Saturday, December 6, 2025

দিল্লির হিংসা : অন্যের ঘাড়ে বন্দুক রাখার ব্যর্থ চেষ্টা অমিতের

Date:

Share post:

অবশেষে দিল্লির হিংসা নিয়ে সংসদে মুখ খুললেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। আর এই হিংসার কথা বলতে গিয়ে অদ্ভুতভাবে পুলিশকে সাধুবাদ জানালেন। অভিযোগের তীর ছুড়লেন কংগ্রেসের দিকে। আর হিংসার দায় চাপালেন উত্তরপ্রদেশ থেকে আগত বহিরাগতদের দিকে। শুধু তাই নয়, তাঁর এই বক্তব্যের মাঝে ক্ষুব্ধ কংগ্রেস সাংসদরা লোকসভার অধিবেশন বয়কট করে বেরিয়ে আসেন।

অমিত শাহ কী বললেন?

১. ২৪ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু। ২৫ ফেব্রুয়ারি রাতের পর আর কোনও হিংসার আগুন ছড়ায়নি।

২. ৩৬ ঘন্টার মধ্যে হিংসা বন্ধ করার জন্য পুলিশকে আমি কৃতিত্ব দেব।

৩. প্রশ্ন উঠেছে, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কী করছিলেন? অমিতের জবাব, ট্রাম্পের সফরের কারণে আমি আমেদাবাদে ছিলাম। ওটা আমার নির্বাচনী এলাকা। দায়িত্ব আমার। আগেই গিয়েছিলাম ব্যবস্থাপনা খতিয়ে দেখতে।

৪. ঘটনা জানার পরেই সব ফেলে আমি ফিরে আসি। ট্রাম্পের সঙ্গে তাজমহল যাইনি, রাষ্ট্রপতির ডিনারে যাইনি। আমি সকাল থেকে দিল্লি পুলিশের সঙ্গে বৈঠক করে ব্যবস্থা নিচ্ছিলাম।

৫. আমি কেন যাইনি? অমিতের জবাব, মানুষকে নিশ্চয়তা দিতে অজিত ডোভালকে আমিই পাঠিয়েছিলাম। আর আমার যাওয়া মানে পুলিশ আমাকে নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়ত। তাই যাইনি।

৬. পূর্ব দিল্লিতে যে জায়গাগুলিতে হিংসা হয়েছে, সেখানে সব মিলিয়ে ২০লক্ষ মানুষের বাস। আর দিল্লিতে ১ কোটি ৭০ লক্ষ মানুষ বাস করেন। প্রচন্ড ঘন বসতি এলাকা। ফলে ফায়ার ব্রিগেড বা অ্যাম্বুল্যান্স ঢোকা মুশকিল। ফলে পুলিশকে ব্যবস্থা নিতে সময় লেগেছে।

৭. আমাদের তদন্ত বলছে, এই ঘটনার পিছনে উত্তরপ্রদেশের বহিরাগতরা রয়েছে। আমরা তাই প্রথমেই উত্তরপ্রদেশ সীমান্ত সিল করেছি।

৮. অভিযুক্তরা গ্রেফাতার হয়েছে। সাংসদ ওয়েসি বলছেন, সংখ্যালঘুরা শুধু গ্রেফতার হয়েছেন, সেটা কিন্তু তথ্য বলছে না।

১০. এই ঘটনা ব্যাপক হওয়ার পিছনে কংগ্রেসের উস্কানিমূলক বক্তব্য উড়িয়ে দেওয়া যায় না। লক্ষ্য সোনিয়া।

লক্ষ্যণীয় বিষয় হল :

১.স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী একবারের জন্য কেন হিংসার আগুন ছড়াল সে প্রশ্নের গভীরে যাননি।

২. পুলিশ কেন্দ্রের, দিল্লিতে আপ সরকার। আক্রমণ কেন তবে কংগ্রেসকে।

৩. কপিল মিশ্র, অনুরাগ ঠাকুরদের উস্কানির কথা একবারও বললেন না। লক্ষ্য কংগ্রেসকে। অমিত সংসদেও যে ধর্মীয় রাজনীতির বাইরে যেতে পারলেন না, সেটা পরিষ্কার।

৪. দিল্লির পুলিশ বিজেপির অধীন। উত্তরপ্রদেশ থেকে যদি বহিরাগতদের হিংসা বাধানোত তত্ত্ব মানতে হয়, ঘটনা হচ্ছে সেখানেও বিজেপির পুলিশ। তাহলে কেন অন্যদের ঘাড়ে বন্দুক রাখার চেষ্টা!

৫. পুলিশের বিরুদ্ধে সবচেয়ে বড় অভিযোগ, দর্শকের ভূমিকা নিয়েছিল তারা। ৫০ জনের বেশি মানুষ মারা যাওয়ার পর সক্রিয় হয়েছে। শাহিনবাগ থেকে সিএএ বিরোধী আন্দোলনকে দমিয়ে দিতে, ভীতি প্রদর্শন করতেই এই হিংসার আগুন, বলছেন দিল্লিবাসী।

spot_img

Related articles

কলকাতা-লন্ডন বিমান ভাড়া কলকাতা-মুম্বইয়ের থেকে কম! হয়রানিতেও জুটল না বিশেষ ট্রেন

লক্ষ লক্ষ দেশবাসী গত ৭২ ঘণ্টার বেশি সময় ধরে দেশের নানা প্রান্তে বিপর্যস্ত। কারো বিয়ে, কারো পরীক্ষা আটকে...

বাংলাই দেখায় পথ: BLO মৃত্যুতে ক্ষতিপূরণের সিদ্ধান্তে বাধ্য হল কমিশন

বাংলায় মৃত্যু চার বিএলও-র। অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন অন্তত ১৫ জন। গোটা দেশে ডবল ইঞ্জিন রাজ্যগুলিতে বিএলও...

চিহ্নিত ‘অযোগ্য’দের তালিকা, আদালতের নির্দেশে প্রকাশ এসএসসি-র

কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশে ফের এক তালিকা প্রকাশ এসএসসি-র। ২০১৬ এসএসসি নিয়োগ প্রক্রিয়ায় এসএলএসটি চাকরিপ্রার্থীদের মধ্যে ‘অযোগ্য’ চিহ্নিতদের...

কাজ করার সময়ই অসুস্থ BLO: হাসপাতালে ভর্তির সংখ্যা আরও বাড়ল

এসআইআর-এর সময় সীমা বাড়ানো হোক। এই দাবিতে রাজ্যের সিইও দফতরের সামনে লাগাতার আন্দোলনে বিএলও অধিকার রক্ষা মঞ্চ। যেভাবে...