Wednesday, May 21, 2025

কুকথা’র মাশুল দিলেন প্রবেশ বর্মা, এ রাজ্যের নেতারা শিক্ষা নিন, কণাদ দাশগুপ্তের কলম

Date:

কণাদ দাশগুপ্ত

প্রবেশ সাহিব সিং বর্মা৷

পশ্চিম-দিল্লি কেন্দ্রের বিজেপি সাংসদ৷ ১৯৯৬ সালে ২ বছর ২২৮ দিনের জন্য দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী হয়েছিলেন সাহিব সিং বর্মা৷ প্রয়াত সেই নেতার পুত্র এই প্রবেশ বর্মা৷

এবার দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী পদে বিজেপি’র তরফে দাবিদার ছিলেন à§­-à§® জন৷ এই এততো দাবিদার সামলাতে না পেরেই এবারের নির্বাচনে কাউকে ‘মুখ্যমন্ত্রী’ পদে প্রোজেক্ট করার সাহস দেখাতে পারেনি বিজেপি৷ ২০১৫-র নির্বাচনে বিজেপি ভোটে গিয়েছিলো প্রাক্তন IPS কিরন বেদিকে মুখ্যমন্ত্রী- পদপ্রার্থী হিসাবে ঘোষনা করে৷ যদিও সেই ভোটে কিরন বেদি পরাজিত হয়েছিলেন ২৪০০ ভোটে৷ এই প্রবেশ সাহিব সিং বর্মা এবারের নির্বাচনে বিজেপির মুখ্যমন্ত্রী পদের অন্যতম জোরালো দাবিদার ছিলেন৷

এবারের ভোটপ্রচারে বিজেপির যে ক’জন নেতা কু-কথার জোয়ার এনেছিলেন, প্রবেশ বর্মা সেই তালিকার উপরের দিকেই ছিলেন৷ প্রকাশ্য সভায় প্রবেশ বর্মা একাধিকবার কুরুচিকর এবং উসকানিমূলক মন্তব্য করেছিলেন৷ কখনও শাহিন বাগের আন্দোলনকারীদের ধর্ষক ও খুনি বলে, আবার কখনও অরবিন্দ কেজরিওয়ালকে ‘জঙ্গি’ ‘সন্ত্রাসবাদী’ তকমা দিয়ে বিতর্কে জড়িয়েছেন এই প্রবেশ বর্মা৷ দিল্লির বিদায়ী উপ-মুখ্যমন্ত্রী মণীশ সিশোদিয়ার বিরুদ্ধেও আপত্তিকর কথা তিনি বলেছিলেন৷ নির্বাচন কমিশন পর পর দু’বার এসব উক্তির জন্য প্রবেশ বর্মাকে সতর্ক করলেও দল হিসাবে বিজেপি কোনও ব্যবস্থা নেয়নি, উল্টে মজা লুটেছে৷ এ সব কুরুচিকর কথা বলে দলের কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে বেশ একটা ‘হিরো’ ইমেজ পেয়ে যান প্রবেশ বর্মা৷
প্রবেশ বর্মা ২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচনে পশ্চিম-দিল্লি কেন্দ্র থেকে বিপুল ভোটে নির্বাচিত হয়েছেন৷ প্রবেশ পেয়েছিলেন ৮,৬৫,৬৪৮ ভোট৷ শতাংশের হিসাবে ৬০.০৫% ভোট৷ তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী কংগ্রেসের মহাবল মিশ্র পেয়েছিলেন ২,৮৭,১৬২ ভোট৷ শতাংশের হিসাবে ১৯.৯২% ভোট৷ তৃতীয়স্থানে ছিলেন AAP প্রার্থী বলবীর জাখর৷ পেয়েছিলেন ২,৫১,৮৭৩ ভোট, শতাংশের হিসাবে ১০.৯১% ভোট৷

পশ্চিম-দিল্লি লোকসভা কেন্দ্রটি ১০টি বিধানসভা কেন্দ্র নিয়ে গঠিত৷ এগুলি হলো, মাদিপুর, রজৌরি গার্ডেন, হরি নগর, তিলক নগর, জনকপুরী, উত্তম নগর, বিকাশপুরী, দ্বারকা, মাতিয়ালা এবং নজফগড়৷

মূল বিষয়টি এবার৷ প্রবেশ বর্মা যে লোকসভা কেন্দ্র থেকে ৫,৭৮,৪৮৬ ভোটের ব্যবধানে জয়ী হয়েছিলেন, সেই কেন্দ্রটি তো নিশ্চিতভাবেই বিজেপির দুর্গ৷ তো, এই নির্বাচনে ওই ১০ বিধানসভা কেন্দ্রে কী ফল করেছে বিজেপি ?

তথ্য বলছে, মাদিপুর, রজৌরি গার্ডেন, হরি নগর, তিলক নগর, জনকপুরী, উত্তম নগর, বিকাশপুরী, দ্বারকা, মাতিয়ালা এবং নজফগড়, এই ১০ কেন্দ্রেই শোচনীয়ভাবে হেরেছে বিজেপি৷ সাংসদ, বিজেপি’র মুখ্যমন্ত্রী পদের দাবিদার, সাহিব সিং বর্মা’র মতো নেতার পুত্র এই প্রবেশ বর্মা’র এই শোচনীয় হাল কেন হলো?

উত্তর দিয়েছেন পশ্চিম-দিল্লি লোকসভা কেন্দ্রের ভোটদাতারাই৷ তাঁরা বলেছেন, প্রবেশ বর্মা’র কু-কথার জবাব দেওয়া হয়েছে৷ প্রবেশের দল এসব কথার প্রতিবাদ করেনি৷ কিন্তু ভোটদাতারা বুঝিয়েছেন, রাজনীতিতে কু-কথা বলা বন্ধ করতে হবে নেতাদের৷ সুস্থ মানসিকতাসম্ন্ন এবং রুচিশীল না হলে সেই নেতা বা জনপ্রতিনিধিকে প্রত্যাখ্যান করতে, এই মুহুর্তে সচেতন ভোটাররা তৈরি৷

রাজনীতির আঙ্গিনাকে কলুষমুক্ত করার যে বার্তা দিল্লির ভোটাররা এবার দিয়েছেন, তা থেকে এ রাজ্যের রাজনৈতিক নেতা বা জনপ্রতিনিধিরা শিক্ষা না নিলে, তাদের শেষের সেই সব দিন বড়ই ভয়ঙ্কর হবে৷

Related articles

বুধে উত্তরকন্যায় মুখ্যমন্ত্রীর প্রশাসনিক বৈঠক, উত্তরবঙ্গ উন্নয়নে জোর রাজ্যের

বুধবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর তিন দিনের উত্তরবঙ্গ সফরের শেষ দিনে উত্তরকন্যায় একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশাসনিক বৈঠকে অংশগ্রহণ করবেন।...

IPL-এর জনপ্রিয়তাকে কাজে লাগিয়ে সম্মেলনের প্রচার SFI-এর! কী বলছেন সৃজন

CPIM-এর মতো বাম ছাত্র সংগঠনগুলির সমর্থনও কি তলানিতে? না হলে কেন সর্বভারতীয় সম্মেলনে লোক টানতে আইপিএলকে কাজে লাগিয়েছে...

মামলা যাঁদের, আন্দোলনে উস্কানিও তাঁদের: বাম দ্বিচারিতার পর্দাফাঁস কুণালের

চাকরিহারা শিক্ষকদের নিয়ে দুমুখো রাজনীতি বামপন্থী নেতাদের। একদিকে চাকরিপ্রার্থীদের আন্দোলন মঞ্চে গিয়ে সহানুভূতি দেখানো, আর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata...

১৩১ পরিবার পেল মাথার ছাদ! বন্যাদুর্গত মানুষদের জন্য ‘তিস্তাপল্লি’ উপহার মুখ্যমন্ত্রীর

তিস্তা নদীর ভাঙনে সর্বস্ব হারিয়েছিল মেজুয়া ও লালডং চুমুকডালি গ্রামের ১৩১ জন মানুষ। আশ্রয়হীন হয়ে পড়েছিলেন তাঁরা। এবার...
Exit mobile version