রাজীব কুমার কোথায়?

কোথায় আছেন রাজীব কুমার? সেটাই এখন লাখ টাকার প্রশ্ন। কাল, মঙ্গলবার, বারাসত কোর্টে করা তাঁর আগাম জামিনের শুনানি। কালকেই রায়দান, অথবা পরশু। এই ৪৮ ঘন্টা যেন দুই যুগ রাজীবের কাছে। জীবনে এমন পরিস্থিতির মধ্যে তাঁকে যে কোনওদিন পড়তে হবে, তা ঘুণাক্ষরেও ভাবেননি। অতীতে তিনি হুলিয়া জারি করতেন, অভিযুক্তরা কেউ ধরা দিতেন, কেউ এড়াতেন। নিজে ঠিক সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে দ্বিতীয় পক্ষের মতো আচরণ করছেন। তাঁর মতো অভিজ্ঞ, পদস্থ, শিক্ষিত, বুদ্ধিমান, পুলিশি আইন ঠোঁটস্থ করে আসা আধিকারিক এমন আচরণ যে করতে পারেন, তা তাঁর ঘনিষ্ঠ কিছু সহকর্মী ভাবতেই পারছেন না। রাজীব তাঁর পার্ক স্ট্রিটের বাসভবনে নেই। অফিসে ছুটি নিয়েছেন। তাহলে রয়েছেন কোথায়? কোন আইনজ্ঞের পরামর্শে তিনি অফিসে ছুটিতে রয়েছেন, তাই দেখা করতে পারবেন না বলে মেইল পাঠাচ্ছেন? আজ তিনিই যদি তদন্তকারী হতেন, তাহলে একদিনের জন্য কাউকে রেয়াত করতেন? এমন উদাহরণও তো আছে, সংসদের অধিবেশন চলছে, অথচ তিনি সাংসদকে “আসতে হবেই” বলে ডেকে পাঠিয়েছেন। এমন এক সাংসদ, যাঁকে তদন্তকারী দল যখন ডেকেছে, তখন তিনি গিয়েছেন। তাহলে? আজ তিনি কী করছেন?

এডিজি (সিআইডি) পদটা রাজ্য পুলিশের শীর্ষ পদগুলির একটি। ফলে তিনি তো তদন্তকারীদের সাহায্য করবেন, এটাই স্বাভাবিক। আর তিনি কিনা সিবিআইয়ের নোটিশের পরেও নিরুদ্দেশ! আসলে টেবিলের এপার আর ওপারটায় যে বিস্তর ফারাক, সেটা বোধহয় অনেকে বোঝেননি। এতদিনে বুঝলেন রাজীব। তাই কলকাতাতেই ঘনিষ্ঠজনের বাড়িতে গা ঢাকা দিয়ে থাকার সময় রাজীব কুমার বুঝতে পারছেন, সিবিআই চরম পথই নিতে চলেছে। শেষ মুহূর্তে যদি প্রভাবশালীমহল মারফৎ কিছু ওলট-পালট না হয়, কিংবা কোর্ট অভাবনীয়ভাবে তাঁকে কিছুটা নিঃশ্বাস নেওয়ার সুযোগ করে না দেয় তবে এ সপ্তাহতেই হয়তো রাজীব কুমার জীবনে চরম ক্লাইমেক্সের মুখোমুখি হতে চলেছেন।