ফের একবার নির্বাচন কমিশনের অপরিকল্পিত এসআইআর চালু করা নিয়ে তোপ দাগলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায় (Mamata Banerjee)। একদিকে রাজ্যের উন্নয়নের কাজ আটকে রেখে আধিকারিকদের উপর এসআইআর (SIR) নিয়ে চাপ প্রয়োগ করছে নির্বাচন কমিশন। অন্যদিকে তাদেরই পরিকাঠামোর সমস্যায় বিঘ্নিত সেই এসআইআর-এর কাজ। এর পিছনে কমিশনের ডবল ইঞ্জিন সরকারকে মদত দেওয়ার যে পরিকল্পনা রয়েছে, তা নিয়ে কোচবিহারের প্রশাসনিক সভা থেকে কমিশনকে (Election Commission) পক্ষপাতদুষ্ট বলে আক্রমণ মুখ্যমন্ত্রীর (Chief Minister)।
কোনও রাজ্যের সঙ্গে আলোচনা না করে ১২ রাজ্য ও কেন্দ্র শাসিত অঞ্চলে একদিনে ভোটার তালিকার নিবিড় সংশোধনী (SIR) চালু করেছে নির্বাচন কমিশন। তার জেরে বাংলায় প্রশাসনিক কাজ ব্যাপকভাবে ক্ষতির মুখে। উন্নয়নের কাজে এভাবে বাধায় ক্ষুব্ধ মুখ্যমন্ত্রী কোচবিহারের প্রশাসনিক সভা থেকে ক্ষোভ প্রকাশ করতে বাকি রাখেননি। তিনি দাবি করেন, আমি জানি বিএলও (BLO) থেকে বিডিও, এসডিও-দের উপর চাপ পড়ছে। আপনারা দেখবেন সকলেই ওই কাজটাও করতে হবে, আবার উন্নয়নের কাজটাও। এটা ইচ্ছা করেই করা হয়েছে। যাতে উন্নয়নটা স্তব্ধ হয়ে যায়। কিন্তু উন্নয়ন একটা বহমান প্রক্রিয়া।

কমিশনের এই কাজ করতে গিয়ে প্রবল সমস্যায় বিএলও-রা। কাজের চাপের পাশাপাশি কমিশনের প্রযুক্তির সমস্যায় কীভাবে পড়তে হচ্ছে বিএলও-দের তার ব্যাখ্যা করেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁদের সাহায্য করার জন্য প্রশাসনিক কর্তাদের আবেদন জানান তিনি। সেই সঙ্গে জেলাশাসকদের নির্দেশ দেন, সতর্ক থাকার জন্য। এসআইআর প্রক্রিয়ায় সার্ভারের ভুলের জন্য যেভাবে তালিকায় ভুল হয়ে যাচ্ছে, সেই সব উদাহরণ তুলে ধরেন তিনি।

বাস্তবে রাজ্যগুলি যেভাবে অপরিকল্পিত এসআইআর প্রক্রিয়ার শিকার তা নিয়ে কমিশনের স্বৈরাচারী আচরণ নিয়ে তোপ দাগেন তিনি। মুখ্যমন্ত্রীর দাবি, অপরিকল্পিত (unplanned) এসআইআর (SIR)। সার্ভার কাজ করছে না বিএলও-দের (BLO) রাত ১০টার পর হুমকি দেওয়া হচ্ছে। বিডিওদের (BDO), মহকুমা শাসকদের (SDO) ঘুমাতে দেওয়া হচ্ছে না। চাপের উপর চাপ। বাংলায় প্রায় ৪১ জন মারা গিয়েছে। চারজন মারা গিয়েছেন। তিনজন আত্মহত্যা করতে গিয়েছিলেন। মধ্যপ্রদেশ, রাজস্থান, কেরল, তামিলনাড়ুতেও মারা গিয়েছে। বাংলায় তাও আমরা শিবির করে সাহায্য করছি। তা সত্ত্বেও তাঁরা রক্ত মাংসের মানুষ।

আরও পড়ুন : কেন্দ্রের পরিকল্পনার ব্যর্থতায় বিপর্যয়! ইন্ডিগো বিভ্রাটে ক্ষতিপূরণের দাবি মুখ্যমন্ত্রীর

বাংলায় বিধানসভা নির্বাচন আসন্ন। স্বাভাবিকভাবেই তার আগে প্রশাসনিক ও উন্নয়নমূলক কাজের চাপ থাকে প্রশাসনিক কর্তাদের উপর। সেই পরিস্থিতিতে এসআইআর চালু করে স্বৈরতান্ত্রিক আচরণ করছে কমিশন। আর তার জন্য যে কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের চাপই দায়ী, তা স্পষ্ট করে মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায় দাবি করেন, ভোটার তালিকা তৈরি হচ্ছে মানে কী সবকিছু বন্ধ? দুমাসের মধ্যে করতে হবে কেন তাড়াহুড়ো করে? আগের বার তো দুবছর লেগেছিল। ২০০১-এ নির্বাচন হয়েছিল। ২০০১-এর পরে শুরু হয়েছিল, ২০০৪-এ শেষ হয়েছিল। ২০০৪-এ তারপর নির্বাচন হয়েছিল। হঠাৎ দুমাসের মধ্যে করতে হবে, কেন এত পেটের ক্ষুধা? কারণ নাগরিকদের ভোট কেটে দিতে ববে। ভোট কেটে ডবল ইঞ্জিন সরকারকে দিতে হবে। এটাই কী লক্ষ্য? আমি ভেবে পাই না, একটা কমিশন যদি একপক্ষ হয়ে যায়, মানুষ বিচার পাবে কোথায়? একটা গণতন্ত্র যদি একপক্ষ হয়ে যায় সেটাকে স্বৈরতন্ত্র বলে।

–

–

–



