লকডাউনের আগে থেকেই বন্ধ শুটিং। স্টুডিও পাড়া দীর্ঘদিন শোনেনি সাউন্ড-ক্যামেরা-অ্যাকশন শব্দগুলি। ধীরে ধীরে জনজীবন স্বাভাবিক করার প্রচেষ্টা চালাচ্ছে সরকার। এই পরিস্থিতিতে শুটিংয়ের অনুমতি পাওয়া এখন সময়ের অপেক্ষা। কিন্তু তার আগে কিছু নিয়ম চূড়ান্ত করতে চায় ডিরেক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অফ ইস্টার্ন ইন্ডিয়া (ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশন)। শুটিং চলাকালীন মেনে চলতে হবে এই বিধিনিষেধ। তার জন্য সম্প্রতি একটি তালিকা প্রকাশ করেছে।

কী আছে সেই তালিকায়?

• ফিকশন ও নন-ফিকশন দু ক্ষেত্রেই কোনও কলাকুশলী অসুস্থ থাকলে ফিটনেস সার্টিফিকেট জমা দিয়ে কাজে যোগ দিতে হবে।

• যিনি ১৪ দিনের কোয়রান্টিনে গিয়েছিলেন, তাঁকে কোভিড-১৯ পরীক্ষার নেগেটিভ সার্টিফিকেট জমা দিতে হবে। না হলে ছ’মাসের জন্য সাসপেন্ড করা হবে।


• শিল্পী কিংবা টেকনিশিয়ানদের মধ্যে কেউ অন্তঃসত্ত্বা হলে বা পরিবারের কোনও সদস্য সন্তানসম্ভবা হলে, কোনও ভাবেই তিনি শুটিং স্পটে আসার অনুমতি পাবেন না।

• মেকআপ চলাকালীন একটি ঘরে দুই বা তিনজনের বেশি মানুষ থাকবেন না।

• ফ্লোরে ব্যবহৃত বাথরুম পরিষ্কার করা, পরিশ্রুত পানীয় জলের ব্যবস্থা রাখতে হবে।

• টেকনিশিয়ানদের প্রত্যেককে পিক আপ এবং ড্রপ দেওয়ার পরিকল্পনা করা হচ্ছে।

• বড় গাড়িতে 5জন এবং ভ্যানে 8জনের বেশি কাউকে নেওয়া যাবে না।

• প্রতিদিন গাড়িটি স্যানিটাইজ় করতে হবে।

• বাইরে থেকে আসা গাড়ির ড্রাইভার বা অন্য কারও শুটিং ফ্লোরে ঢোকার অনুমতি থাকবে না।

• নন-ফিকশন শোয়ে দর্শক প্রয়োজন হলে আগাম অনুমতি নিতে হবে।
• ফিকশন দৈনিক ১২ ঘণ্টা এবং নন-ফিকশন ১৪ ঘণ্টার বেশি শুটিং করা যাবে না।
• ফিকশনের ক্ষেত্রে শিল্পী ছাড়া ২৩-২৫ জনেই শুটিং সারতে হবে।
• নন-ফিকশনে সব ডিপার্টমেন্টের মোট ৬০ জন মিলে কাজ করা যাবে।
• এমন দৃশ্য শুট করতে হবে, যাতে দু’-তিনজন বেশি অভিনেতা থাকবেন না।
• স্টোরি লাইন ও স্ক্রিপ্ট এমন ভাবেই লিখতে হবে, যাতে সমস্ত নিয়ম পালন করা যায়।
• শুটিং ফ্লোরে ঢোকার আগে প্রত্যেকের থার্মাল স্ক্রিনিং করতে হবে।
• বাইরের পোশাক পরে ফ্লোরে ঢোকা যাবে না।
• ফ্লোরে পরার জন্য আগে থেকে আলাদা পোশাক রাখা থাকবে।
• ফ্লোরে ঢোকার আগে বাইরের পোশাক বদলে সেটের পোশাক পরতে হবে। বেরোনোর আগে সেটি বদল করতে হবে।
• রোজ ফ্লোরের পোশাক কাচাও বাধ্যতামূলক।
• শুটিং চলাকালীন প্রত্যেক টেকনিশিয়ানের মাস্ক, গ্লাভস, জুতো পরা বাধ্যতামূলক।
• মেকআপ আর্টিস্ট, অ্যাসিস্ট্যান্ট মেকআপ আর্টিস্ট, হেয়ার ড্রেসারদের পিপিই কিট দেওয়ার কথা ভাবা হচ্ছে।
• থাকবে স্যানিটাইজ়ার টানেল। প্রত্যেককে সেটি ব্যবহার করতে হবে।
• সমস্ত টেকনিশিয়ানকে খাবার আনতে হবে বাড়ি থেকে। তার জন্য অবশ্য টেকনিশিয়ানদের খাবারের বাজেট দিতে হবে প্রযোজকদের।
• শিল্পী ও টেকনিশিয়ানকে খাবার সময় নিজেদের মধ্যে অন্তত তিন ফুট দূরত্ব বজায় রাখতে হবে।
• খাবারের জন্য ইউজ় অ্যান্ড থ্রো প্লেট, চামচ, গ্লাসের বন্দোবস্ত করবে ডিরেক্টরস অ্যাসোসিয়েশন নিজে।
• সমস্ত আউটডোর শুটিং বন্ধ, যা শুট করার, তা সারতে হবে ইনডোরেই।
• নন-ফিকশনে শুটিং চলাকালীন সঞ্চালক ও প্রতিযোগীদের মধ্যে ন্যূনতম তিন-পাঁচ ফুটের দূরত্ব বজায় রাখতে হবে।
এই সব নিয়ম বলে বদ করতে সরকার, চিকিৎসক ও ইম্পার অন্য সংগঠনের অনুমোদনের প্রয়োজন রয়েছে। প্রযোজনা সংস্থা সহ বাকিরা সকলে একমত হলে, তবেই নিয়ম কার্যকর করা হবে।