Monday, November 10, 2025

পাঁচ শ্রমিকের মৃত্যুর পরেও আশ্চর্য-নীরব শহর, রাজ্য

Date:

Share post:

কাশ্মীরে জঙ্গিদের গুলিতে 5 নিরীহ বাঙালি শ্রমিকের মৃত্যুর পরও এভাবে নীরব কেন কলকাতা, বাংলা ?

অথচ যে কোনও ইস্যুতে পথে নামাই এ রাজ্যের অস্থি-মজ্জায় মিশে আছে। তবুও নীরব রাজনৈতিক দলগুলি, নীরব তথাকথিত বুদ্ধিজীবীরা, নীরব নাগরিক সমাজ।

তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় এ প্রসঙ্গে বলেছেন, “প্রতিবাদ তো একমাত্র আমরাই করি। রাস্তায় নেমে প্রতিবাদের ব্যাপারে দলে কথা বলবো।” কংগ্রেস সাংসদ প্রদীপ ভট্টাচার্যের কথা, “ঘটনার আকস্মিকতার কারণেই সম্ভবত সকলে কিংকর্তব্যবিমূঢ়। তবে রাজনৈতিক দলগুলির অবশ্যই পথে নামা দরকার”। সিপিএমের পরিষদীয় দলনেতা সুজন চক্রবর্তী বলেছেন, “প্রতিবাদ হলে সত্যিই ভালো হত। তবে কী করে হবে! রাজ্যটার সংস্কৃতিই তো বদলে যাচ্ছে”।

ওদিকে, কেন্দ্রীয় সরকার যখন 370 বিলোপ করেছিলো, তার সমর্থনে গেরুয়া শিবির একের পর এক সভা-মিছিল করলেও পাঁচ শ্রমিকের মৃত্যু-প্রসঙ্গে বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেছেন, “দুঃখজনক ঘটনা। কিন্তু মিছিল করলেই শুধু প্রতিবাদ হয় না। আমরা তো ঘটনার নিন্দা করছিই।”

বিজেপির প্রতিনিধিদল নিহতদের বাড়ি যাওয়ার সেই সম্ভাবনাও খারিজ করে তিনি বলেছেন, “আমাদের দলের কর্মীরা প্রতিদিন খুন হচ্ছেন। লম্বা তালিকা। আগে তাঁদের বাড়ি যাই।

আরও পড়ুন – রাজ্যের গণপিটুনি বিল আটকে ফের সঙ্ঘাতে রাজ্যপাল

প্রতিবাদযোগ্য সব বিষয়ে ‘প্রতিবাদ’ করতে যারা সব সময় তৈরি, তাঁদের মধ্যেই আছেন সাহিত্যিক শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়, শিক্ষাবিদ মিরাতুন নাহার, নাট্যপরিচালক বিভাস চক্রবর্তী, চিত্রপরিচালক অপর্ণা সেন, সমাজকর্মী বোলান গঙ্গোপাধ্যায়। কী বলেছেন তাঁরা?

সাহিত্যিক শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায় এই ইস্যুতে পথে নেমে প্রতিবাদে আগ্রহীই নন। তাঁর বক্তব্য, “প্রতিবাদ তো হচ্ছে। এই ঘটনাকে পাঁচ বাঙালির মৃত্যু না বলে পাঁচ ভারতীয়ের হত্যা হিসেবে দেখা উচিত”। শিক্ষাবিদ মিরাতুন নাহার বয়সের জন্য পথে নামতে না পারার কথা জানিয়ে বলেছেন, “প্রতিবাদ না-দেখতে পেয়ে আমি অবাক হচ্ছি”। নাট্যপরিচালক বিভাস চক্রবর্তীও শারীরিক কারণে পথে নামতে পারেন না। বলেছেন, “প্রতিবাদ হওয়া অবশ্যই দরকার ছিল। কিন্তু আশ্চর্যজনক ভাবে হল না। হয়তো, সবাই খুব নিরাপদ প্রতিবাদী হতে চাইছেন।”

চিত্রপরিচালক অপর্ণা সেন অকপটে বলেছেন, “সংগঠিত প্রতিবাদের জন্য সময় লাগে।’ সমাজকর্মী বোলান গঙ্গোপাধ্যায়ও বিস্মিত। তবে তিনি বলেন, ‘জানি না কেন প্রতিবাদ হল না। হয়তো যাঁরা মারা গিয়েছেন, তাঁরা গরিব বলেই কেউ পথে নামেনি”।

যে যার অবস্থানে থেকে অভিমত জানিয়েছেন ঠিকই, তবে বাস্তব এটাই, পাঁচ শ্রমিকের মর্মান্তিক মৃত্যুর পরেও বিস্ময়কর ভাবেই নীরব কলকাতা, রাজ্য।

আরও পড়ুন – বাঙালি নয় শ্রমিক! বিজেপিকে এক হাত নিলেন ফিরহাদ

spot_img

Related articles

ধর্মীয় বই কিনতে গিয়ে ২ কোটি টাকার প্রতারণার ফাঁদে কলকাতা ইসকন! গ্রেফতার ১ 

ধর্মীয় বই কেনার অর্ডার দিতে গিয়ে প্রায় ২ কোটি টাকার প্রতারণার শিকার হল কলকাতা ইসকন। অভিযোগ, অর্ডার অনুযায়ী...

বিশ্বকাপজয়ী মেয়ের সৌজন্যে হারানো পুলিশের চাকরি ফিরে পাচ্ছেন বাবা

কয়েকদিন আগেই আইসিসি একদিনের বিশ্বকাপ(ICC World Cup)  জিতেছে ভারতীয়  মহিলা দল। মেয়েদের সাফল্যে গর্বিত মা-বাবারা। তবে বিশ্বকাপজয়ী মেয়ের...

গ্যাস-সমস্যায় নিঃশ্বাসের পরীক্ষা: যুগান্তকারী আবিষ্কারে বিশ্বে স্বীকৃতি বাঁকুড়ার চিকিৎসকের

একটি সাধারণ সমস্যা, যাতে জর্জরিত বর্তমান যুবসমাজ থেকে শিশুরা পর্যন্ত। গ্যাস বা গ্যাসট্রাইটিসের মতো সমস্যা নির্ধারণ করার জন্য...

একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষক নিয়োগে বাড়তে পারে আসন সংখ্যা, জানালো এসএসসি 

রাজ্যের একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষক নিয়োগের ফলাফল ইতিমধ্যেই প্রকাশ করেছে স্কুল সার্ভিস কমিশন (এসএসসি)। প্রকাশিত ফল অনুযায়ী,...