Saturday, May 3, 2025

“জনগণ জেতাতেও পারে, জুতো পেটাও করতে পারে”: NRC-CAB বিরোধিতায় কানহাইয়া কুমার

Date:

Share post:

সংসদে যখন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল পেশ করেছেন, ঠিক তখনই কলকাতার রানি রাসমণি রোডে একটি অরাজনৈতিক সমাবেশে NRC-CAB-এর বিরোধিতায় কেন্দ্রীয় সরকারকে তুলোধনা করলেন কানহাইয়া কুমার।

নিজস্ব স্টাইলে কানহাইয়া কুমার বলেন, “এই সরকার গণতন্ত্র মানে না। সুতরাং, আপনিও এই সরকারকে মানবেন না। ওরা ভুলে গিয়েছে জনগণ ভোট দিয়ে ৫ বছরের জন্য জেতাতেও পারে, আবার সেই জনগণই জুতোপেটাও করতে পারে।” তাঁর এই কথায় হাততালিতে ফেটে পড়ে গোটা সমাবেশ চত্ত্বর।

এরপর কানহাইয়া কুমার মোদিকে কটাক্ষ করে বলেন, “মোদি মাঝে মধ্যেই বিদেশ যান, কিন্তু সেখান থেকে ভালো কিছু শিখে আসতে পারেন না। সব খারাপ জিনিসগুলো শিখে এসে দেশে সেটা করতে চান। দেখবেন মাছি যেমন আপনার শরীরের ভালো জায়গায় বসে না, কিন্তু কোথাও ঘা হয়ে থাকলে সেখানে বসে। মোদিও সেরকম, বিদেশে কোথাও কোনও খারাপ থাকলে সেটাই শিখে আসেন।”

কানাইয়ার দাবি, মোদি সরকার NRC বা CAB-এর নামে দেশকে ইংরেজদের মতো ভাগ করতে চাইছে। আমাদের দেশের সংবিধান কিন্তু ধর্মের ভিত্তিতে দেশভাগের কথা বলে না। মোদি-অমিত শাহ দেশের ইতিহাস জানেন না। তাই এমন কাজ করতে চাইছে। আসামে জনগণ NRC চেয়েছিল। হয়তো সেখানে NRC প্রয়োজন ছিল। আর সেটা নিয়ে রাজনীতি করতে গিয়ে গোটা দেশে NRC-এর কথা বলা হচ্ছে। কিন্তু নিজেদের ফাঁদে ওরা নিজেরাই পা দিয়েছে। বুঝতে পারেনি আসামে NRC হলে সেই তালিকায় সিংহভাগ হিন্দুর নাম বাদ পড়বে। এখন তাই নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল পাস করাচ্ছে।

মোদিকে চ্যালেঞ্জ করে কানহাইয়া বলেন, “মোদি যদি নিজের ঠাকুমার মায়ের, তাঁর মায়ের নাম বলতে পারে, তাহলে আমিও আমার দাদুর বাবার, তাঁর বাবার নাম বলবো। কিন্তু উনি পারবেন না। অথচ, NRC করতে চাইছে।”

এখানেই থেমে থাকেননি কানহাইয়া। তিনি বঙ্গবাসী-সহ গোটা দেশের নাগরিকদের উদ্দেশে বলেন, “যদি আপনাদের বাড়িতে কেউ NRC নিয়ে নথি চাইতে যান, তাহলে সেই সরকারি কর্মীকে বসতে বলবেন। জল খাওয়াবেন। তারপর চলে যেতে বলবেন। সেইসঙ্গে তাঁকে বলে দেবেন, আগে মোদির কাছ থেকে ১৫ আনুন, ২কোটি চাকরির হিসেব আনুন। আর বলবেন, দেশের মধ্যে আছে দিন কোথায় হয়েছে, তার ঠিকানা আনুন। তারপর নথি দেখাবেন।”

সবশেষে কানহাইয়া দেশবাসীকে একজোট হয়ে লড়াই করার আবেদন করেন। ১৯ ডিসেম্বর একতা দিবস পালন করার অনুরোধ করেন। তাঁর কথায়, “বিজেপি-আরএসএস সবসময় দেশভাগের জন্য কংগ্রেসকে দোষারোপ করে। কেউ দোষী নয়। ধর্মের ভিত্তিতে এই দেশভাগ করেছ মাত্র দুজন। ত মহম্মদ আলি জিন্না আর সাবড়কর এই দেশভাগের হোতা। এরা দুজন কেউই খাঁটি মুসলিম বা হিন্দু নয়। এদের মধ্যে কোনদিন মুসলমান বা হিন্দুর জন্য ভালবাসা কাজ করেনি। নিজেদের স্বার্থের জন্য এরা দুজন দেশভাগের চক্রান্ত করেছে। এই দেশ গান্ধি, আম্বেদকরের দেশ। আমাদের দেশের সংস্কৃতি কখনও ভাগাভাগির কথা বলে না।”

কী বললেন কানহাইয়া কুমার দেখে নিন…

spot_img
spot_img

Related articles

স্থানীয় মদতে পহেলগাম হামলা! মৌলানা আজহার-ইতিহাস স্মরণ করালেন ফারুক

জঙ্গিমুক্ত কাশ্মীরের যে প্রচার নরেন্দ্র মোদি ও তাঁর বিজেপি চালিয়েছে গোটা দেশজুড়ে, সেই বার্তা যে আদতে নিজেদের ব্যর্থতা...

রুফটপ রেস্তরাঁ নিয়ে কড়া পদক্ষেপ! পুলিশের তালিকায় ৮৩টি রেস্তরাঁ 

বড়বাজারের মেছুয়া এলাকায় ভয়াবহ আগুন ও প্রাণহানির ঘটনার পর রুফটপ রেস্তরাঁ নিয়ে নড়েচড়ে বসেছে প্রশাসন। কলকাতা পুরসভার তরফে...

গাফিলতি স্পষ্ট: গোধরা হত্যাকাণ্ডে ৯ কনস্টেবলের বরখাস্তের শাস্তি বহাল গুজরাট হাই কোর্টে

গাফিলতি স্পষ্ট। গুজরাটের (Gujarat) গোধরা হত্যাকাণ্ডে ৯ পুলিশ কনস্টেবলকে বরখাস্ত করার শাস্তি বহাল রাখল গুজরাট হাই কোর্ট (Gujarat...

করমণ্ডল উপকূলে মৎস্যজীবীদের উপর হামলা শ্রীলঙ্কার জলদস্যুদের

ফের মৎস্যজীবীদের উপর জলদস্যুদের হামলা। আহত কমপক্ষে ১৭ জন মৎস্যজীবী। শুক্রবার ঘটনাটি ঘটেছে তামিলনাড়ুর (Tamilnadu) করমণ্ডল উপকূলে। সেখানেই...