‘সুন্দরবন- রূপকার’ তুষার কাঞ্জিলাল প্রয়াত

প্রয়াত হলেন “সুন্দরবন- রূপকার” তুষার কাঞ্জিলাল৷ বুধবার  বাঘাযতীনে মেয়ের বাড়িতে  শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন তিনি।মৃত্যুকালে বয়স হয়েছিল ৮৫ বছর। বেশ কিছুদিন ধরেই তিনি বার্ধক্যজনিত কারণে ভুগছিলেন।প্রয়াত তুষার কাঞ্জিলালের মরদেহ নিয়ে যাওয়া হয়েছে তাঁর কর্মস্থল সুন্দরবনের গোসাবার রাঙাবেলিয়ায়৷ তাঁর জীবনাবসানে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন সমাজের সর্বস্তরের মানুষ৷ ১৯৮২ সালে ‘জাতীয় শিক্ষক’ হিসাবে পদ্মশ্রী পুরস্কারে সম্মানিত হয়েছিলেন ৷  মাস্টারমশাই, জাতীয় শিক্ষক, পদ্মশ্রী, বিশিষ্ট সমাজসেবী তুষার কাঞ্জিলালের শেষকৃত্য সম্পন্ন হবে আজ বৃহস্পতিবার৷

তুষার কাঞ্জিলালের জন্ম ১৯৩৫ সালে বাংলাদেশের নোয়াখালিতে। ছাত্রাবস্থাতেই বামপন্থী রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত হন। সক্রিয় রাজনীতিতে ছিলেন বহুদিন। ১৯৬৭ সালে রাজনীতি থেকে নিজেকে সরিয়ে আনেন। গ্রামসেবা এবং উন্নয়নের কাজে যুক্ত হন।  সুন্দরবন অঞ্চলের রাঙাবেলিয়া গ্রামে স্কুলে শিক্ষকতা শুরু করেন৷ সপরিবারে থাকতেন সেই সময়ের গোসাবার ওই অনগ্রসর গ্রামে। বেড়ার দেওয়াল, খড়ের  ছাউনি দেওয়া ঘরে সাপের ভয়ে কলকাতা ও বর্ধমান শহরে বড় হওয়া তুষারবাবু ও বীণা কাঞ্জিলালকে বহুদিন বিনিদ্র রজনী কাটাতে হয়েছে। এখনকার  রাঙাবেলিয়াকে  দেখে ছয়ের দশকের অবস্থা কল্পনায় আনা মুশকিল৷  ১৯৭৫ সালে তৈরি করেন তাঁর স্বপ্নের রাঙাবেলিয়া প্রকল্প। তাঁর কাজের স্বীকৃতি মিলেছে আঞ্চলিক, জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক স্তরে।

সুন্দরবনের গ্রামের মানুষের জীবন ও পরিবেশ নিয়ে নিয়মিত লিখেছেন বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায়। তাঁর প্রকাশিত গ্রন্থ ‘গ্রামের ডায়েরি’,‘জল জঙ্গলের কথা’, ‘পথে প্রান্তরে’, ‘আমার জীবন’, ‘আমার সুন্দরবন’ উল্লেখযোগ্য।

মানুষের সুখে দুঃখে তাঁদের পাশে থাকা থেকে বিনামূল্যে চিকিৎসা, এক ফসলি জমিতে কী ভাবে দো ফসলি তিন ফসলি চাষ করা যায়, সবকিছু হাতে করে শিখিয়েছেন তিনি। বিশ্বের দরবারে সুন্দরবনকে তুলে ধরার জন্য তাঁর অবদান অনস্বীকার্য৷

Previous articleসর্বসমক্ষে সিপি মনোজ ভর্মাকে ভর্ৎসনা রাজ্যপালের
Next articleমধ্যাহ্নেই আঁধার! অচেনা মহানগর