৩,২৩৫.৯৩ শতাংশ আয় বৃদ্ধি পেয়েছে।

নগদ অর্থ বাজেয়াপ্তের ক্ষেত্রে দেশের শীর্ষ পাঁচ রাজ্য, তেলেঙ্গানা (১১৪.৪১ কোটি টাকা), কর্ণাটক(৯২.৫৫ কোটি টাকা), দিল্লি(৯০.৭৯ কোটি টাকা ), অন্ধ্র(৮৫.৩২ কোটি টাকা), মহারাষ্ট্র (৭৫.৪৯ কোটি টাকা)। তবে সমস্ত রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলির মধ্যে গুজরাটে সবচেয়ে বেশি অবৈধ সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত হয়েছে, যেখানে মোট বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে ১,৪৬১.৭৩ কোটি টাকা।

