Saturday, August 23, 2025

ঐতিহ্য, সাবেকিয়ানা, নিষ্ঠা আর সৌভ্রাতৃত্বের মিশেল 300 বছরের প্রাচীন চৌধুরী বাড়ির পুজো

Date:

হুগলি চণ্ডীতলা বাকসা এলাকার এমন এক পারিবারিক পুজোর কথা আপনাদের জানাব যার সঙ্গে মিশে আছে ঐতিহ্য, সাবেকিয়ানা, নিষ্ঠা আর সৌভ্রাতৃত্বের মিশেল । 300 বছরের প্রাচীন এই পুজোর প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন রূপনারায়ণ চৌধুরী। তিনি ছিলেন বর্ধমান মহারাজের দেওয়ান। জনশ্রুতি তাঁকে মহারাজ কয়েক বিঘা জমি দান করেছিলেন। তারপরই তিনি স্বপ্নাদেশ পান মায়ের পুজো করার। সেই থেকে আজও হয়ে আসছে এই পুজো।

মায়ের স্বপ্নাদেশে পেলেও, কীভাবে পুজো করতে হবে তা জানা ছিল না রূপনারায়ণের। তাই পায়ে হেঁটে আবার কখনও গরুর গাড়িতে চড়ে তিনি রওনা দিয়েছিলেন কাশির উদ্দেশ্যে। জানতে চেয়েছিলেন মায়ের কীভাবে পুজো করবেন। কথিত আছে কাশি যাওয়ার পথে দেবী দুর্গা থাকে স্বপ্নাদেশ দেন এবং তাকে বাড়ি ফিরে যেতে বলেন। মায়ের স্বপ্নাদেশ মতো এখানে কিন্তু মা দশভূজা নন, চতুর্ভূজা। এমনকি সিংহের রং সাদা ও একই চালচিত্রে থাকে বাড়ির কুলদেবতা ও রাধাগোবিন্দের মূর্তি। সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে জৌলুস কিছুটা কমলেও এখনও কিন্তু তার বংশধররা ধুমধাম করে মায়ের পুজো, যজ্ঞ, দুঃস্থদের বস্ত্র বিতরণ, চাল বিতরন সহ বিভিন্ন অনুষ্ঠান পালন করে থাকেন। পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন, জন্মাষ্টমীর পর থেকেই বাড়ির দালানে শুরু হয়ে যায় প্রতিমা তৈরি। পুজোর ক’দিন দূর-দূরান্ত থেকে সব আত্মীয়স্বজন এসে উপস্থিত হন এই বাড়িতে। সবার মহামিলন ক্ষেত্র হয়ে ওঠে 300 বছরের প্রাচীন এই পুজো ।ষষ্ঠী থেকে নবমী বাড়ির সবাই মিলে মায়ের আরাধনার পাশাপাশি একসঙ্গে খাওয়ার অনুষ্ঠানে মেতে থাকেন। এখনও হয় বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান , যেখানে ঐতিহ্য ও সাবেকিয়ানা অগ্রগণ্য। উলুধ্বনি, ঢাকের শব্দে, পুরোহিত মন্ত্রোচ্চারণে যখন চতুর্দিক উদ্ভাসিত হয় তখন নিয়ম মেনে দশমীর দিনে মাকে বিসর্জন দিয়ে চোখের জল মোছেন চৌধুরী পরিবারের সদস্যরা। অবশ্য তার আগে বাড়ির সকলে মেতে ওঠেন সিঁদুর খেলায়। মায়ের বিসর্জনের আগে এক অনাবিল আনন্দে ভেসে যান বাড়ির সদস্য থেকে শুরু করে স্থানীয় বাসিন্দারা। সব মিলিয়ে 300 বছরের এই প্রাচীন এই পারিবারিক পুজো আজও দর্শনার্থীদের কাছে অন্যতম আকর্ষণ।

আরও পড়ুন-ম্যাট্রিমনিয়াল সাইটে ভুয়ো পরিচয় দিয়ে প্রতারণার অভিযোগে গ্রেফতার যুবক

 

Related articles

বাংলা দখলে প্রধানমন্ত্রীর ‘হতাশার আর্তনাদ’! ভিডিও দেখিয়ে তোপ তৃণমূলের

বাংলার মানুষকে দিনের পর দিন বঞ্চিত রেখে বাঙালির কাছেই ভোট ভিক্ষা! বাঙালিকে একের পর এক রাজ্যে হেনস্থা করে...

সঠিক পরিকল্পনাই ডায়মন্ডহারবারের সাফল্যের চাবিকাঠি, মনে করছেন আকাশ বন্দ্যোপাধ্যায়

মাত্র তিন বছরের ক্লাব। কিন্তু কী অসাধারণ সাফল্য। কলকাতা লিগ, আইলিগ থ্রি থেকে আইলিগ টু জিতে এবার আইলিগের...

অসংগঠিত শ্রমিক-ক্ষেত্রে পথ দেখাচ্ছে বাংলা: সাহায্য পেলেন ৭২০ শ্রমিক

একের পর এক নতুন প্রকল্প, অসংগঠিত শ্রমিকদের দাবিদাওয়া নিয়ে লাগাতার আলোচনা, তাঁদের পরিবারের প্রতি নজর রাখার ব্যাপারে তৎপর...

প্রাপ্য চায় বাংলা, উপহার না: মোদিকে জবাব তৃণমূলের

বাংলার মানুষ উপহার চায় না, প্রাপ্য চায়। উপহার দিয়ে বাংলার মানুষকে অপমান করবেন না। বাংলায় বরাদ্দ নিয়ে শুক্রবার...
Exit mobile version