আন্দোলন তোলার জন্য চাপ নেই, গুজব না ছড়ানোর অনুরোধ জুনিয়র ডাক্তারদের

বৃহস্পতিবার প্রশাসনের তরফে পরবর্তী নির্দেশ না আসা পর্যন্ত অপেক্ষা করবেন তারা।

আন্দোলন অবস্থান থেকে কি সরে আসছেন জুনিয়র ডাক্তাররা? বিষয়টি নিয়ে জল্পনা তুঙ্গে। আসলে বুধবার রাত থেকে স্বাস্থ্য ভবনের সামনে জুনিয়র ডাক্তারদের( JUNIOR DOCTOR) অবস্থান মঞ্চ থেকে প্যান্ডেলের বাঁশ এবং পেডেস্টাল ফ্যান খুলে নিয়ে যেতে দেখা যায় ডেকরেটরের লোকেদের। বৃহস্পতিবার সকালেও সেই একই ছবি দেখা গিয়েছে।এরপরেই গুজব ছড়ায়, জুনিয়র ডাক্তারদের অবস্থান তুলে দেওয়ার জন্য কারও কাছ থেকে কোনও ‘চাপ’ আসছে? আন্দোলনরত জুনিয়র ডাক্তাররা অবশ্য সাফ জানিয়েছেন, এগুলি সবই সাধারণ মানুষের দেওয়া। তারা যদি মনে করেন ধর্নাস্থল থেকে ফ্যান(PEDASTAL FAN), ত্রিপল খুলে নিয়ে যাবেন, সেটা তাদের সিদ্ধান্ত। এ নিয়ে আমাদের কিছু বলার নেই। কিন্তু পুলিশ সম্পূর্ণ সহযোগিতা করছে আমাদের সঙ্গে। তাদের তরফ থেকে আন্দোলন তুলে নেওয়ার কোনও চাপ এখনও পর্যন্ত আসেনি।

যদিও বৃহস্পতিবার জুনিয়র ডাক্তারেরা ফের নিজেদের দাবিগুলি খসড়া আকারে ইমেল মারফত মুখ্যসচিবকে(CHIEF SECRETARY) পাঠিয়েছেন।বুধবার রাতে প্রায় পাঁচ ঘণ্টা আলোচনার পর নবান্ন থেকে বেরিয়ে ডাক্তারেরা জানান, বুধবারের আলোচনা অত্যন্ত হতাশাজনক। সব বিষয়ে শুধুই মৌখিক আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। কোনও লিখিত আশ্বাস মেলেনি।চিকিৎসকদের দাবিগুলিকে লিখিত আকারে মেইল করতে বলেছেন মুখ্যসচিব। বৃহস্পতিবার প্রশাসনের তরফে পরবর্তী নির্দেশ না আসা পর্যন্ত অপেক্ষা করবেন তারা।

আন্দোলনকারী চিকিৎসক অনিকেত মাহাতো সংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে বলেন, আন্দোলন ৪০ দিনে পড়ল। স্বাস্থ্য সচিবের অপসারণ ও বাকি দুই দাবিতে মুখ্যসচিবের সঙ্গে বৈঠকে বসা হয়েছিল। হাসপাতালগুলিতে নিরাপত্তা, থ্রেট কালচার, ছাত্র সংসদ নির্বাচন, কলেজে কলেজে টাস্ক ফোর্স তৈরি, এমন নানান দাবি নিয়ে আলোচনা হয়েছে।কিন্তু কার্যবিবরণী নিয়ে মুখ্যসচিবের সঙ্গে কিছু ক্ষেত্রে সহমতে পৌছানো যায়নি।

তাদের দাবি, বৈঠকের ‘মিনিট্‌স’ দেননি মুখ্যসচিব, শুধু মৌখিক আশ্বাস দিয়েছেন। তিনি সব দাবিগুলিকে ফের খসড়া আকারে বৃহস্পতিবার ইমেল করতে বলেছেন। আমরা কাজে ফিরতে চাই। কিন্তু কিছু বিষয়ে সমাধান সূত্র বেরোয়নি। যত ক্ষণ না দাবি পূরণ হচ্ছে আমরা কর্মবিরতি চালিয়ে যাব।অন্য এক আন্দোলনকারী চিকিৎসক(DOCTOR) বলেন, দীর্ঘ বৈঠকে আমাদের সব দাবি মুখ্যসচিব মেনে নিলেও তিনি ‘মিনিট্‌স’-এ সই করতে রাজি হননি। তিনি জানান, নির্দেশ জারি করতে দু’-এক দিন সময় লাগবে। মুখ্যমন্ত্রীর( CHIEF MINISTER) সঙ্গে বৈঠকের পর আমরা লিখিত ‘মিনিট্‌স’ পেয়েছিলাম। কিন্তু আজ বার বার অনুরোধ করা সত্ত্বেও তিনি সই করলেন না। আমরা হতাশ। দু’পক্ষ সহমত হতে পারলাম না।

জানা গিয়েছে, আন্দোলনকারীদের প্রথম দাবি ছিল, প্রতিটি মেডিক্যাল কলেজে জুনিয়র ডাক্তারদের জন্য আলাদা রেস্ট রুম, শৌচাগার, সিসিটিভি, যথাযথ নিরাপত্তাকর্মী, প্রতিটি অন কল রুমে প্যানিক বাটন বসানো, কলেজগুলিতে যৌন হেনস্থা প্রতিরোধে আইসিসি এবং কলেজভিত্তিক টাস্ক ফোর্স গঠন। দ্বিতীয় দাবি ছিল, একটি কেন্দ্রীয় ‘রেফারাল সিস্টেম’ গড়ে তোলা, যাতে প্রতিটি হাসপাতালে কোন বিভাগে কোন সময়ে ক’টি বেড খালি আছে, সেই তথ্য সকলে জানতে পারেন। এর মাধ্যমে হাসপাতালে ভর্তি নিয়ে গড়ে ওঠা দালালচক্র রোধ করা সম্ভব হবে।এরই পাশাপাশি তাদের দাবি, প্রতিটি কলেজে ভয়ের রাজনীতি বন্ধ করতে হবে। প্রতিটি কলেজে এই ধরনের ঘটনা যারা ঘটিয়েছেন, ঘটিয়ে চলেছেন, তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত কমিটি গড়তে হবে। বৃহস্পতিবার গতিপ্রকৃতি কোনদিকে গড়ায়, সেদিকেই তাকিয়ে সবাই।









 

Previous articleঝাড়খণ্ডকে বাঁচাতে বাংলাকে ডোবাচ্ছে: কেন্দ্রকে তোপ মমতার, দুর্গতদের দ্রুত ত্রাণ পৌঁছনোর নির্দেশ DM-SP-কে
Next articleঘুসুড়িতে কাপড়ের গোডাউনের ছাদ ভেঙে মর্মান্তিক মৃত্যু ৪ শ্রমিকের!