Sunday, November 9, 2025

কলকাতার বস্তি এলাকায় ঝান্ডা বাঁধার লোক নেই? মহিলা-বর্জিত বৃদ্ধতন্ত্র CPIM-এ! কী বলছে প্রতিবেদন

Date:

Share post:

উচ্চবিত্তরা নন, বামেদের চিরকালই সংগঠনের ভিত্তি ছিল মহানগরের নিম্নবিত্ত বস্তি অঞ্চল। কলকাতার যে সব অঞ্চলে বস্তি বেশি ছিল, সেখানে সিপিএমের (CPIM) ভোটবাক্স ভরতো। ১৩ বছর ক্ষমতার বাইরে থেকে এখন কলকাতার বস্তি এলাকায় লাল ঝান্ডা বাঁধার লোক পাওয়া যাচ্ছে না। পার্টির কলকাতা (Kolkata) জেলা সম্মেলনের পেশ হতে চলা প্রতিবেদনে প্রকাশ্যে এই তথ্য। এর পাশাপাশি বিপুল হারে কমেছে মহিলা সদস্য সংখ্যা। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) নারী ক্ষমতায়নের উন্নয়নমূলক প্রকল্পের জেরে তৃণমূলের প্রতি আস্থা রয়েছে মহিলাদের। একই সঙ্গে বৃদ্ধতন্ত্রে জর্জরিত দল।

শনিবার থেকে সিপিএমের কলকাতা জেলা সম্মেলন শুরু হচ্ছে। সেখানকার প্রতিবেদনে ধরা পড়েছে দক্ষিণ কলকাতার কয়েকটি জায়গায় পরিস্থিতি কিছুটা ভালো হলেও, বাকি সব জায়গাই লাল-শূন্য। কলোনি এলাকা- যেসব জায়গায় সংগঠন করেই আলিমুদ্দিন স্ট্রিটের ভিত গড়া হয়েছিল, সেই জায়গায় বামকে পিছনে ফেলে প্রভাব বিস্তার করেছে BJP। সঙ্গে রয়েছে যুব ও মহিলাদের তৃণমূলের উপর আস্থা। সব মিলিয়ে বস্তি এলাকায় প্রায় হারিয়ে যেতে বসেছে বামেরা। টালিগঞ্জ, যাদবপুর, পূর্ব-পশ্চিং বেহালা, কসবার কিছু এলাকায় সাংগঠন কিছুটা মজবুত হলেও, বাকি জায়গায় সিপিএমের অস্তিত্ব বিপন্ন। পরিস্থিতি এমনই যে, তহবিল সংগ্রহ, পত্রিকা বিক্রি, কর্মসূচিতে জমায়েতের লোক পাওয়া যাচ্ছে না।

দক্ষিণ কলকাতা যদিও বা সামান্য ভরসা যোগাচ্ছে, কিন্তু উত্তর-সহ বাকি প্রান্তে ভরাডুবি সিপিএমের। মানিকতলা, বেলেঘাটা, চেতলা, পার্ক সার্কাস, বালিগঞ্জ-সহ শহরের সব বস্তিতেই পার্টির দুর্বলতার চরমে পৌঁছেছে। এমন কী এই সব জায়গায় নিয়মিত দলীয় কার্যালয়গুলি খোলার লোকটাও পাওয়া যায় না।

আর জি কর-কাণ্ডে সাধারণ মানুষের আবেগকে হাতিয়ার করে রাজনৈতিক তাস খেলতে চেয়েছিল বাম-অতিবাম সংগঠনগুলি। কিন্তু সেটা বুমেরাং হয়েছে। তাদের রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রকাশ হয়ে গিয়েছে। যার ফলে এই ঘটনার পরেই রাজ্যের ৬টি কেন্দ্রে বিধানসভা উপনির্বাচনে নোটার সঙ্গে লড়তে হয়েছে বাম প্রার্থীদের।

এর পাশাপাশি উল্লেখযোগ্য হারে কমছে সংগঠনে মহিলা সদস্য সংখ্যা। হল সিপিএমের কলকাতা জেলা সম্মেলনের প্রতিবেদনে এই নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে। পরিসংখ্যান দিয়ে দেখানো হয়েছে, সিপিএমে মহিলা সদস্য সংখ্যা হু হু করে কমছে। দেখা নেই তরুণদেরও। যে ইয়ং ব্রিগেডকে সামনে রেখে বিগত কয়েকটি নির্বাচনে ভোট বৈতরণী পেরোতে চেয়েছিল আলিমুদ্দিন, সেটা যে নীচের স্তর পর্যন্ত একেবারেই পৌঁছয়নি, সেটা দেখা গিয়েছে পরিসংখ্যানে। এখন পার্টি অফিস খোলার জন্যেও বৃদ্ধ কমরেডরাই ভরসা দলের।

প্রতিবেদন অনুযায়ী, সিপিএমে মহিলা সদস্যদের গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে না। ফলে মহিলা সদস্য সংখ্যা ক্রমশ কমছে। আধিক্যের কারণে বাড়ছে পুরুষদের আধিপত্য। মহিলা সদস্য সংগ্রহেও উদ্যোগ নেই। উল্টো দিকে তৃণমূল (TMC) বিশেষ করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতি অগাধ আস্থা বাংলার মহিলাদের। সবক্ষেত্রেই তিনি নারী ক্ষমতায়ন, তাদের সম্মান, মর্যাদা রক্ষায় জোর দিয়েছেন। ফলে কার্যত নারী বর্জিত ‘পুরুষতান্ত্রিক’ দল হয়ে উঠছে CPIM।

spot_img

Related articles

কাশ্মীরে সরকারি হাসপাতালে জঙ্গি যোগ! চিকিৎসকের লকার থেকে উদ্ধার আগ্নেয়াস্ত্র

মুখে যতই বড় বড় কথা বলুন না কেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, ভূস্বর্গে যে জঙ্গিদের কার্যকলাপ বেড়েই চলেছে তার আরও এক...

টানা দুদিন তাপমাত্রা কুড়ির নীচে, রবির সকালে দক্ষিণবঙ্গে ভরপুর শীতের আমেজ 

উইকেন্ডে পারদ পতন অব্যাহত, আগামী সপ্তাহের মাঝে মাঝে পর্যন্ত শীতের আমেজ (Winter in Weekend) পুরোপুরি উপভোগ করতে পারবে...

KIFF: রবিবাসরীয় ফিল্মোৎসবে হলিউড ক্লাসিক ‘ব্লু ভেলভেট’ দেখার সুযোগ, দুপুরে ফেলুদার নস্টালজিয়া!

দেখতে দেখতে তিন দিন পার, উদ্বোধনের দিনটাকে হিসেবের মধ্যে ধরলে আজ ৩১ তম কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের (31st...

বেঁচে থাকলে রবীন্দ্রনাথ-নজরুলকে অনুপ্রবেশকারী বলে দাগিয়ে দিত! পুরুলিয়ার সভা থেকে বিজেপিকে আক্রমণ দেবাংশুর

ভাগ্যিস রবীন্দ্রনাথ, নজরুল বেঁচে নেই। নইলে বিজেপি রবীন্দ্রনাথকে রোহিঙ্গা ও নজরুলকে অনুপ্রবেশকারী বলে দাগিয়ে দিত। শনিবার পুরুলিয়া শহরের...