পহেলগাম আবহে ভারতকে শান্তি বজায় রাখার বার্তা মার্কিন সচিবের, ফোন পাক প্রধানমন্ত্রীকেও 

পহেলগামে ভয়াবহ জঙ্গি হামলায় নিহতদের প্রতি শোকপ্রকাশ করে দুই দেশকে শান্তি বজায় রাখার অনুরোধ করেছেন মার্কিন বিদেশ সচিব।

0
2

কাশ্মীরে জঙ্গি হামলায় (Pahelgam Terrorist attack) ২৬ নিরীহ পর্যটকের মৃত্যুর প্রতিশোধ নিতে যখন ঘুঁটি সাজাচ্ছে ভারত, তখন শান্তি বজায় রাখার আহ্বান আমেরিকার। পহেলগামের ঘটনায় পাকিস্তানের মদতপুষ্ট লস্করের (Laskar e Taiba) যোগসূত্র খুঁজে পেয়েছে দেশ (India)। প্রতিবাদে ইসলামাবাদের বিরুদ্ধে একগুচ্ছ পদক্ষেপ করেছে নয়াদিল্লি। পাল্টা পাকিস্থানের তরফেও একাধিক সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। দুই দেশে যখন যুদ্ধের আবহও তৈরি হচ্ছে ঠিক তখনই শান্তির বার্তা দিতে ভারতের বিদেশ মন্ত্রী এস জয়শঙ্কর (Minister of External affairs of India S Jaishankar) এবং পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফের (Shahbaz Sharif) সঙ্গে ফোনে কথা বললেন আমেরিকার বিদেশ সচিব মার্কো রুবিও (Marco Rubio)। সূত্রের খবর, সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ভারতকে সব রকম সহযোগিতার প্রতিশ্রুতি দেওয়ার পাশাপাশি পাশাপাশি দক্ষিণ এশিয়ায় এই উত্তেজনামূলক পরিস্থিতি ঠিক করতে এবং শান্তি ও নিরাপত্তা বজায় রাখতে পাকিস্তানের সঙ্গে আলোচনা করার কথা ভারতকে জানিয়েছেন মার্কিন বিদেশ সচিব।

বছরের পর বছর ধরে জঙ্গিদের আঁতুড় ঘর হিসেবে পরিচিত পাকিস্তানকে মদত দিয়েছে আমেরিকা (USA)। পাকিস্তানের বিদেশমন্ত্রী একথা জানাতেই গোটা বিষয় থেকে পিঠ বাঁচাতে ডোনাল্ড ট্রাম্প (Donald Trump) দুনৌকায় পা দিয়ে চলার নীতি নিয়েছেন। মার্কিন প্রেসিডেন্টের কথা অনুযায়ী ভারত এবং পাকিস্তানের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে কাশ্মীর নিয়ে সমস্যা রয়েছে। দুই দেশের রাষ্ট্রপ্রধান তাঁর বন্ধু তাই সমস্যা সমাধান হওয়ার বিষয়ে তিনি আশাবাদী। আসলে গত তিরিশ বছর ধরে পাকিস্তানের জঙ্গি পালনে মার্কিন মদতের কথা খোয়াজা শরিফ স্পষ্ট করতেই, নিজেদের ভাবমূর্তি পরিষ্কারে উঠে পড়ে লেগেছে আমেরিকা। পহেলগামে ভয়াবহ জঙ্গি হামলায় নিহতদের প্রতি শোকপ্রকাশ করে দুই দেশকে শান্তি বজায় রাখার অনুরোধ করেছেন মার্কিন বিদেশ সচিব। এই কথোপকথনের কথা এক্স হ্যান্ডেলে তুলে ধরে জয়শংকর বলেন, ‘গতকাল (বুধবার) মার্কিন বিদেশসচিব মার্কো রুবিওর সঙ্গে পহেলগাম হামলা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। এই নৃশংস ঘটনা যারা ঘটিয়েছে সেই অপরাধীদের বিচার করা হবেই।’

গত ২২ এপ্রিলের হামলার ঘটনার তদন্ত চালাচ্ছে এনআইএ (NIA)। প্রত্যাঘাতের পরিকল্পনার জন্য পূর্ণ স্বাধীনতা দেওয়া হয়েছে ভারতীয় সেনাকে। যুদ্ধের আশঙ্কা করছে পাকিস্তানও। এই আবহে রুবিও (Marco Rubio) যেভাবে দক্ষিণ এশিয়ার উত্তেজনার পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার জন্য ভারতকে পাকিস্তানের সঙ্গে আলোচনায় বসতে উৎসাহিত করতে চাইছে তা নিঃসন্দেহে যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ।কূটনৈতিক মহল মনে করছে রাশিয়া- ইউক্রেন থেকে শুরু করে ইজরায়েল- হামাস যুদ্ধে জেরে এই মুহূর্তে বিশ্ব অর্থনীতিতে যথেষ্ট প্রভাব পড়েছে। এই অবস্থায় ভারত- পাকিস্তানের মধ্যে কোনও রকমের উত্তেজনার পরিস্থিতি তৈরি হলে সমস্যা আরও বাড়তে পারে। যেভাবে পহেলগামে হামলার ঘটনায় ফুঁসছে ১৪০ কোটির দেশ তাতে যে কোনও মুহূর্তে ভারত যে পাল্টা আঘাত হানবে তা একপ্রকার স্পষ্ট হয়ে গেছে গোটা বিশ্বের কাছে। ইতিমধ্যেই ভারতীয় বায়ুসেনা (IAF) এবং নৌসেনার শক্তি পরীক্ষা হয়েছে। পাকিস্তানের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করার পাশাপাশি ডিজিটাল উপায়ে শত্রু দেশকে ঘায়েল করতে বদ্ধপরিকর নয়াদিল্লি। এহেন পরিস্থিতিতে বুধবার রুবিও উভয় দেশের নেতাদেরই এই উত্তেজনাপূর্ণ পরিস্থিতির জট কাটাতে আহবান জানান। সূত্রের খবর, ভারতের বিরুদ্ধে ‘উত্তেজনাপূর্ণ এবং উস্কানিমূলক আচরণ’-এর অভিযোগ জানিয়েছেন শরিফ। যদিও পাকিস্তানের কথাকে আমল না দিয়ে রণকৌশল তৈরিতে ব্যস্ত ভারতীয় সেনা।