ভিনরাজ্যে বিশেষ করে বিজেপিশাসিত রাজ্যে আক্রমণের শিকার হচ্ছেন বাংলাভাষী পরিযায়ী শ্রমিকরা। বাংলা বলার অপরাধে ‘ডিটেনশন ক্যাম্প’-এ তুলে নিয়ে গিয়ে অত্যাচার করা হচ্ছে শ্রমিকদের। এর প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার রাসবিহারী মোড়ে বাঙালিকে ‘ডিটেনশন ক্যাম্প’-এ বাঙালি পরিযায়ী শ্রমিকদের তুলে নিয়ে গিয়ে অত্যাচার করার বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ জানায় দেশ বাঁচাও গণমঞ্চ (Desh Bachao Gana Mancha)।

এদিন একদিকে যখন বিধানসভায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) তাঁর সুস্পষ্ট বক্তব্যে বুঝিয়ে দিচ্ছেন বাংলা বিদ্বেষী বিজেপি ও রাজ্য সরকারের মধ্যে, বাংলার মানুষদের মধ্যে পার্থক্য কোথায়, তখন রাসবিহারী মোড়ে বাঙালিকে ‘ডিটেনশন ক্যাম্প’-এ বাঙালি পরিযায়ী শ্রমিকদের তুলে নিয়ে গিয়ে অত্যাচার করার বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছেন দেশ বাঁচাও গণমঞ্চের সদস্যরা। তাঁদের বক্তব্য, সমস্ত কিছু সহ্য করার একটি সীমা থাকে। বাঙালিরা আর মুখ বুজে এসব সহ্য করবে না৷ বিজেপির ধরে ধরে ডিটেনশন ক্যাম্পে তুলে নিয়ে গিয়ে অত্যাচার করা, বাঙালিকে-বাংলা ভাষাকে অপমান করার বিরুদ্ধে বাঙালিরা প্রতিরোধ গড়ে তুলবে বাঙালি। বাঙালিই একমাত্র পারবে বিজেপির এইসব চক্রান্তের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে।

মঞ্চে সঙ্গীত পরিবেশন করেন নাজমুল হক, অমিত কালি। আবৃত্তি করেন উত্তরবঙ্গের রাজবংশী অধ্যাপক গোপা রায়। বক্তব্য রাখেন প্রবীণ সাংবাদিক রন্তিদেব সেনগুপ্ত, সমাজকর্মী কল্যাণ সেনগুপ্ত, বর্ণালী মুখোপাধ্যায়, বাংলা জাতীয় সম্মেলনের সভাপতি সিদ্ধব্রত দাস। ছিলেন অর্থনীতিবিদ প্রদীপ্ত গুহঠাকুরতা, সাংবাদিক পার্থসারথি গুহ, অভিনেতা রাহুল চক্রবর্তী, ভিভান ঘোষ, সমাজকর্মী সুশান রায়, সাংবাদিক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক সুমন ভট্টাচার্য প্রমুখ৷

বিজেপির (BJP) বাংলা ও বাঙালি বিদ্বেষের ফসল এই ‘ডিটেনশন ক্যাম্প’। গত বছর থেকেই বিজেপি বাঙালি পরিযায়ী শ্রমিকের উপর অত্যাচারের বিভিন্ন পন্থা চালু করেছিল৷ কখনও শোনা যেত বাংলাদেশি সন্দেহে মহারাষ্ট্র থেকে বাংলাদেশে ‘পুশ ব্যাক’-এর ঘটনা, কখনও আবার হরিয়ানায় পিটিয়ে মেরে ফেলার ঘটনা, তো কখনও কান কেটে নেওয়ার মতো ঘৃণ্য ঘটনা। শেষে এল এই জঘন্য ‘ডিটেনশন ক্যাম্প’-এর মতো পরিকল্পনা, যেখানে বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলিতে বিজেপির নির্দেশে পুলিশরা বাংলাদেশি সন্দেহে বাঙালি পরিযায়ী শ্রমিকদের তুলে নিয়ে গিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের নামে অকথ্য অত্যাচার করতে থাকে। দেশ বাঁচাও গণমঞ্চের (Desh Bachao Gana Mancha) সদস্যদের স্পষ্ট বক্তব্য এটাই যে, এই অন্যায় অত্যাচার আর সহ্য করা হবে না। বাঙালি প্রতিরোধ গড়ে তুলবেই।
