ভারতবর্ষের কোথায় এ দৃশ্য নেই! সর্বত্র। ‘মারদানি’ ছবিটাও মনে পড়ে গেল এক ঝটকায়। সেই যে ছোট্ট মেয়েটা – যানজটে কিংবা সিগন্যালে আটকে থাকা গাড়ির কাছে গিয়ে ফুল বিক্রি করত। একদিন হঠাৎই উধাও হয়ে গেল।
না। এ চিত্রনাট্যে একরত্তি ছেলেটার হারিয়ে যাওয়া নেই। কিন্তু কোথাও যেন সওয়ারি মনটার এক নিমেষে হারিয়ে যাওয়া আছে। শিখর ধাওয়ানও কি হারিয়ে গিয়েছিলেন সেভাবেই ? দূর-দূরান্তে কোথাও কি আটকে পড়েছিলেন নিষ্পাপ ভালোবাসার অমলিন বাঁধনে! তা নাহলে কেনই বা এ ছবি পোস্ট করে ফেললেন কোহলির সতীর্থ! কেনই বা একচিলতে অনুভূতি ঠিকরে বেরলো এভাবে!
রবিবাসরীয় সকাল। কোথায় যাচ্ছিলেন ভারতীয় ওপেনার কে জানে! রাজধানীর রাজপথে হঠাৎই দাঁড়িয়েছিল তাঁর বিলাসবহুল গাড়ি। পিছনের সিট থেকে দেখলেন একরত্তি ছেলেটাকে। বোঝা যাচ্ছে না, বাচ্চাটা গব্বরকে দেখে চিনতে পেরেছে কি না। সে পারুক বা নাই পারুক, ওর সরল-নিষ্পাপ হাসিটা যেন মুহূর্তে দিনের সেরা উপহারটা দিয়ে দিল শিখরকে। পিছিয়ে পড়া শিশুই হবে। অজানা-অচেনা তো বটেই। তাতে আর কী এল গেল! হাসিটাই তো সব। ভিক্ষে করতে এসেছিল বাচ্চাটা ? বিক্রি করতে কিছু ? জানা নেই। জানতে চান না হয়তো শিখরও। অপলকে একে ওপরের দিকে চেয়ে হেসে চলেছে। হাসিটুকুই যে ‘ফোকাসড’ এ ফ্রেমে। ‘ডিফোকাসড’ হোক ধাওয়ানের ‘সেলিব্রিটি’ তকমা।
সোশ্যাল মিডিয়ায় শিখর লিখেই ফেললেন, “ভালোবাসলাম ওর হাসি, চরিত্র। ভালোবাসা ছড়িয়ে পড়ুক এ ভাবেই।”
ঠিকই তো। নচিকেতা চক্রবর্তীর সুর থেকে যখন শুনি, “ভালোবাসা মানে শুধু পিট্যুইটারির খেলা, আমরা বোকারা বলি প্রেম।” তখন এ ছবিও বুঝিয়ে যায়, না। কিছু অমলিন প্রেম থাকে। নিজের মতো করেই বেঁচে থাকে। ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকে এ গলি, ও গলিতে।
জীবন তো ছুটছে। পাওয়া না পাওয়ার দলিল হাতে। কিন্তু এ প্রেম-ই যে আসল ফ্রেম। ধরা থাকুক গাড়ির কাচের এদিক থেকে ওদিকে। আর এক ঝটকায় ক্যামেরার লেন্সটাও বুঝিয়ে দিক এ সমাজকে, ভালোবাসা ভালোবাসি, বেঁচে থাক সব হাসি।
