ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি প্রতিষ্ঠার শতবর্ষ: কাল নেতাজি ইন্ডোরে উদযাপন করবে সিপিএম

1920 থেকে 2020। কোনও রাজনৈতিক দলের শতবর্ষ-পূর্তি নিঃসন্দেহে গৌরবের, সাফল্য-ব্যর্থতা যাই থাকুক না কেন। ভারতে কমিউনিস্ট পার্টির পথচলা 100 বছর ছুঁতে চলেছে এমন এক সময়ে, যখন দেশের একটিমাত্র রাজ্য কেরালাতেই শুধু শাসনক্ষমতা তাদের নিয়ন্ত্রণে। বাকি সব রাজ্যেই বামেরা দ্রুত ক্ষয়িষ্ণু শক্তি। বিশেষত, পশ্চিমবঙ্গ ও ত্রিপুরায় দলের সাংগঠনিক পরিস্থিতি যেকোনও বাম-সমর্থকের কাছেই গভীর উদ্বেগের। তবে যেহেতু নির্বাচনী জয়-পরাজয় বা ভোটশতাংশের হিসাবই সবসময় রাজনৈতিক দলের যাত্রাপথ নিয়ন্ত্রণ করে না, তাই এদেশে বামপন্থী রাজনীতি আজও প্রাসঙ্গিক। মূল ধারার রাজনীতিতে পিছিয়ে পড়লেও শ্রমিক বা কৃষক আন্দোলন বা কর্মচারী সংগঠনগুলির দাবিদাওয়া আদায়ের লড়াইয়ে বাম দলগুলির মিলিত শক্তি আজও গোটা দেশে ঈর্ষণীয়। এমনকী, এরাজ্যে ভোটের ময়দানে ক্রমশ পিছিয়ে পড়া বামেদের ব্রিগেড-সভা বা ইস্যুভিত্তিক মিছিলে আজও যে পরিমাণ ভিড় হয় তাও উপেক্ষার নয়। যদিও এই সমর্থনের শক্তিকে ভোটবাক্সে প্রতিফলিত করার ব্যাপারে বাম নেতাদের ব্যর্থতাও সমানভাবে উল্লেখ্য।

সাফল্য-ব্যর্থতার দীর্ঘ চড়াই-উৎরাই ডিঙিয়েই আজ এদেশের বামপন্থীরা ভারতে পার্টি প্রতিষ্ঠার শতবর্ষ পালন করতে চলেছেন। শতবর্ষে প্রবেশের পর এদেশের কমিউনিস্টরা প্রাচীনত্বের নিরিখে ভারতের আরেক শতাব্দীপ্রাচীন দল কংগ্রেসের গৌরবের কাছাকাছি এলেন বলা চলে। এই সাদৃশ্য ছাড়াও কাকতালীয়ভাবে এদেশের কমিউনিস্ট পার্টির সঙ্গে তাদের একদা ‘শ্রেণীশত্রু’ ভারতের জাতীয় কংগ্রেসের সাংগঠনিক পরিস্থিতিরও এখন একই হাল। দুই দলই কার্যত অস্তিত্বের সংকটের মুখে। বর্তমান শাসক দলের বিরুদ্ধে লড়াই করতে এবং শক্তিশালী বিরোধী দল হওয়ার দৌড়ে এগিয়ে থাকতে আজ কমিউনিস্টরা ঐক্যবদ্ধ হচ্ছেন কংগ্রেসের সঙ্গে, এও শতবর্ষের যাত্রাপথের এক চমকপ্রদ ছবি।

ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি শতবর্ষে পা দিলেও ঐতিহাসিক যাত্রাপথে একাধিকবার দলের ভাঙন হয়েছে। এবং বিভক্ত সবকটি দলই শতবর্ষের গৌরবের ভাগিদার ও দাবিদার। 1964 সালের পর থেকে সিপিএমের নেতৃত্বেই কমিউনিস্ট আন্দোলনের মূল ধারা পরিচালিত হয়েছে। এই শক্তি কেন্দ্রীভূত করার ক্ষেত্রে পশ্চিমবঙ্গ সিপিএমের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল। অতীতের গৌরব ও শক্তি এবং বর্তমানের কর্তব্য ও সংকট নিয়ে আলোচনার মাধ্যমে পশ্চিমবঙ্গ সিপিএম শতবর্ষের প্রতিষ্ঠা দিবস উদযাপন অনুষ্ঠান করতে চলেছে। আগামীকাল, 17 অক্টোবর কলকাতার নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে বেলা একটায় এই উপলক্ষে মূল কর্মসূচি। সভাপতিত্ব করবেন বিমান বসু। বক্তা তালিকায় সীতারাম ইয়েচুরি, সূর্যকান্ত মিশ্র, মহম্মদ সেলিম। প্রবেশ অবাধ।

আরও পড়ুন-আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা, জাতীয় পতাকা এবার শুধু তৈরি করবে খাদি

 

Previous articleচিদম্বরমকে তিহাড় জেল থেকে গ্রেফতার করলো ED
Next articleউপত্যকায় গুলির লড়াইয়ে নিকেশ হিজবুল কমান্ডার নাসির চদ্রু-সহ ৩ জঙ্গি