একবার দল বদল করে ফের পুরনো দলে ফেরার নাটক অব্যাহত। যে দলে থাকলে সুযোগ-সুবিধা বেশি পাওয়ার সম্ভাবনা বা প্রভাব-প্রতিপত্তি বাড়িয়ে নেওয়ার সুযোগ, সেই দল দেখে দলবদল। আবার কোনও কারণে না পোষালে কোনও অজুহাত দিয়ে প্রত্যাবর্তন! রাজ্যজুড়ে ইদানিং এমন বিচিত্র প্রবণতার মাঝে কলকাতার প্রাক্তন মেয়র-মন্ত্রী ও নারদ ঘুষকান্ডের অন্যতম অভিযুক্ত শোভন চট্টোপাধ্যায়ের তৃণমূলে পুনর্বাসনের সম্ভাবনা জোরালো হল। লোকসভা ভোটে রাজ্যে বিজেপি ভাল ফল করার পর দীর্ঘদিন নিষ্ক্রিয় থাকা শোভন তাঁর বান্ধবীকে নিয়ে ভেড়েন গেরুয়া শিবিরে। গত 14 অগাস্ট স্বেচ্ছায় দিল্লি গিয়ে যোগ দেন বিজেপিতে। এরপর সংবাদমাধ্যমে বলেন, মমতার সরকারকে সরাতে যা যা দরকার করব। কিন্তু কিছুদিন যেতে না যেতেই ফের ছন্দপতন। তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে গিয়েও নিষ্ক্রিয় থেকে যান শোভন। আর কার্যত তাঁর মুখপাত্র হয়ে সংবাদমাধ্যমে নানা অভিযোগ করতে থাকেন তাঁর বান্ধবী। এরপর নারদ ও সারদা কান্ডে সিবিআই জেরার মুখে পড়তেই বদলায় পরিস্থিতি। চিত্রনাট্য সাজিয়ে তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছ থেকে ভাইফোঁটা নিতে তাঁর বাড়িতে ছুটে যান শোভন। কদিন পরেই ফেরে তাঁর ওয়াই ক্যাটাগরির নিরাপত্তা ব্যবস্থাও। মজার ব্যাপার, আনুষ্ঠানিকভাবে বিজেপি ছাড়ার ঘোষণা বা বিজেপিতে যোগ দিয়ে মমতার বিরুদ্ধে আনা প্রকাশ্য অভিযোগগুলি প্রত্যাহার কোনওটাই এখনও করেননি শোভন। যা বলার বলছেন তাঁর বান্ধবীই। তবু এরই মধ্যে তৃণমূল কংগ্রেসের অন্দরেই জোর জল্পনা, আজ বৃহস্পতিবার দলীয় বিধায়কদের নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বৈঠকে উপস্থিত থাকতে পারেন বিধায়ক শোভন। এমনকী ফিরে পেতে পারেন মন্ত্রিত্বও। বিজেপি ত্যাগের প্রকাশ্য ঘোষণা ছাড়াই তাঁর পুরনো দলে পুনর্বাসন সময়ের অপেক্ষা মাত্র। কারণ দলটির নাম তৃণমূল কংগ্রেস। অন্য সূত্রে খবর, দলের বৈঠকে থাকার আজ কোনো গ্রহণযোগ্য সূত্র বেরোয় নি এখনও। বিজেপি ছাড়ার ঘোষণার আগে দল তার নিজস্ব বৈঠকে ডাকবে কিনা, নেতারা দোটানায়। নেত্রীও এখনও স্পষ্ট নির্দেশ দেন নি।
