রাজস্থানের সিকার জেলায় আটকে থাকা ভিন রাজ্যের পরিযায়ী শ্রমিকরা এই সংকটকালেও নজির সৃষ্টি করলেন৷

লকডাউনের জেরে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে আটকে পড়েছেন লক্ষ লক্ষ শ্রমিক। রাজস্থানের সিকার জেলাতেও এভাবেই আটকে আছেন দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে কাজের জন্য আসা অসংখ্য শ্রমিক৷ আটকে যাওয়া এই শ্রমিকদের জেলার দু’টি স্কুলে রেখে খাবারের বন্দোবস্ত করেছে স্থানীয় প্রশাসন।

আর তাতেই কৃতজ্ঞতায় আপ্লুত হয়ে সংশ্লিষ্ট স্কুল বিল্ডিং দু’টি রং করে দিলেন ওখানেই আশ্রয় ও খাদ্য পাওয়া পরিযায়ী শ্রমিকরা।
গত ২৬ দিন ধরে সিকার জেলার দু’টি স্কুলে কোয়ারেন্টাইনে রয়েছেন ৫৪ জন পরিযায়ী শ্রমিক। বিহার, উত্তরপ্রদেশ, হরিয়ানা, মধ্যপ্রদেশ থেকে তাঁরা কাজের জন্য রাজস্থান এসেছেন। দেশজুড়ে লকডাউন ঘোষণা হওয়ার পর তাঁরা আর বাড়ি ফিরতে পারেননি। এই পরিযায়ী শ্রমিকদের সিকারের শহিদ সীতারাম কুমাওয়াত এবং কে এল তাম্বি হাই স্কুলে রেখে খাওয়া-দাওয়ার ব্যবস্থা করেছে জেলা প্রশাসন।

আর তারই প্রতিদান হিসেবে স্কুলের দু’টির বিল্ডিং রং করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন ওই পরিযায়ী শ্রমিকরা। শুধু স্কুল বিল্ডিং রং করাই নয়, স্কুলের মাঠ ও বাগানগুলিকেও সাজিয়ে দিয়েছেন তাঁরা। ওই পরিযায়ী শ্রমিকদেরই একজন, হরিয়ানার হিসার জেলার বারওয়ালার বাসিন্দা শঙ্কর সিং বলেছেন, “ওঁরা আমাদের চা, বিস্কুট, জিলিপি, ক্ষীর ইত্যাদি খাবার দিয়েছেন। প্রতিদানে আমরা কিছু দিতে চেয়েছিলাম। অনেক জোরাজুরির পর গ্রামপ্রধান আমাদের অনুরোধ করেন দু’টি স্কুলের বিল্ডিং রং করে দেওয়ার জন্য৷”

দেশে লকডাউন ঘোষণা হওয়ার পর বন্ধ হয়ে যায় আন্তঃরাজ্য পরিবহণ। সঞ্চয়ের টাকা শেষ হয়ে যাওয়ায় পায়ে হেঁটেই বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দেন ওই শ্রমিকদের একাংশ। পথে পুলিস তাঁদের আটকে স্কুলে রাখার বন্দোবস্ত করে। গ্রামপ্রধান রূপসিং শেখাওয়াত বলেছেন, ‘মহকুমাশাসক আমাকে জিজ্ঞাসা করেছিলেন এই শ্রমিকদের গ্রামের স্কুল দু’টিতে রাখা যায় কি না? আমি সঙ্গে সঙ্গে রাজি হয়ে যাই। শুরু হয়ে যায় ওঁদের থাকা-খাওয়ার বন্দোবস্ত করার পালা। গ্রামবাসীরাও সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেন। ওরাও বিনিময়ে আমাদের এলাকার উন্নয়নে সাহায্য করলেন৷ এমন মানসিকতা বিরল৷”
