Monday, August 25, 2025

শাসক-বিরোধী দ্বন্দ্বের মাঝে আজ ফের পশ্চিমবঙ্গ দিবস পালনে উদ্যোগী রাজভবন! ইন্ধন বিজেপির

Date:

Share post:

একটি রাজ্যের দুটি জন্মদিন! যা নিয়ে তুঙ্গে বিতর্ক। শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস ও রাজ্য সরকার আইন প্রণয়ণ করে পয়লা বৈশাখ অর্থাৎ বাংলা নববর্ষের প্রথম দিনটিকে রাজ্যের জন্মদিন বা পশ্চিমবঙ্গ দিবস হিসেবে পালন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। অন্যদিকে, রাজ্য বিজেপির তরফে স্থির হয়েছিল ২০ জুন তারিখটিকে পশ্চিমবঙ্গ দিবস হিসাবে পালন করা হবে। কারণ, ১৯৪৭ সালের ২০ জুন বঙ্গীয় প্রাদেশিক আইনসভার ভোটাভুটিতে বাংলা ভাগের বিষয়টি স্থির হয়েছিল। বাংলা দু’ভাগে ভাগ হয়ে পূর্ব পাকিস্তান এবং পশ্চিমবঙ্গ তৈরি হয়। পশ্চিমবঙ্গ ভারতে অন্তর্ভুক্ত হয়। বাংলাদেশ আলাদা হয়ে পাকিস্তানের অন্তর্ভুক্ত হয়। কিন্তু রাজ্যের শাসকদল তো বটেই, বিশিষ্টজনদের একাংশেরও বক্তব্য, দেশভাগের সঙ্গে বেদনার স্মৃতি জড়িয়ে রয়েছে। তাই ওই দিনটি পশ্চিমবঙ্গ দিবস হিসাবে স্বীকৃতি পেতে পারে না।

ফলে পয়লা বৈশাখ নাকি বিশে জুন, পশ্চিমবঙ্গ দিবস হিসাবে কোন দিনটিকে বেছে নেওয়া হবে, তা নিয়ে এখনও তুঙ্গে বিতর্ক রাজ্য রাজনীতিতে। কিন্তু আপনার বা আমার পছন্দ হোক বা না হোক, বিধানসভায় যখন আইন করে পয়লা বৈশাখ দিনটিকে পালন করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, তখন অন্য আর কোনওদিনকে পশ্চিমবঙ্গের জন্মদিন স্বীকৃতি দেওয়া যায় না।

গতবছর, ২০ জুন রাজ্যে পশ্চিমবঙ্গ দিবস পালন করেছিলেন রাজ্যপাল আনন্দ বোস। এবারও কার্যত ইগোর বশে রাজভবনে পশ্চিমবঙ্গ দিবস পালন করবেন রাজ্যপাল। বিজেপির সেখানে সম্পূর্ণ ইন্ধন রয়েছে। গতবছর এই দিনটিকে ‘পশ্চিমবঙ্গ দিবস’ মানতে নারাজ মুখ্যমন্ত্রী। প্রথমে ফোনে অনুরোধ জানিয়ে এবং পরে চিঠি লিখে রাজ্যপালকে এই আয়োজন থেকে বিরত থাকার অনুরোধ জানিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু নিজের অবস্থানে অনড় থেকে রাজভবনে ওই দিনই ‘পশ্চিমবঙ্গ দিবস’ পালন করেন রাজ্যপাল। এর পাল্টা জবাব দিতে ‘পশ্চিমবঙ্গ দিবস’ কবে, তা ঠিক করতে একটি কমিটি গঠন করেন মুখ্যমন্ত্রী। প্রাক্তন তৃণমূল সাংসদ তথা ইতিহাসবিদ সুগত বসুকে উপদেষ্টা করে ‘পশ্চিমবঙ্গ দিবস নির্ধারণ কমিটি’ তৈরি হয়। আহ্বায়ক করা হয় বিধানসভার ডেপুটি স্পিকার আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়কে। সেই কমিটির বৈঠকে পয়লা বৈশাখকে পশ্চিমবঙ্গ দিবস হিসাবে পালন করার সুপারিশ করা হয়েছিল। এর পরেই মুখ্যমন্ত্রী সিদ্ধান্ত নেন, বাংলার বিভিন্ন মহলের বিশিষ্টজনদের ডেকে এ ব্যাপারে মতামত জানতে চাওয়া হবে। সেই মতো গতবছর ২৯ অগস্ট নবান্নে সভাঘরে ডাকা হয়েছিল সর্বদল বৈঠক। যদিও এই বৈঠকে বিরোধী বিজেপি, কংগ্রেস এবং সিপিএমের কোনও প্রতিনিধি যোগ দেননি।

অন্যদিকে, বিজেপি বা তৃণমূল কারোর তত্ত্বকেই সমর্থন করেনি রাজ্যে শূন্য হয়ে যাওয়া সিপিএম। তারা আবার মানচিত্রের তত্ত্বকে সামনে আনছে। বামেদের দাবি, পশ্চিমবঙ্গের মানচিত্র ১ নভেম্বর ১৯৫৬ সালে তৈরি হয়েছিল। আর সেই মানচিত্রই এখন সর্বত্র চলছে। ফলে পশ্চিমবঙ্গ দিবস যদি পালন করতেই হয় তাহলে ১ নভেম্বর দিনটিকে মাণ্যতা দেওয়া উচিত।

আরও পড়ুন- বিষমদ খেয়ে তামিলনাড়ুতে লাফিয়ে বাড়ছে মৃতের সংখ্যা! কড়া পদক্ষেপের আশ্বাস স্ট্যালিনের

spot_img

Related articles

আদিবাসী উন্নয়ন আরও সুদূর প্রসারি করার বার্তা মুখ্যমন্ত্রীর, সৌজন্য উড়িয়ে বৈঠকে অনুপস্থিত বিজেপি

আদিবাসী উন্নয়ন নয়, রাজনীতিই যে তাদের লক্ষ্য তা আরও একবার প্রমাণ করল বিজেপি (BJP)। আমন্ত্রণ পেয়েও সৌজন্যের জবাব...

DHFC-র হারের পরই ক্লাব থেকে কর্তাদের ছোট করার চেষ্টা, জবাব দিলেন মানস

ডুরান্ড কাপের(Durand Cup) ফাইনালে পৌঁছে সকলকে চমকে দিয়েছিল ডায়মন্ডহারবার এফসি(DHFC)। বাংলার ফুটবলকে যে দল নতুন স্বপ্ন দেখাচ্ছে, তাদের...

আধারের অভাবে রেশন বঞ্চনা নয়, কড়া নির্দেশ খাদ্য দফতরের 

আধার কার্ড না–থাকা বা বায়োমেট্রিক যাচাই না–হওয়ার কারণে আর কোনও বৈধ রেশন গ্রাহককে খাদ্যসাথী প্রকল্পের সুবিধা থেকে বঞ্চিত...

হাওড়ায় বৃদ্ধ খুনের নেপথ্যে সমকামী সম্পর্ক-ব্ল্যাকমেইল! তদন্তে চাঞ্চল্যকর তথ্য

হাওড়ায় বৃদ্ধ খুনের নেপথ্যে চাঞ্চল্যকর তথ্য। হাওড়ার গোলাবাড়ি থানার সালকিয়ার অরবিন্দ রোডের বাসিন্দা অসীম দে (Asim de) খুন...