ময়দানে তাঁকে চেনেন না এমন মানুষ নেই। গড়ের মাঠ থেকে যুবভারতী, সেখান থেকে শহর পেরিয়ে বারাসত, কল্যাণী অথবা শিলিগুড়ির কল্যাণী স্টেডিয়াম, অবাধ যাতায়াত তাঁর। তা সে ইস্টবেঙ্গল হোক, মোহনবাগান-মহামেডান কিংবা অন্য দলের সমর্থক বা কর্মকর্তা। যাঁদের সঙ্গে নিয়মিত ময়দানি ফুটবলের যোগাযোগ, তাঁদের মধ্যে একবার অন্তত তাঁর কাছ থেকে লজেন্স কিনে খাননি এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া যাবে না। তিনি লজেন্স মাসি। কেউ কেউ আবার তাঁকে লজেন্স দিদি বলেও ডাকেন। এক কথায় সকলের প্রিয় এই লজেন্স মাসি বা দিদি। তাঁর প্রকৃত নাম যমুনা দাস, সেটা অব্যশ অনেকেই জানেন না।

তাঁর প্রানের চেয়েও প্রিয় ইস্টবেঙ্গলের ম্যাচ থাকলেই মাঠে হাজির হয়ে যান লজেন্স মাসি। পরণে থাকে প্রিয় ক্লাবের জার্সির সঙ্গে মেচিং করা লাল-হলুদ শাড়ি। মাথায় ফেট্টি, যেখানে লেখা ইস্টবেঙ্গল। আর হাতে বিশাল লজেন্স-এর প্যাকেট। সেখানে অবশ্য বিশেষ ধরনের রঙের বালাই নেই। যেখানে মিলেমিশে একাকার হয়ে যায় লাল-হলুদ, সবুজ-মেরুন, সাদা-কালো।

সকলের প্রিয় সেই লজেন্স মাসি যমুনা দাস লকডাউনে ভীষণ সমস্যায়। রোজগার পুরোপুরি বন্ধ। শেষ উপার্জন করেছিলেন আইএসএল-এর ম্যাচে। কিন্তু করোনার গ্রাসে এখন সব বন্ধ। যমুনা মাসি এক বছর হলো স্বামীকেও হারিয়েছেন। এখন আগরপাড়ায় তাঁর বাড়িতে নুন আনতে পান্তা ফুরোয়। ব্যাংকে স্বল্প কিছু জমানো আছে, কিন্তু আধার সমস্যায় এই দুর্দিনের বাজারে সেই টাকাও তুলতে পারছেন না যমুনাদেবী।

এই কঠিন সময়ে সকলের পরিচিত ময়দানের লজেন্স মাসির পাশে দাঁড়ালো বাম ছাত্র-যুবরা। আজ, রবিবার যমুনা দাসের হাতে জীবন ধারণের জন্য নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস তুলে দেওয়া হলো SFI-DYFI এর পক্ষ থেকে। এদিন তাঁর হাতে চাল-ডাল-আলু-পিয়াঁজ-তেল-মশলা-ডিম ইত্যাদি তুলে দেওয়া হয়।

তবে এই প্রথম নয়, লকডাউন ঘোষনার কিছুদিনের মধ্যেই এলাকার SFI ও DYFI-এর পক্ষ থেকে লজেন্স মাসির পাশে দাঁড়ানো হয়েছিল। ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের পক্ষ থেকেও সাহায্য করা হয়েছে তাঁকে।
