Saturday, December 27, 2025

লকডাউন: দলে দলে পরিযায়ী শ্রমিকদের ঘরে ফেরা ঠেকাতে সীমান্ত সিল সহ একাধিক নির্দেশ কেন্দ্রের

Date:

Share post:

যে যেখানে আছেন সেখানেই থাকুন। কর্মস্থল অন্য রাজ্যে হলেও লকডাউনের মধ্যে এখন বাড়ি ফেরার চেষ্টা করবেন না। করোনার বিপদ ঠেকাতে ২১ দিনের লকডাউন চলছে, তা মেনে চলুন। বড় শহর ছেড়ে অসংগঠিত শ্রমিকদের এই সময় গ্রামে ফেরার হিড়িক ঠেকাতে পই পই করে প্রচার করছে কেন্দ্রীয় সরকার। দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল বারবার বলছেন এই সময় কেউ রাজধানী ছাড়বেন না। পরিযায়ী শ্রমিকদের কাছে খাবার পৌঁছে দেবে রাজ্য সরকার। বাংলা সহ আরও কয়েকটি রাজ্য সরকারও একই প্রচার চালাচ্ছে। অথচ সেই আবেদনে কর্ণপাত না করে স্রোতের মত পরিযায়ী শ্রমিকরা ভিড় করছেন দূরপাল্লার বাস ধরার জন্য। অনেকেই দল বেঁধে হাজার হাজার কিলোমিটার দূরে নিজের রাজ্যে ঢোকার তাগিদে জাতীয় সড়ক ধরে হাঁটা শুরু করেছেন। অথচ বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ মেনে করোনার ভয়াবহ সংক্রমণ ও মৃত্যু ঠেকানোর তাগিদে গোটা দেশে যে লকডাউন জারি করেছে সরকার, তার উদ্দেশ্য ব্যর্থ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে এই ঘটনায়। প্রশ্ন উঠছে, সরকারের আর্জিতে কর্ণপাত না করে সোশ্যাল ডিসট্যান্সিং-এর নির্দেশ উড়িয়ে পরিযায়ী শ্রমিকরা যেভাবে কর্মস্থল ছেড়ে ঘরে ফিরছেন, সেই জনস্রোত থেকে কোনওভাবে করোনা সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়লে ভারতের মত ঘন জনবসতির দেশে কোন দুর্যোগের মুখে পড়বে আমজনতা? সচেতনতার চূড়ান্ত অভাব আর বিভ্রান্তির জেরে সরকারি আশ্বাসে ভরসা না করে দলে দলে গ্রামে ফিরতে গিয়ে নতুন নতুন জায়গায় রোগের সংক্রমণ ছড়ানোর আশঙ্কা তৈরি হচ্ছে না তো?

এই পরিস্থিতিতে রবিবার কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে সব রাজ্যের জন্য এক নির্দেশিকা জারি হয়েছে। তাতে বলা হয়েছে:

এই মুহূর্তে আন্তঃরাজ্য সীমান্ত সিল করে লকডাউন চলাকালীন পরিযায়ী শ্রমিকদের এক রাজ্য থেকে অন্য রাজ্যে ঢোকা আটকাতেই হবে।

যেসব বাড়ির মালিক লকডাউন চলাকালীন অসংগঠিত, দরিদ্র শ্রমিকদের চাপ দিয়ে বাড়ি ছাড়তে বাধ্য করেছে, তাদের চিহ্নিত করে কড়া ব্যবস্থা নিতে হবে।

লকডাউন চলাকালীন এক রাজ্য থেকে আরেক রাজ্যে আসা শ্রমিকদের থাকা-খাওয়ার বন্দোবস্ত রাজ্য সরকারগুলিকে করতে হবে। রাজ্যগুলিকে এই খরচ বাবদ টাকা দেবে কেন্দ্র।

সরকারি নির্দেশ ও লকডাউন অমান্য করে ইতিমধ্যেই যেসব শ্রমিক এর মধ্যে বাড়ি ফিরেছেন তাদের বাধ্যতামূলক ১৪ দিনের কোয়ারান্টিনের ব্যবস্থা করতে হবে সংশ্লিষ্ট রাজ্যকে।

লকডাউন চলাকালীন শ্রমিকদের বেতন না কাটার জন্য বেসরকারি সংস্থাগুলিকে আবেদন জানানো হয়েছে।

এদিকে শনিবার দিল্লির আনন্দবিহারের বাসস্ট্যান্ডে বাড়ি ফেরার জন্য যে অসংখ্য শ্রমিক জমায়েত করেছিলেন তাদের ফের কর্মস্থলে ফিরিয়ে দিয়েছে পুলিস। দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল রবিবার ফের বলেছেন, একজন শ্রমিকও অভুক্ত থাকবেন না। প্রত্যেকের কাছে খাবার পৌঁছে দেওয়া হবে। অন্য রাজ্যের শ্রমিকদের আতঙ্কিত হওয়ার কারণ নেই। কোনও সমস্যা হলে সরকার দেখবে। কিন্তু কোনও অবস্থাতেই লকডাউনের শর্ত ভাঙা যাবে না। করোনার বিপদ ঠেকাতে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে লকডাউন কার্যকর করা হবে। অন্যদিকে, পরিযায়ী শ্রমিকদের মরিয়া হয়ে নিজের নিজের রাজ্যে ফেরার এই চিত্র সংশ্লিষ্ট রাজ্য সরকারগুলির ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তুলে দিচ্ছে।

spot_img

Related articles

লক্ষ্য বিধানসভা ভোট, শনিবার বড় ঘোষণা করবেন অভিষেক! জল্পনা তুঙ্গে

দুয়ারে বিধানসভা ভোট, নতুন বছরের শুরু থেকেই জোর কদমে প্রচারে নামছে তৃণমূল। শুক্রবারের বৈঠকে প্রচারের রূপরেখা স্থির করে...

বাংলাদেশে রকস্টার জেমসের অনুষ্ঠানে হামলা, ভেস্তে গেল সংগীত অনুষ্ঠান

অশান্ত বাংলাদেশ, কয়েকদিন আগেই উপমহাদেশের সাংস্কৃতিক পীঠস্থান ছায়নটে হামলা চালিয়ে উন্মত্ত দুষ্কীতিরা। এবার রকস্টার জেমসের(James) অনুষ্ঠানে চলল হামলা। শুক্রবার...

শনিবার থেকে শুরু এসআইআরের হেয়ারিং পর্ব, সই-ছবিতেই জোর কমিশনের

শনিবার থেকে শুরু হচ্ছে এসআইআরের(SIR) হেয়ারিং পর্ব। নির্বাচন কমিশন বিএলও-দের মাধ্যমে যাদের নোটিশ পাঠিয়েছে তাদের হেয়ারিং পর্বে উপস্থিত...

সিনিয়র সিটিজেন সলমন, জন্মদিনের পার্টিতে বলিউড নক্ষত্রদের সঙ্গে হাজির ধোনিও

শাহরুখ খানের পর সলমন(Salman Khan ),সিনিয়র সিটিজেনের তালিকায় আরও এক বলিউড নক্ষত্র। ক্যালেন্ডারের পাতা বলছে শনিবার ২৭ ডিসেম্বর...