ধ্বংসস্তূপের মাঝেই মাতৃ আরাধনা, জৌলুসহীনতা থাকলেও আবেগে ঘাটতি নেই বউবাজার সোনাপট্টির

চাল নেই, চুলো নেই। পায়ের তলায় মাটি নেই, মাথার উপর ছাদ নেই। “নেই রাজ্যের” বাসিন্দা হলেও ওদের আবেগে নেই ঘাটতি। ঘাটতি নেই শ্যামা মায়ের আরাধনায়। বউবাজারের দুর্গা পিথুরী লেনের মধ্য কলকাতা সার্বজনীন শ্রী শ্রী কালীপুজো কমিটি প্রবল প্রতিকূলতা মাথায় নিয়েও ধ্বংসস্তূপের মাঝেই মাতৃ আরাধনায় মেতেছে।

এবার তাদের ৭৫ তম বর্ষ, অর্থাৎ প্লাটিনাম জুবিলি। কিন্তু পুজো হচ্ছে একেবারে জৌলুসহীন ভাবে। কারণটা অবশ্যই অর্থাভাব। সেখানকার বাসিন্দাদের এখন নিজেদের ঘর বলে নেই। গৃহহীন অসহায় অবস্থায় কোনও পরিবার হোটেলে, কোনও পরিবার লজে, কোনও পরিবার গেস্ট হাউসে, আবার কোনও পরিবার আত্মীয় পরিজন বা কাছের বন্ধু-বান্ধবদের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন। নিজেদের আনন্দটা নয় বাদই দিলেন, কিন্তু বাড়ির বাচ্চাদের মুখেও দুর্গাপুজোর মতোই কালিপুজোতে হাসি ফোটাতে পারলেন না তারা। গোটা শহর যখন আলোর উৎসবে মেতে উঠেছে, তখন বউবাজারে এই এলাকাটি টিমটিমে বাল্বের আলোয় শ্যামা মায়ের পুজো করছে।

আরও পড়ুন – প্রার্থী চোর-ডাকাত হলেও বিজেপিকেই ভোট দিন, বললেন ঝাড়খণ্ড সাংসদ

মাস কয়েক আগে বউবাজারে ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর কাজের জন্য যে বিপর্যয় নেমে ছিল, তার শিকার এখানকার বাসিন্দারা। কার্যত ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে এই সোনাপট্টি চত্বর। যেখানে চাপা পড়ে রয়েছে তাদের সারা জীবনের সব সম্বল।

গত ৭৪ বছর ধরে ৮০টি পরিবার মিলে অনেক উৎসাহ উদ্দীপনা ও জৌলুসের মধ্য দিয়ে এই পুজো করে এসেছে। এবার প্লাটিনাম জুবিলি উপলক্ষে অনেক পরিকল্পনায় ছিল, কিন্তু তা বাস্তবায়িত করা গেল না। জানালেন পুজো কমিটির কর্মকর্তারা।

এক কর্মকর্তার কথায়, পুজোটাই হয়তো বন্ধ হয়ে যেত। কিন্তু মেট্রো রেল কর্তৃপক্ষ শেষ মুহূর্তে দয়া করে অনুমতি দেওয়ায় কোনরকমে পুজোটা করতে পারছি। আলো জ্বলবে, প্রদীপ জ্বলবে না, শুধু রীতি মেনে মায়ের পুজোটুকুই হবে। এটা তাদের অধিকার। এতেই তারা সন্তুষ্ট, এতেই তারা খুশি। জৌলুসহীনতা থাকলেও তাই আবেগে কোনও খামতি নেই বউবাজারের ক্ষতিগ্রস্তদের।

আরও পড়ুন – মুহূর্তের মধ্যেই ধসে গেল ফুটপাতের একটি অংশ, দেখুন সেই রোমহর্ষক ভিডিও

Previous articleবাবা-ছেলের যুগলবন্দি
Next articleসম্পত্তি নিয়ে বচসা, মায়ের হাত কেটে ফেলল ছেলে!