Thursday, August 28, 2025

রাজ্যের বিশেষজ্ঞ কমিটি বলল বাংলায় করোনায় মৃত ৭, খানিক বাদেই মুখ্যসচিব জানালেন করোনায় মৃত ৩!

Date:

পশ্চিমবঙ্গে করোনার মৃত্যুসংখ্যা নিয়ে জটিল ধাঁধা তৈরি হয়েছে প্রশাসনের অন্দরেই। বিভ্রান্ত রাজ্যবাসীও। বিরোধী নেতারা অনেকেই অভিযোগ করছেন, ডেঙ্গুর মত করোনা নিয়ে মৃত্যুর তথ্য চাপতে চাইছে প্রশাসন। পাশাপাশি আশঙ্কা তৈরি হচ্ছে, করোনার মত অতি সংক্রামক ব্যাধির ক্ষেত্রে তথ্য গোপনে আরও জটিলতা তৈরি হবে না তো?

প্রশ্নটা উঠতে শুরু করেছে এরাজ্যে করোনার মৃত্যুসংখ্যাকে কেন্দ্র করে। রাজ্যেরই তৈরি করে দেওয়া বিশেষজ্ঞ কমিটির চিকিৎসকরা বৃহস্পতিবার নবান্নে বসে স্পষ্ট জানালেন, গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গিয়েছেন ৪ জন। সবমিলিয়ে রাজ্যে করোনায় মৃত্যুসংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৭। আশ্চর্যজনকভাবে এর খানিক বাদে সেই নবান্নেই সাংবাদিক সম্মেলন করে নিজেদেরই বিশেষজ্ঞ কমিটির রিপোর্ট খারিজ করলেন মুখ্যসচিব রাজীব সিংহ। তিনি বললেন, রাজ্যে করোনায় মৃত্যুসংখ্যা আসলে ৩। বাকি চারজনের করোনা পজিটিভ ধরা পড়লেও তাঁরা অন্য অসুখে আক্রান্ত হয়ে মারা গিয়েছেন। এর মধ্যে দুজনের মৃত্যুর পর করোনা পজিটিভ ধরা পড়েছে। মুখ্যসচিবের আর্জি, দয়া করে আতঙ্ক ছড়াবেন না। করোনা পজিটিভ হলেও চারজনের মৃত্যু করোনাতেই হয়েছে এমন কথা নিশ্চিতভাবে বলা যাবে না। অর্থাৎ মোদ্দা কথা হল, করোনা সংক্রমণ হলেও যেহেতু তাঁদের আগে অন্য শারীরিক সমস্যা ছিল তাই তাঁরা করোনাতেই মারা গিয়েছেন তা প্রমাণ হয় না। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যসচিবের এই জটিল ও বিচিত্র ব্যাখ্যার পর সঙ্গতভাবেই কিছু প্রশ্ন উঠছে।

1) করোনা মোকাবিলায় বিভিন্ন ক্ষেত্রের বিশিষ্ট চিকিৎসকদের নেতৃত্বে বিশেষজ্ঞ কমিটি রেখে লাভ কী, যদি মৃত্যুর কারণ নিয়ে চিকিৎসকদের ব্যাখ্যা খারিজ করে আমলারাই ব্যাখ্যা দেন?

2) মৃত্যুসংখ্যা কমিয়ে দেখালে তা রাজ্যের করোনাযুদ্ধে কতটা সহায়ক হবে?

3) কোনও কঠিন রোগাক্রান্ত ব্যক্তি হাসপাতালে ভর্তির পর যদি করোনা পজিটিভ দেখা যায় এবং তিনি মারা যান তাহলে কি করোনা আক্রান্তের মৃত্যু হয়েছে বলা হবে না? সেক্ষেত্রে তাঁর পরিবারের সদস্যদের কি কোয়ারানটিনে থাকতে বলা হবে?

4) অন্য রোগে চিকিৎসাধীন ব্যক্তি করোনা পজিটিভ ধরা পড়লে এবং তাঁর মৃত্যু হলে মরদেহ সৎকারের সময় কি বিশেষ প্রক্রিয়া মানা হবে? নাকি অন্য যেকোনও ক্ষেত্রের মত পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হবে?

5) সেক্ষেত্রে কোনও সংক্রমণ হলে দায় কার?

এরাজ্যে করোনা সংক্রমিত কয়েকজন সহনাগরিকের দুঃখজনক মৃত্যুর পর প্রশাসনের একাংশে সংখ্যা কমিয়ে দেখানোর তৎপরতায় এই প্রশ্নই জোরালো হচ্ছে। মৃত্যুর কারণ চিকিৎসকদের চেয়েও আমলারা কি তাহলে ভাল বোঝেন?

Related articles

রজতজয়ন্তীতে ডব্লিউবিএনইউজেএসকে উচ্চ প্রশংসা, মুখ্যমন্ত্রীকে ধন্যবাদ প্রধান বিচারপতির

কলকাতার পশ্চিমবঙ্গ জাতীয় আইন বিশ্ববিদ্যালয় (ডব্লিউবিএনইউজেএস)-এর উৎকর্ষতা এখন বেঙ্গালুরুর থেকেও এগিয়ে—রজতজয়ন্তী অনুষ্ঠানে এমন মন্তব্য করলেন কলকাতা হাই কোর্টের...

এসএসসি নিয়োগ পরীক্ষা পিছবে না, আবেদন খারিজ করল সুপ্রিম কোর্ট 

স্কুল সার্ভিস কমিশনের নিয়োগ পরীক্ষা পিছিয়ে দেওয়ার দাবিতে সুপ্রিম কোর্টে মামলা করেও লাভ হলো না কিছু প্রার্থীর। দেশের...

যাত্রীদের জন্য দুঃসংবাদ! রবিবার টালিগঞ্জ থেকে ক্ষুদিরাম পর্যন্ত বন্ধ মেট্রো 

কলকাতার ব্লু লাইনের যাত্রীদের জন্য দুঃসংবাদ। আগামী রবিবার মহানায়ক উত্তম কুমার (টালিগঞ্জ) থেকে শহিদ ক্ষুদিরাম স্টেশন পর্যন্ত বন্ধ...

এনএইচএম কর্মীদের বড় উপহার, উৎসবের মুখে বোনাস ঘোষণা রাজ্যের 

উৎসবের দোরগোড়ায় জাতীয় স্বাস্থ্য মিশনের কাজে নিযুক্ত রাজ্যের স্বেচ্ছাসেবক ও চুক্তিভিত্তিক কর্মীদের জন্য বড় ঘোষণা করল রাজ্য সরকার।...
Exit mobile version