মেলবোর্নে দুদিনের শারদোৎসবে ভরপুর বাঙালিয়ানা

সৌম্য বন্দ্যোপাধ্যায়

মেলবোর্ন। কলকাতা থেকে অনেক অনেক মাইল দূরে। সময়ের ব্যবধান প্রায় সাড়ে পাঁচ ঘণ্টা। কর্মসূত্রে সপরিবারে দেশ ছেড়ে এখন বসবাস এর কাছাকাছি। ছেলেবেলার মফস্বল শহর, তারপর কলকাতার দুর্গাপুজো কাটিয়ে দিল্লি, নয়ডার দুর্গোৎসব। চিরচেনা এই জগত ছেড়ে প্রায় বছর খানেক আগে এখানে এসে আমার আর আমার স্ত্রী শর্মিষ্ঠা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মনে হয়েছিল আর যাই হোক দুর্গাপুজোটা মিস হবে। কিন্তু কথায় বলে পাঁচটা বাঙালি একসঙ্গে থাকলে একটা দুর্গাপুজো হয়। আর এখানে তো বাঙালির সংখ্যা যথেষ্ট। আছেন বহু ভারতীয়। তাই দুর্গাপুজো মিস করি না আমরা। হ্যাঁ, তিথি মেনে হয়তো পাঁচদিন পুজো হয় না। কিন্তু উইকএন্ডে দুদিনের পুজো চেটেপুটে উপভোগ করেন আট থেকে আশি। যাদের এদেশে জন্ম বা অনেক ছোটবেলায় চলে এসেছে, তারাও কিন্তু পুজোর দিন দিব্যি ভারতীয় পোশাক সামলে বসে খিচুড়ি ভোগ খায়। আর আমাদের মতো যাদের মনের মধ্যে বাংলার শরতের আঘ্রাণ, আমরাও দারুণ উপভোগ করি এই পুজো।

চারটে দুর্গোৎসব হয় মেলবর্নে। মেলবর্ন বেঙ্গল অ্যাসোসিয়েশন ছোট করে বলা হয় মেলবা তারা 10 বছর আগে এই পুজোর সূচনা করে। স্থানীয় কলেজে এই পুজো হয়। জায়গাটা ভিক্টোরিয়ায়। সারা মেলবোর্ন থেকে প্রায় দু’শো বাঙালি অংশগ্রহণ করেন। লাল পাড় সাদা শাড়িতে সেজে যখন বঙ্গ তনয়ারা একে-অপরকে সিঁদুরে রাঙিয়ে দেন তখন মনে হয় না যে দেশ ছেড়ে এত দূরে রয়েছি। এখানে পড়াশোনার সূত্রে আমার মেয়ে সৃষ্টি সব রকম উৎসব পালন করে। তবে দুর্গাপুজোটা তার কাছেও স্পেশাল। এই সময় সে ট্রেডিশনাল সাজেই সাজতে চায়।

বাংলার দুর্গাপুজোয় যেরকম অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িয়ে আছে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, সেই মেজাজ কিন্তু মেলবোর্নেও রয়েছে। এখানেও পুজোয় বিভিন্ন অনুষ্ঠান হয়।
মাত্র দুদিনের পুজো কিন্তু তাও আনন্দে আন্তরিকতায় এই এক টুকরো বাংলা আমাদের বিদেশে থাকার সারা বছরের রসদ হয়ে থাকে।

Previous articleদু’মাস পর ফারুখের কাছে স্ত্রী দলের নেতারা
Next articleপ্রধানমন্ত্রীর জন্য আসছে মিসাইল প্রতিরোধকারী বিমান, দাম জানেন?