Monday, August 25, 2025

নতুন দলে ঢোকা ইস্তক সবান্ধবে ‘প্রাসঙ্গিক’ থাকার জন্য নাটক করে চলেছেন দলবদলু শোভন চট্টোপাধ্যায়। কৌশলে নিজে থাকছেন একটু আড়ালে, এগিয়ে দিচ্ছেন রাজনীতিতে নবাগতা বান্ধবীকে। তাঁদের যুগল নাট্যরঙ্গে একইসঙ্গে বিরক্ত এবং বেকায়দায় রাজ্য বিজেপি। সদ্য তৃণমূল থেকে আসা এক নেতার হয়ে কোনওদিন রাজনীতি না করা তাঁর বান্ধবী বিজেপিকে যেভাবে আলটিমেটাম দিচ্ছেন আর তা মুখ বুজে হজম করতে হচ্ছে রাজ্য বিজেপিকে, তা কার্যত ব্ল্যাকমেলিং-এর পর্যায়ে পৌঁছে গেছে বলে মনে করেছেন বিজেপির একাধিক নেতা। যাঁকে সম্পদ মনে করে তৃণমূল থেকে আনা হল, তিনি কাজে নামার আগেই মাত্র কদিনে নানা আচরণে বিজেপির কাছে ‘বোঝা’ হয়ে উঠলেন। অবস্থা এমনই যে বিজেপিতে আসা প্রাক্তন তৃণমূলী শোভনের ঝামেলা মেটাতে এখন আদি বিজেপির কেউ নয়, মাঠে নেমেছেন আর এক প্রাক্তন তৃণমূলী মুকুল রায়। ফলে বিষয়টা দাঁড়িয়েছে এরকম, রাজ্য বিজেপি নেতাদের বিরুদ্ধে ক্ষোভবিক্ষোভ সাময়িকভাবে উপেক্ষা করে বিজেপিতে কীভাবে জায়গা করে নিতে হবে সেই ফর্মূলা তৃণমূলের প্রাক্তনী শোভনকে শেখাচ্ছেন তৃণমূলের প্রাক্তনী মুকুল! যিনি শিখছেন তিনি তো বটেই, যিনি শেখাচ্ছেন তিনিও বিজেপিতে কয়েক বছর কাটিয়ে দিলেও কতটা বিজেপির ঘরের লোক হয়ে উঠতে পেরেছেন তাই নিয়ে বিতর্ক আছে। দলবদলের দৌলতে বিজেপিতে তৃণমূলত্যাগী লোকজনের ভিড় বাড়ুক, নিজের স্বার্থেই তা চাইবেন মুকুল। আর উত্তর 24 পরগণার কয়েকটি পুরসভায় নিজের দায়িত্বে দলবদল করানোর পর যা হল তাতে তথাকথিত গড়েই ধাক্কা খেয়েছে মুকুলের বিশ্বাসযোগ্যতা। তাই এখন শোভনকে যে কোনও মূল্যে ধরে রেখে নিজের নম্বর বাড়াতে চাইবেন মুকুল।

তবে অনেকেই বলছেন, শোভন চট্টোপাধ্যায়কে নিয়ে বিজেপিতে বড় কোনও সমস্যাই হত না, যদি না মাঝখানে তাঁর বান্ধবী বৈশাখী থাকতেন। শোভন সংক্রান্ত যে কোনও ইস্যুতে নাক গলিয়ে শুরু থেকেই অস্বাভাবিকতা ডেকে এনেছেন এই মহিলা। শোভন ও বিজেপির সম্পর্কের মধ্যে ঢুকে পড়ে সব বিষয়ে তাঁর খবরদারি বা মতামত ব্যক্ত করার ধরনকে বিজেপির অনেকেই খোলা মনে মানতে পারেননি। তাঁরা বলছেন, বিজেপিতে একটা ডিসিপ্লিন আছে। একটা কাঠামো মেনে কাজ করতে হয়। সেখানে শোভন-বৈশাখীর কান্ডকারখানা দলের ভাবমূর্তিকে নষ্ট করছে। ইচ্ছেমত তাঁরা সংবাদমাধ্যমে প্রতিক্রিয়া দিচ্ছেন, বিজেপি ছাড়ার হুমকি দিচ্ছেন। এতে তাঁরা বিজেপির অভ্যন্তরীণ শৃঙ্খলার নিয়মকেই চ্যালেঞ্জ করছেন। এরপর সাধারণ কর্মী-সমর্থকদের কাছে কী বার্তা যাচ্ছে?

বৈশাখী দিন তিনেক আগে প্রকাশ্যে সংবাদমাধ্যমে জানিয়েছিলেন, বিজেপি থেকে নিষ্কৃতি চান। কারণ বিজেপিতে থেকে কাজ করা অসম্ভব। তাহলে এরপর দলকে পদত্যাগপত্র না পাঠিয়ে দিল্লি গিয়ে বৈঠকে বসলেন কেন শোভন-বৈশাখী? মিডিয়ায় বিপ্লব দেখিয়ে তারপর মুখরক্ষার খোঁজ পড়েছে? সত্যিই মুখরক্ষা নাকি এখন বিজেপি ছাড়লে সিবিআই আরও কেঁচিয়ে দিতে পারে বলে ভয় পাচ্ছেন নারদকান্ডে তোয়ালে মুড়ে টাকা নেওয়া শোভন? আর তাই আরেক নারদ অভিযুক্ত মুকুলের সঙ্গে মধ্যরাতে বৈঠক।

একেই বলে সেয়ানে সেয়ানে কোলাকুলি!

Related articles

ভোটার ও বিরোধীদের রুখতে E² ব্যবহার করে বিজেপি: তোপ অভিষেকের

এই প্রথম নয়, এর আগেও একাধিকবার কমিশনের ভূমিকা যে সম্পূর্ণ পক্ষপাতদুষ্ট সেই অভিযোগ তুলেছেন তৃণমূলের (TMC) সর্বভারতীয় সাধারণ...

কমনওয়েলথ চ্যাম্পিয়নশিপে সোনা জিতলেন মীরাবাই চানু

একছরের বিরতি ভেঙে ফিরেই বিরাট সাফল্য মীরাবাই চানুর(Mirabai Chanu)। কমনওয়েলথ(Commonwealth) চ্যাম্পিয়নশিপে রেকর্ড গড়ে সোনা(Gold Medal) জিতলেন মীরাবাই(Mirabai Chanu)।...

পুজোর অনুদানে স্থগিতাদেশ নয়, হিসেব নিয়ে হলফনামা তলব আদালতের: রাম-বামের দ্বিচারিতাকে নিশানা তৃণমূলের

রাজ্যে দুর্গাপুজোর (Durga Pujo) অনুদানের উপর কোনও স্থগিতাদেশ দিল না হাই কোর্ট। এই বিষয়ে দায়ের হওয়া মামলার শুনানিতে...

ড্রিম ১১-র সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করল বিসিসিআই, স্পনসর নিয়ে সাবধানী নীতি

এশিয়া কাপের আগেই স্পনসরহীন ভারতীয় দল(Indian cricket team)। ড্রিম ১১,(dream 11) সহ ফ্যান্টাসি অ্যাপগুলি বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে...
Exit mobile version