দিন দিন দুর্ভোগ বাড়ছে রোগীদের। কিন্তু কর্মবিরতি তুলতে নারাজ আন্দোলনরত জুনিয়ার ডাক্তাররা। শনিবার আরজি কর মেডিক্যাল কলেজে গিয়েছিলেন স্বাস্থ্যভবনের শীর্ষ আধিকারিকেরা। কিন্তু সেই বৈঠকে কোনও রফাসূত্র মিলল না। জেনারেল বডি (জিবি) বৈঠকের পরে কর্মবিরতি তোলার বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানান আন্দোলনরত চিকিৎসকেরা।
এদিন স্বাস্থ্য ভবনে আর জি কর মেডিক্যাল কলেজের নতুন অধ্যক্ষ মানসকুমার বন্দ্যোপাধ্যায় এবং হাসপাতালের অন্য আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠক করেন আন্দোলনরত চিকিৎসকেরা। তবে বৈঠকে কোনও সমাধানসূত্র মেলেনি। আন্দোলনকারীদের বক্তব্য, “মহিলা চিকিৎসক ধর্ষণ-খুনের উদ্দেশ্য কী, তদন্তের গতিপ্রকৃতি কী, এই সব আমরা জানতে চাই।“ অর্থাৎ প্রতিদিনের তদন্তের গতিপ্রকৃতি তাঁদের জানানোর দাবি জানান চিকিৎসকরা। তাঁদের কথায়, “আমাদের দাবি মানা না-ও হতে পারে। তবে বিচার প্রক্রিয়া কোথায় দাঁড়িয়ে, তা আমরা জানতে চাই। বিভিন্ন কলেজের ডাক্তারি পড়ুয়াদের সঙ্গে আলোচনা করব। তার পরেই পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেব।“
তবে, আন্দোলনরত চিকিৎসকদের অনড় মনোভাবের কারণে দুর্ভোগ বাড়ছে রোগীদের। সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি থেকে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী, স্বাস্থ্যসচিব- সবাই চিকিৎসকদের কর্মবিরতি তুলে নেওয়ার আর্জি জানাচ্ছেন। স্বাস্থ্যসচিব নারায়ণ স্বরূপ নিগম বলেন, “আপনাদের দাবি আমরা মেনে নিয়েছি। ২১ অগাস্ট আন্দোলনকারী চিকিৎসকদের প্রতিনিধিদের সঙ্গে আমাদের বৈঠক হয়েছে। তাঁরা যে দাবি জানিয়েছিলেন, তার সবটাই মেনে নেওয়া হয়েছে। আর জি করের প্রিন্সিপাল এবং সুপারকে পরিবর্তন করা হয়েছে। আর জি করের চেস্ট ডিপার্টমেন্টের প্রধান এবং অ্যাসিস্ট্যান্ট সুপারকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। আর জি করে নতুন প্রিন্সিপাল এবং সুপার দায়িত্বে এসেছেন। আর্থিক দুর্নীতির তদন্তের জন্য তদন্তকারী দলও গঠন করা হয়েছে। তাই এ বার তাঁরা কাজে ফিরুন।“ স্বাস্থ্যসচিব ব্যাখ্যা দিয়ে বলেন, “রেসিডেন্ট চিকিৎসকেরা আমাদের স্বাস্থ্য পরিষেবার মেরুদণ্ড। তাঁদের অনুপস্থিতি স্বাস্থ্য পরিষেবা ব্যাহত হচ্ছে। বিশেষ করে বেশিরভাগ গরিব মানুষই চিকিৎসার জন্য সরকারি হাসপাতালের উপরে নির্ভরশীল। তাঁরা চরম দুর্ভোগে পড়ছেন। সিনিয়র ডাক্তারেরা এখন সর্বত্র পরিষেবা দিলেও রোগী অনুপাতে সেই পরিষেবা যথেষ্ট নয়।“ কিন্তু রোগী হয়রানি স্বত্ত্বেও এখনও কর্মবিরতি ওঠার বিষয়ে কোনও সদর্থক পদক্ষেপ দেখা যাচ্ছে না।
আরও পড়ুন- নবান্ন অভিযান নিয়ে সতর্ক প্রশাসন: পুলিশ বাহিনী মোতায়েনে জারি নির্দেশিকা