রাজ্যে এখন আর কোনও চাষিকে সেচজলের জন্য একটাকা পর্যন্তও কর দিতে হচ্ছে না। বহু আগেই সেচদফতর রাজ্যের সমস্ত কৃষিজমিতে সেচজল সরবরাহের উপর থেকে কর পুরোপুরি তুলে দিয়েছিল। এবার সেই সিদ্ধান্তের বাস্তবায়নের পরপরই সেচকর আদায়ে নিযুক্ত আধিকারিকদের দায়িত্ব রদবদলের পথে হাঁটল নবান্ন। সিদ্ধান্ত হয়েছে, তাঁদের অন্যান্য প্রশাসনিক কাজে যুক্ত করা হবে।

সেচদফতর সূত্রে খবর, রাজ্যে বর্তমানে ৯টি রেভিনিউ ডিভিশন রয়েছে। অতীতে এই ডিভিশনগুলির হাতেই ছিল সেচকর আদায়ের সম্পূর্ণ দায়িত্ব। এই কাজের জন্য ছিল ১০টি রেভিনিউ অফিসার এবং ২২টি অ্যাসিস্ট্যান্ট ক্যানাল রেভিনিউ অফিসার পদ। কিন্তু বেশ কয়েকটি পদ দীর্ঘদিন ধরেই ফাঁকা পড়ে রয়েছে। যাঁরা এখনও এই পদে কর্মরত, তাঁদের জমি সংক্রান্ত প্রশাসনিক দায়িত্ব এবং অফিস পরিচালনার কাজে নিযুক্ত করা হয়েছে।

সেচদফতরের এক আধিকারিক জানান, “সেচকর আদায় করে রাজস্ব তেমন কিছু আসত না। বরং কর আদায়ের পিছনে যে পরিমাণ প্রশাসনিক খরচ হত, তাতে সরকারের ঘাড়ে বাড়তি বোঝা পড়ত।” আসলে করের হারই ছিল অত্যন্ত কম। বোরো মরশুমে হেক্টর প্রতি ৫০ টাকা, রবি মরশুমে ২০ টাকা এবং খরিফে মাত্র ১৫ টাকা কর ধার্য ছিল। বহু কৃষক এই নামমাত্র করও দিতেন না। ফলে আদায় করতেও খরচ হত সরকারের।

প্রসঙ্গত, প্রথমে ডিভিসি প্রকল্পের আওতাধীন কৃষিজমিতে কর মকুব করা হয়। এরপর কংসাবতী, তিস্তা, মূয়রাক্ষী সহ অন্যান্য বৃহৎ জলাধার প্রকল্পগুলির ক্ষেত্রেও কর প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়। এর ফলে এখন সারা রাজ্যের চাষিরা সরকারি সেচ ব্যবস্থার সুবিধা পাচ্ছেন সম্পূর্ণ বিনামূল্যে। এই প্রেক্ষাপটেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, যাঁরা এতদিন সেচকর আদায়ের দায়িত্বে ছিলেন, তাঁদের জমি বন্দোবস্ত, পরিমাপ ও দফতর পরিচালনার কাজে কাজে লাগানো হবে। রাজ্য অর্থদফতরের অনুমোদন পাওয়ার পরেই সেচদফতর এই বদলির বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে। চাষিরা বলছেন, “এই সিদ্ধান্তে আমরা অনেকটাই স্বস্তি পেয়েছি। জল পেতে আর কোনও বাড়তি খরচ নেই, চাষের খরচও কিছুটা কমবে।”

আরও পড়ুন – উচ্ছ্বাসে মর্কেলের কোলে উঠে পড়লেন গম্ভীর, তাঁর মুখে আত্মসমর্পনের কথা

_

_

_

_

_

_
_
_
_
_