Thursday, November 13, 2025

ভেজাল-মেয়াদোত্তীর্ণ ও নিম্নমানের ওষুধ নিয়ে উদ্বিগ্ন কেন্দ্রীয় ড্রাগ কন্ট্রোল, কারণ জানেন ?

Date:

Share post:

আমাদের দেশে ওষুধশিল্পের চাহিদার ৯৭ শতাংশ পূরণ করে বিদেশের ওষুথ। ১৪৫টির বেশি দেশ থেকে আমদানি করা হয় এই ওষুধ। গত পাঁচ বছরে ওষুধ আমদানি বেড়ে প্রায় দ্বিগুণের কাছাকাছি হয়েছে।যদিও এই সাফল্যের বিপরীতে দেশজুড়ে ভেজাল, মেয়াদোত্তীর্ণ ও নিম্নমানের ওষুধ নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছে। অভিযোগ,তদারকির অভাবে দেশের হাজার হাজার ফার্মেসিতে মেয়াদোত্তীর্ণ ভেজাল ও নিম্নমানের ওষুধ অবাধে বিক্রি হচ্ছে। বিশেষ করে মফস্বলের ওষুধ ফার্মেসিগুলোকে টার্গেট করে সংঘবদ্ধ চক্র মেয়াদোত্তীর্ণ, ভেজাল ও নিম্নমানের ওষুধ ছড়িয়ে দিচ্ছে। বেশি মুনাফার আশায় একশ্রেণির বিক্রেতা সচেতনভাবেই এই চক্রে জড়িয়ে পড়ছেন। ফলে ভেজাল ও মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ ব্যবহার করে সুস্থতার বদলে ভয়াবহ স্বাস্থ্যঝুঁকিতে পড়ছে লাখ লাখ রোগী।
পরিসংখ্যান বলছে, গত ১ আগস্ট থেকে ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত মেয়াদোত্তীর্ণ, নকল, ভেজাল ওষুধ বিক্রয়ের জন্য ১৩ হাজার ৫৯৩টি ফার্মেসি পরিদর্শন করে মোবাইল কোর্টে ৫৭২টি মামলা করা হয়। এতে ১ কোটি ৭৪ লাখ ৯৪ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করা হয়েছে। এ ছাড়া একই সময়ে ৩৪ কোটি ৭ লাখ ৬৯ হাজার টাকার টাকার মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ ধ্বংস করা হয়েছে।
বহুল ব্যবহৃত ৪৭টি ব্র্যান্ডকে চিহ্নিত করেছে কেন্দ্রীয় ড্রাগ কন্ট্রোল। অ্যাবট হেলথ কেয়ার রিসার্চ, ম্যানকাইন্ড ফার্মা-সহ দেশ-বিদেশের প্রথম সারির কয়েকটি ওষুধ নির্মাতা সংস্থা আছে এই তালিকায়।কেন্দ্রীয় ড্রাগ কন্ট্রোলের দাবি, অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যায়, দুই বা তিনটি ওষুধ মিশিয়ে এই ওষুধগুলি তৈরি হয়। তাই কোনও রোগীর একটি ওষুধ দরকার হলেও তাঁকে অন্য ওষুধ খেতে হয়, প্রয়োজন না থাকলেও। যা আসলে ওষুধের অতিরিক্ত ব্যবহার। যার ফলে দীর্ঘমেয়াদী ক্ষতির মুখোমুখি হন রোগীরা। তা ছাড়াও রিসার্চ ল্যাবোরেটরিতে এইসব ব্র্যান্ডের ওষুধ তাদের যোগ্যতার পরীক্ষাতেও ডাহা ফেল করেছে। অ্যাবট, ম্যানকাইন্ড, টরেন্টের মতো ব্র্যান্ডগুলির এই বিশেষ কয়েকটি ওষুষকে নিম্নমানের বলেই চিহ্নিত করেছেন কেন্দ্রীয় ড্রাগ কন্ট্রোলের বিশেষজ্ঞরা।এর আগে র্যা্নিটিডাইন গোত্রের অম্বলের ওষুধ নিয়ে সতর্ক করেছিল আমেরিকার ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন তথা এফডিএ। এফডিএ একটি বিবৃতিতে জানিয়েছিল, র্যা নিটিডাইন গোত্রের কিছু ওষুধে নাইট্রোসেমাইনের একটি ইমপিউরিটি তথা ভেজাল পাওয়া গেছে।
জানা গিয়েছে, দেশের ওষুধ কোম্পানির পুঙ্খানুপুঙ্খ তথ্য সরকারের হাতে না থাকায নকল ওষুধের এই বাড়বাড়ন্ত রোধে প্রধান বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে৷ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা ওষুধ নির্মাতাদের বিস্তারিত বিবরণ অথবা তালিকা সরকারের হাতে নেই৷ ওষুধের মান ও দাম নিয়ন্ত্রণের নেই কোনও ব্যবস্থা৷ ফলে ওষুধের ভালো-মন্দ পুরোটাই নির্ভর করছে ওষুধ নির্মাতাদের নিজস্ব মর্জির ওপর৷ ওষুধ ক্রেতারা কখনোই ওষুধ নির্মাতাদের লাইসেন্স, রেজিস্ট্রেশন অথবা শেষ পর্যবেক্ষণের তারিখ জানতে চান না৷

spot_img

Related articles

লেন্স নয় সিনেমার আত্মাকে ধরতে পারে মিউজিক, KIFF আড্ডায় নস্টালজিক শান্তনু

সিনেমার ভাষায় সুরের প্রয়োজনীয়তা কতটা, নির্বাক অনুভূতিকে কতটা বাঙময় করে তুলতে পারে মিউজিক, এ প্রশ্ন চিরকালীন। ৩১ তম...

কুলদীপে আস্থা না অল-রাউন্ডারে ভরসা? ম্য়াচের আগের দিন মুখ খুললেন গিল

কলকাতা সফরে আসার পর থেকেই ঘূর্ণি পিচের আবদার শুরু করেছে ভারত। পরিস্থিতি যা তাতে গম্ভীরের সঙ্গে সংঘাতে যাচ্ছেন...

মুকুলের বিধায়ক পদ খারিজ করল কলকাতা হাই কোর্ট, কারণ কী!

দলত্যাগ বিরোধী আইনে মুকুল রায়ের (Mukul Ray) বিধায়ক পদ খারিজ করে দিল কলকাতা হাই কোর্ট (Calcutta High Court)।...

পুর নিয়োগ মামলায় এবার সুজিত বসুর স্ত্রী ও তাঁর পুত্র-কন্যাকে তলব ইডি-র

পুর নিয়োগ মামলার তদন্তে এবার রাজ্যের দমকলমন্ত্রী সুজিত বসুর (Sujit Basu) স্ত্রী ও তাঁর পুত্র-কন্যাকে তলব করল ইডি...