Monday, November 10, 2025

গুমনামি দেখার পর কলম ধরে কী জানালেন অনিকেত চট্টোপাধ্যায়?

Date:

Share post:

প্রসঙ্গ ‘গুমনামি’।

প্রসেনজিৎ অসাধারণ। তিনটে লুক আছে এই ছবিতে। নেতাজী মারা যাওয়া পর্যন্ত, সাইবেরিয়ায় (সম্ভবত) নেতাজী আর গুমনামি বাবা ওরফে ভগবানজী। তিনটেতেই ফাটাফাটি। অভিনয় নিয়ে কোনও কথা হবে না। তিনটে চরিত্রকে বুঝে আত্মস্থ করে ক্যামেরার সামনে বুম্বা দা ভাল নয়, বেশ ভাল নয়, খুব ভালো।

অনির্বাণ বেশ ভালো। সাংবাদিকতার মূল সূত্র subjective detachment থেকে সরে গিয়ে এক obsessive গবেষক (?) চরিত্রে যথাযথ। চরিত্র কে রূঢ় করে তোলার জন্য, ঔদ্ধত্য কে তুলে ধরার জন্য যথেষ্ট ডায়ালগ ছিল, অনির্বাণ সেগুলো কাজে লাগিয়েছে।

তনুশ্রীর যথাযথ। তার বেশিও না কমও না।

পরিচালকের কাবিলিয়ত সব্বার জানা। অতএব তিনি যা বলার চেষ্টা করেছেন, যে পদ্ধতিতে করেছেন তা সহজ সরল। কোনও জটিলতায় যান নি। time, space নিয়ে কোনও ভ্যানতারামো নয়। সোজাসুজি গল্প বলা।

আরও পড়ুন – বেনজির! মুখ্যমন্ত্রী আসবেন না,অভিমানে ট্যাংরার শতবর্ষের পুজোর উদ্বোধন বাতিল

এবং বিষয়। মিথ্যে, আরও মিথ্যে, প্রবল মিথ্যে। ছবির প্রমোশনে যাই বলে থাকুন ছবিতে সপাট বলেদিয়েছেন ওসব তিনটে সম্ভাবনা ফম্বাবনা ফালতু ব্যাপার এই দেখ ভাই আমি কনোনড্রামের আষাঢ়ে গল্প নিয়ে ছবি করছি। নেতাজীই গুমনামি বাবা।

রশোমন ? ভুলে যান। নেতাজী নিয়ে যে তত্ত্ব, বা গুজব ছড়াচ্ছে তার ছাল ছাড়িয়ে, প্রতিটা তত্ত্ব কে, তার অনুষঙ্গগুলোকে বিচার করে কোনও conclusion এ না এসে একটা ছবি করাই যেত, যে ছবি সৃজিত করতেই পারতেন। না করে এক ‘আহারে বেচারা নেতাজী প্রেমিকের ‘আখ্যান শোনালেন। যা হতেই পারতো ভারতবর্ষের অন্যতম রাজনৈতিক নেতার অন্তর্ধান নিয়ে এক এপিক সিনেমা, সেটা হয়ে দাঁড়ালো অত্যন্ত জোলো রকবাজি বা চন্ডিমন্ডপের গালগল্প।

এমনকি নেতাজীর কংগ্রেস থেকে পদত্যাগের বিষয়টাও মিথ্যেয় ভরা থাকলো। এত কম গবেষণা, এত কম প্রশ্ন ছাড়া গুজব নিয়ে সিনেমা খুব কম হয়েছে, আমি তো দেখি নি।

আরও পড়ুন – ফের দিল্লিতে বড়সড় জঙ্গি হামলার ছক!

মুখার্জি কমিশন সংসদে পেশ করা হয়েছিল, তা নিয়ে ডিবেট হয়েছিল, ২৬ পাতার action taken report আছে সে সব উবে গিয়ে ‘উনি বলিলেন’ আর ‘ইনি বলিলেন’ দিয়ে তো ইতিহাস হয় না।

তবে হ্যাঁ, ইতিহাস ভুলিয়ে দেবার, বিকৃত করার এক অধ্যায় চলছে। তার অঙ্গ হিসেবেই গুমনামি এসেছে বাজারে। হেইল হিটলার বলে হাত তুলেছিল কেবল লক্ষ লক্ষ সাধারণ জার্মানবাসীই নয়, হাত তুলেছিলেন তৎকালীন শিল্প সংস্কৃতির নামি দামি মুখেরাও। সমস্ত ইতিহাসকে অন্য সূত্রে লেখার চেষ্টাও হয়েছিল, সফল হয়নি। কারণ আবার সেই একই কে কী বলিল দিয়ে ইতিহাস হয় না, ইতিহাস একটা সময়ে মিথ্যের যাবতীয় জাল ছিঁড়ে বেরিয়ে আসবেই।

ততদিন চলুক গুজব, গাল গল্প, হ্যাঁ ইতিহাসের নামেই চলুক।

সে যাই হোক, বাংলা সিনেমা দেখুন। হলে গিয়েই দেখুন।

আরও পড়ুন – পঞ্চমীর সন্ধ্যাতেই খুলছে উল্টোডাঙা ব্রিজের বন্ধ অংশ

spot_img

Related articles

ধর্মীয় বই কিনতে গিয়ে ২ কোটি টাকার প্রতারণার ফাঁদে কলকাতা ইসকন! গ্রেফতার ১ 

ধর্মীয় বই কেনার অর্ডার দিতে গিয়ে প্রায় ২ কোটি টাকার প্রতারণার শিকার হল কলকাতা ইসকন। অভিযোগ, অর্ডার অনুযায়ী...

বিশ্বকাপজয়ী মেয়ের সৌজন্যে হারানো পুলিশের চাকরি ফিরে পাচ্ছেন বাবা

কয়েকদিন আগেই আইসিসি একদিনের বিশ্বকাপ(ICC World Cup)  জিতেছে ভারতীয়  মহিলা দল। মেয়েদের সাফল্যে গর্বিত মা-বাবারা। তবে বিশ্বকাপজয়ী মেয়ের...

গ্যাস-সমস্যায় নিঃশ্বাসের পরীক্ষা: যুগান্তকারী আবিষ্কারে বিশ্বে স্বীকৃতি বাঁকুড়ার চিকিৎসকের

একটি সাধারণ সমস্যা, যাতে জর্জরিত বর্তমান যুবসমাজ থেকে শিশুরা পর্যন্ত। গ্যাস বা গ্যাসট্রাইটিসের মতো সমস্যা নির্ধারণ করার জন্য...

একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষক নিয়োগে বাড়তে পারে আসন সংখ্যা, জানালো এসএসসি 

রাজ্যের একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষক নিয়োগের ফলাফল ইতিমধ্যেই প্রকাশ করেছে স্কুল সার্ভিস কমিশন (এসএসসি)। প্রকাশিত ফল অনুযায়ী,...