প্রসূতি মৃত্যুতে দ্রুত পদক্ষেপ রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতরের। তদন্তকারী দল পাঠিয়ে মৃত্যুর তদন্তের পাশাপাশি কীভাবে স্যালাইনের জন্য মৃত্যু, আদতে তার পিছনে প্রকৃত কারণ কী, তা বের করতে তৎপর রাজ্য সরকার। শনিবার তা নিয়ে প্রথম পর্যায়ের তদন্ত মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজে। স্বাস্থ্য দফতরের ছয় সদস্যের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে প্রথম বৈঠক শেষে অধ্যক্ষ মৌসুমী নন্দী জানান, তদন্ত চলছে। যদিও স্বাস্থ্য দফতরের তদন্তকারীরা প্রাথমিক তদন্ত নিয়ে মুখ খোলেননি। রাতারাতি তদন্তকারী পাঠিয়ে যেখানে জট খুলতে মরিয়া রাজ্য সরকার, সেখানে তদন্তকারী দল পৌঁছাতেই রাজনৈতিক ফায়দা তুলতে মেডিক্যাল কলেজের বাইরে গণ্ডগোলের চেষ্টা চালায় বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি। বিরোধীদের রাজনৈতিক ফায়দা তোলার রাজনীতিকে কটাক্ষ শাসক দলের।

নিষিদ্ধ সংস্থার ওষুধে কীভাবে মৃত্যু মেদিনীপুরের প্রসূতির, তদন্তে শনিবারই মেদিনীপুর যায় ১৩ সদস্যের প্রতিনিধিদল। প্রাথমিকভাবে ছয় সদস্যের তদন্তকারী দলের সঙ্গে বৈঠক হয় মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষের। অধ্যক্ষের পাশাপাশি চিকিৎসক, নার্স, মুখ্যস্বাস্থ্য আধিকারিক সকলকে নিয়ে বৈঠক করেন তাঁরা৷ বেলা সাড়ে এগারোটা থেকে বেলা ২ টো পর্যন্ত বৈঠক চলে। পরে সেখান থেকে স্বাস্থ্য কর্তারা সিসিইউতে থাকা রোগীদের দেখতে ঢোকেন। সংগ্রহ করা হয় ওষুধ, স্যালাইনের নমুনা। শনিবারের তদন্ত নিয়ে বিস্তারিত না জানালেও তদন্তকারীরা দাবি করেন, পুরো পরিস্থিতি নজরে রয়েছে, আরও অনেকখানি দেখতে হবে।

সেই সঙ্গে সিসিইউ-তে ভর্তি রোগীদের পরিস্থিতি সম্পর্কেও তাঁরা জানান। এসএসকেএম- এর হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ ডাঃ সরোজ মন্ডল বলেন- এখানকার চিকিতসকেরা দক্ষতার সাথে পুরো বিষয়টা থেকে উদ্ধার করার চেষ্ট করছেন। পুরো টিম কাজ করছে। রোগীও চিকিৎসায় সাড়া দিচ্ছে এর বেশি এখনই বলা যাবেনা। পরে সার্কিট হাউসে ফের তদন্তকারীদের পুরো দল বৈঠকে বসে। এই ঘটনায় দুদিনের মধ্যে রিপোর্ট তলব করেছে নবান্ন। ফলে তদন্তকারী দল অত্যন্ত তৎপরতার সঙ্গে জিজ্ঞাসাবাদ ও নমুনা সংগ্রহের প্রক্রিয়া শেষ করে রিপোর্ট প্রস্তুত করবে। সেই রিপোর্ট স্বাস্থ্য দফতর সহ যাবে নবান্নে।

যেখানে রাজ্য সরকার নিষিদ্ধ সংস্থার ওষুধ নিষেধাজ্ঞার পরেও ব্যবহারের সূত্র খুঁজছে, সেখানে রাজনীতির পারদ চড়াতে ব্যস্ত রাজ্যের সব বিরোধী দল। শনিবার তদন্তকারী দল মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজে পৌঁছাতেই হাসপাতালের বাইরে বিক্ষোভ শুরু করে বাম কংগ্রেস। পাল্টা তৃণমূলের কটাক্ষ বাম আমলের মেডিক্যাল কিট কেলেঙ্কারি নিয়ে। রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষের দাবি, এই ভুল কীভাবে হল তা তদন্ত সাপেক্ষ। যথাযথ গুরুত্বের সঙ্গে স্বাস্থ্য দফতর তদন্ত করছে। কিন্তু এমন নয় একমাত্র এই রাজ্যে এই প্রথম এরকম চিকিৎসায় দুর্নীতির ঘটনা ঘটছে। সিপিএম ওখানে গিয়েছে নাটক করতে। সিপিএমের জমানায় ভুল চিকিৎসা, মেডিক্যাল কিট কেলেঙ্কারি। যাবতীয় কিট নিয়ে যে ভয়ঙ্কর কেলেঙ্কারি, তারপর সেগুলো নিয়ে নানা কাণ্ড কারখানা। কারা জড়িত সিপিএম যেন ভুলে না যায়। বিজেপি শাসিত রাজ্যে এমন ঘটনা ঘটেছে, যা বিজেপিকেও মনে রাখতে হবে।

–

–

–

–

–

–
