যখন দায়িত্বে তখন চুপ, আর জি কর নিয়ে শান্তনুর বিদ্রোহের কারণ কি

আর জি কর হাসপাতালেরই রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান পদে ছিলেন শান্তনু সেন। সেই হাসপাতালেরই প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষের বিরুদ্ধে সবথেকে বেশি ক্ষোভ

আর জি করের ঘটনার পরে একাধিক ইস্যু তুলে প্রতিবাদে সামিল হতে দেখা যায় প্রাক্তন তৃণমূল সাংসদ শান্তনু সেনকে। হঠাৎ করেই তিনি দাবি করেন আর জি করের প্রশাসনিক পদে থেকে বেনিয়ম হচ্ছে। যে মেডিক্যাল কলেজের প্রশাসনিক পদে কিছু দিন আগে পর্যন্তও ছিলেন সাংসদ শান্তনু সেন, সেই হাসপাতালের পদ নিয়েই প্রকাশ্যে ক্ষোভ জানিয়ে দলীয় পদ খোয়ালেন প্রাক্তন সাংসদ। প্রশ্ন উঠেছে তাহলে নিজে পদে থাকাকালীন বেনিয়ম দেখেও কেন চুপ ছিলেন শান্তনু সেন। রাজনৈতিক মহলে গুঞ্জন, আর জি করের পদ খুইয়েই বিদ্রোহী প্রাক্তন তৃণমূল সাংসদ।

২০১৮ সাল থেকে আইএমএ-র রাজ্য সভাপতি পদে ডাক্তার শান্তনু সেন। বর্তমানে আইএমএ-র সম্পাদক পদেও রয়েছেন। সেই শান্তনু সেন হঠাৎ আর জি করের ঘটনার পরে অভিযোগ তুলতে থাকেন মেডিক্যাল কলেজের পড়াশোনা, প্রশাসনিক কাজ থেকে স্বজনপোষণ নিয়ে। তিনি দাবি করেন, পরীক্ষার প্রশ্ন থেকে ডাক্তারদের অনার্স পাওয়া, সবেতেই গরমিল আর জি কর মেডিক্যাল কলেজে। এমনকি তিনি এই তথ্য এই ঘটনার পরে নয়, দীর্ঘদিন ধরেই জানতেন। সেখানেই রাজনৈতিক মহলে প্রশ্ন উঠেছে, তাহলে রাজ্যের ডাক্তারদের সংগঠনের সর্বোচ্চ পদে থেকেও কেন এতদিন এর প্রতিকারের কথা ভাবা বা কোনও পদক্ষেপ শান্তনু সেনের দিক থেকে দেখা যায়নি।

আর জি কর হাসপাতালেরই রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান পদে ছিলেন শান্তনু সেন। সেই হাসপাতালেরই প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষের বিরুদ্ধে সবথেকে বেশি ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন প্রাক্তন তৃণমূল সাংসদ। তিনি দাবি করেছেন প্রাক্তন অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে এত অভিযোগ যা অন্য কারো বিরুদ্ধে নেই। এতদিন সেই হাসপাতালেরই পদাধিকারী হয়েও তিনি প্রশাসন বা রাজ্য সরকারকে এনিয়ে কিছু বলেননি। এই ঘটনার পর প্রকাশ্যে সরব হয়েছেন। এভাবে কী তিনি হাসপাতাল বা রাজ্যের সরকারের অপমান করেননি, প্রশ্ন উঠেছে তৃণমূলের অন্দরেই।

নিজের মেয়ের উদাহরণ তুলে ধরে শান্তনু সেন দাবি করেছেন, আর জি করের বেনিয়মের প্রতিবাদ করে একঘরে হয়ে গিয়েছিলেন তিনি। সেই মেডিক্যাল কলেজেরই পদাধিকারী হয়েও কেন তিনি বিষয়টি দলের ঊর্ধ্বতন নেতৃত্বকে জানাননি সেই প্রশ্নও ঘুরছে রাজনৈতিক মহলে। রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যানের পদ থেকে শান্তনু সেনকে সরিয়ে আনা হয়েছে তাঁরই এলাকার বাসিন্দা তথা শ্রীরামপুরের বিধায়ক সুদীপ্ত রায়কে। একদিকে পদ খোয়ানো, অন্যদিকে নিজের এলাকায় অন্যের অধীনে হয়ে যাওয়াকে কী মেনে নিতে পারেননি শান্তনু, তাই এতদিন পরে প্রকাশ্যে প্রতিবাদ, প্রশ্ন রাজনীতিকদের।

একদিকে সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশ্যে বিদ্রোহী হয়েছেন। অন্যদিকে তাঁর মেয়ে ও স্ত্রী যোগ দিয়েছেন ১৪ অগাস্ট রাতের প্রতিবাদে। এরপর দলের পদ থেকে একের পর এক বরখাস্ত। শেষে মান বাঁচাতে শান্তনু দাবি করেছেন, তাঁর বার্তা মুখ্যমন্ত্রীর কাছে সঠিকভাবে পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে না। সেখানেও দলেরই কর্মীদের অভিযোগ, এতদিন নিজের বার্তা মুখ্যমন্ত্রীকে পৌঁছে দেওয়ার উদ্যোগ না নিয়ে প্রকাশ্যে বিদ্রোহের পথে কেন গেলেন শান্তনু।

Previous articleআসল বিষয় থেকে নজর ঘুরছে না তো? বিরোধীদের একহাত নিলেন পরমব্রত
Next articleআর জি করে হামলার ঘটনায় তৎপর পুলিশ! গ্রেফতার আরও ২