বাংলায় বিজেপির নেতারা যখন কেন্দ্রীয় প্রকল্প বাংলায় লাগু না করার জন্য প্রতিবাদে সামিল হচ্ছেন, তখন পরিসংখ্যানই বলে দিচ্ছে বাংলার কৃষি ও কৃষকের উন্নতিতে রাজ্য সরকারের প্রকল্পই যথেষ্ট। সেখানে কেন্দ্রের প্রচার করার জন্য কেন্দ্রীয় প্রকল্প (central scheme) লাগু করার দরকার নেই। বাংলার শাসকদলের দাবি, ২০১১ সালে ক্ষমতায় আসার পর থেকে পশ্চিমবঙ্গে কৃষি ও সংশ্লিষ্ট খাতে সরকারি ব্যয় প্রায় দশগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে।

তৃণমূল সূত্রে জানানো হয়েছে, ২০১৯ সালে চালু হওয়া ‘বাংলা শস্য বিমা’ প্রকল্পের আওতায় এখনও পর্যন্ত প্রায় ৩,৯৩৮ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়েছে। এই প্রকল্পে ১ কোটি ১৩ লক্ষ কৃষক ফসল বিমার সুবিধা পেয়েছেন বলে দাবি। প্রাকৃতিক দুর্যোগ বা খারাপ আবহাওয়ার কারণে ফসল নষ্ট হলে ক্ষতিপূরণের টাকা সরাসরি কৃষকদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে (bank account) পাঠানো হয়। শুধু গত বছরেই এই প্রকল্পে ৬৩৭.৩৯ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে বলে তৃণমূলের দাবি। শাসকদলের দাবি, কৃষকবান্ধব এই প্রকল্পগুলির ফলেই রাজ্যে কৃষক আত্মহত্যার ঘটনাও হ্রাস পেয়েছে। প্রকল্প চালুর পর নিয়মিত প্রচারের মাধ্যমে কৃষকদের নাম নথিভুক্ত করা হয়েছে বলেও দাবি করা হয়েছে।

উৎপাদনের পরিসংখ্যান তুলে ধরে তৃণমূল জানিয়েছে, ধান উৎপাদনে (paddy cultivation) পশ্চিমবঙ্গ দেশের শীর্ষে রয়েছে। মোট জাতীয় উৎপাদনের ১২.৮৭ শতাংশ আসে এই রাজ্য থেকে। সব্জি উৎপাদনে রাজ্যের স্থান দ্বিতীয়—২০২৩ সালে উৎপাদন হয়েছে ২ কোটি ৯১ লক্ষ টন। চা উৎপাদনেও রাজ্য দ্বিতীয় স্থানে উঠে এসেছে—২০২৪ সালে উৎপাদন ৩৭৩.৪৮ মিলিয়ন কেজি। পাশাপাশি কোল্ড স্টোরেজ ক্ষমতায় দেশজুড়ে প্রথম স্থানে রয়েছে পশ্চিমবঙ্গ। রাজ্যে মোট ক্ষমতা ৫.৯৫ মিলিয়ন মেট্রিক টন, যা জাতীয় গড়ের তুলনায় ৪১৩ শতাংশ বেশি।
তৃণমূলের দাবি অনুযায়ী, প্রতি বছর প্রায় ৫৫ লক্ষ মেট্রিক টন ধান উৎপাদিত হয় রাজ্যের ১৬ লক্ষ ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষকের হাত ধরে। কৃষকদের সরাসরি সহায়তায় ‘কৃষক বন্ধু’ প্রকল্প, উন্নত কৃষিযন্ত্রের মাধ্যমে যান্ত্রিকীকরণ এবং ‘সুফল বাংলা’র (Sufal Bangla) মাধ্যমে কৃষিপণ্যের সরাসরি বিপণন ব্যবস্থাকে ‘গেম চেঞ্জার’ বলে দাবি করেছে শাসক দল।

আরও পড়ুন : এটাই ‘বেটি বাঁচাও’-এর বাস্তবতা! উন্নাও-এর নির্যাতিতাকে ওমপ্রকাশের উপহাসের তীব্র নিন্দা অভিষেকের

একই সঙ্গে কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে তোপ দেগে তৃণমূলের অভিযোগ, কৃষিপণ্য আমদানি কমানো ও রফতানি বাড়ানোর প্রতিশ্রুতি রক্ষা করতে পারেনি কেন্দ্র। জাতীয় সড়ক ধরে গুদাম-ভিত্তিক লজিস্টিক গ্রিড তৈরির ঘোষণাও বাস্তবায়িত হয়নি বলে দাবি। তৃণমূলের বক্তব্য, এই সব ব্যর্থতার মধ্যেই রাজ্যে কৃষকদের পাশে দাঁড়িয়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়-এর (Mamata Banerjee) সরকার।

–

–

–

–


