এক সময় গঙ্গাসাগরে (Gangasagar Mela) হারিয়ে যাওয়ার ঘটনা ছিল খুবই সাধারণ। বর্তমানে যেভাবে গঙ্গাসাগর মেলা পরিচালনা করা হয় তাতে যেন হারিয়ে যাওয়াই এখন অসাধ্য হয়ে উঠেছে। এবছর অন্যান্য নিরাপত্তার পাশাপাশি ছিল ড্রোনে (drone) নজরদারি। আর সেই ড্রোন আর হ্যাম রেডিওর (ham radio) ব্যবহার এক মায়ের কোলে ফিরিয়ে দিল তার দুই সন্তানকে।

জেলাশাসকের নির্দেশে এবং অতিরিক্ত জেলাশাসকদের পর্যবেক্ষণের মধ্যেই গঙ্গাসাগরের বিভিন্ন স্থানে হ্যাম রেডিওর ওয়েস্ট বেঙ্গল রেডিও ক্লাবের (West Bengal Radio Club) সদস্যরা হারিয়ে যাওয়া অথবা কথা বলতে না পারা, অথবা সংজ্ঞাহীন শিশু এবং ভাষা না বুঝতে পারা মানুষদের উদ্ধার করে এসেছে বরাবর। উত্তর ২৪ পরগনার বারাসাতের (Barasat) অশ্বিনী পল্লীর বাসিন্দা বিশালা নস্কর (৩৭) ৯ ও ৩ বছরের দুই মেয়েকে এবং বৃদ্ধা মাকে নিয়ে গঙ্গা সাগরে স্নান করতে এসেছিলেন। কিন্তু স্নান সেরে বাস স্ট্যান্ড থেকে কচুবেড়িয়ার (Kochuberia) উদ্দেশ্যে রওনা দেওয়ার জন্য বাসে উঠতে গিয়েই বিপত্তি। দুই শিশু কন্যা বাসে উঠে পড়লেও বৃদ্ধা মাকে নিয়ে বাসে উঠতে পারেননি বিশালা।

মেয়েদের হারিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েন তিনি। হ্যাম রেডিও ক্লাবের সদস্যা সাবর্ণী নাগ বিশ্বাস ওই মহিলাকে প্রাথমিক পর্যায়ে জল দিয়ে জ্ঞান ফেরান। জানতে পারেন গোটা ঘটনা। এদিকে বাসের নম্বরও মনে করতে পারছেন না বৃদ্ধা। পুলিশ কন্ট্রোল রুমে (police control room) বিষয়টি জানালে পুলিশ তৎপর হয়ে ওঠে। সাহায্য নেওয়া হয় বাসস্ট্যান্ডে ঘুরতে ড্রোনের (drone)। ওই ড্রোনের মাধ্যমে জানা যায় বাসটির অবস্থান।

সাবর্ণী কন্ট্রোল রুম থেকে মহিলা পুলিশের একটি টিম নিয়ে রওনা দেন ওই বাসের উদ্দেশে। নিরবচ্ছিন্ন যোগাযোগ রেখে কালিনগরের বাফার জোনের কাছে রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকা বাসের কাছে সাবর্ণী পৌঁছতেই জানা যায় ওই বাসেই বাচ্চা দুটি আছে। অসাধারণ সমন্বয়। বাচ্চাদুটিকে উদ্ধার করা হয়। নিয়ে আসা হয় কে ওয়ান বাস স্ট্যান্ডে। পুলিশের সহযোগিতায় তাদের সামনেই তুলে দেওয়া হয় বাচ্চা দুটিকে তাদের মায়ের কাছে।

–

–

–

–

–

–

–
