Tuesday, May 13, 2025

বাঘাযতীনদের মৃত্যু হয় না, তাঁরা অমর

Date:

Share post:

১৯১৫ সালের ৯ই সেপ্টেম্বর। সূর্যাস্তের সাথে বালেশ্বরের বুড়িবালাম নদীর তীরে শেষ হলো এক যুদ্ধ। নেতৃত্ব প্রদানকারী, গুলিবিদ্ধ যতীনকে নিয়ে যাওয়া হলো বালেশ্বর সরকারী হাসপাতালে। রক্তে ভেসে যাচ্ছে সারা শরীর। গুলির আঘাতে উড়ে গেছে হাতের আঙ্গুল,, পেটের একাংশের মাংস। ক্রমাগত রক্তপাত হয়ে চলেছে। তখন স্যালাইনের প্রচলন ছিল না, তার বদলে মুখে ঢেলে দেওয়া হলো লেমনেড। কোনোক্রমে স্টিচ করা হলো পেটের অংশে। ব্রিটিশ পুলিশের কড়া হুকুম,, যেভাবেই হোক্ বাঁচিয়ে রাখতে হবে এই মোস্ট ওয়ান্টেড বিপ্লবীকে, তাঁর কাছেই পাওয়া যাবে দলের বাকি সদস্যদের খবর, ভবিষ্যত পরিকল্পনার কথা। অনেক রাতে, তদানীন্তন পুলিশ কমিশনার টেগার্ট এসে ঢুকলেন ঘরে, সাথে আরো চারজন ব্রিটিশ পুলিশ অফিসার।
নিদ্রামগ্ন বিপ্লবীকে ঘুম থেকে তুলে শুরু হলো জেরা। স্মিতহাস্য যতীনের সব প্রশ্নের এক‌ই উত্তর, “আমরা মরবো, দেশ জাগবে।” টেগার্টের ধৈর্যচ্যুতি ঘটলো। রেগে বেরিয়ে গেলেন ঘর থেকে। তখন ভোর হয়ে আসছে। ডাক্তার এসে দেখলেন, পেটের স্টিচ ছেঁড়া, রক্তবমি শুরু হয়েছে যতীনের। হাসতে হাসতে বললেন, “এত রক্ত ছিল শরীরে? ভাগ্যক্রমে, প্রতিটি বিন্দু অর্পণ করে গেলাম দেশমাতার চরণে।”

১৯১৫ সালের ১০ই সেপ্টেম্বর সকাল। অস্তমিত হলো ব্রিটিশ সরকারের ত্রাস বীর বিপ্লবী যতীন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায় তথা বাঘা যতীনের জীবন সূর্য।

তাঁর বীরত্বে মুগ্ধ হয়ে কুখ্যাত ইংরেজ পুলিশ অফিসার চার্লস টেগার্ট বলেছিলেন, “যতীন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায় ইংরেজ হলে, ট্রাফালগার স্কোয়ারে নেলসনের পাশে তাঁর মূর্তি স্থাপন করা হতো।”

ভারতমাতার এই মহান সন্তানের ১০৪তম মৃত্যু বার্ষিকীতে জানাই সশ্রদ্ধ প্রণাম। তবে তাঁদের মৃত্যু হয় কি? তাঁরা তো অমর।🙏🙏

ছবি: বালেশ্বর সরকারী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন
যতীন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়ের শেষ ছবি।

spot_img

Related articles

স্বাভাবিকের পথে উপত্যকা, তবু কাটছে না আতঙ্ক!

পহেলগাম হামলা থেকে অপারেশন সিন্দুর (Operation Sindoor), কখনও সীমান্তে গোলাগুলি আবার কখনও আকাশপথে ড্রোন কিংবা মিসাইল হামলায় ত্রস্ত...

আজই বর্ষার আগমন! তাপপ্রবাহের মাঝে বড় আপডেট দিল মৌসম ভবন 

গরমে হাঁসফাঁস রাজ্যবাসীকে খানিকটা স্বস্তি দিয়ে দফায় দফায় ঝড় বৃষ্টি হয়েছে গোটা বৈশাখ জুড়ে। বাংলা নববর্ষের প্রথম মাসের...

প্রধানমন্ত্রীর ভাষণের পরেই রাতে জম্মুতে হামলার চেষ্টা পাকিস্তানের! ব্ল্যাকআউট এলাকা

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির (Narendra Modi) জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণ দেওয়ার কিছু সময় পরই সোমবার রাতে জম্মুর সাম্বা সেক্টরে...

পর্যটক টানতে উদ্যোগ! এবার দার্জিলিঙের রাস্তায় ছুটবে ‘অমিতাভ-ধর্মেন্দ্রর’ মোটরবাইক

“ইয়ে দোস্তি হাম নেহি তোড়েঙ্গে...” — এই গানে ভেসে আসা বন্ধুত্বের আবেগ এবার ছুঁয়ে যাবে বাংলার প্রিয় পাহাড়ি...