স্যার আসছেন আসুন

নীলাঞ্জন ঘোষ

ডিয়ার স্যার,

সে আপনি আসছেন আসুন। কিছু অল্প ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা-টেলাকাগুলো একটু ঘুরে ফুরে দেখুন। লোকাল লোকদের হাতফাত ধরে আশ্বাস ফাস্বাস দিন। ন্যাশনাল মিডিয়া নিশ্চয়ই কভার টভার করবে পুরোটা। তাদের সামনে বলুন ‘অত্যন্ত দুঃখজনক ব্যাপার। ভাজপা সরকার বাঙ্গাল এর সাথে আছে..’

তারপর রাজ্যপালের কাঁধে হাত রেখে ক্ষয়ক্ষতির পর্যালোচনা টর্যালোচনা করুন একান্তে।
‘তেমন কিছু না স্যার, সামান্য, নূন্যতম ব্যাপার…’, শুনতে শুনতে চা ফা খান।
তারপর রাজ্যবাসীর উদ্দেশ্যে কিছু ঢপ ফপ ছুঁড়ে মারুন। ‘ ভাইয়ো আউর বেহনো, প্রত্যেক ক্ষতিগ্রস্তদের একাউন্টে লাখ লাখ করে পাঠানো হবে..’।
চায়ের কাপটা শূন্য হলে হেলিকপ্টারে বসে ফুরুত তুরুত হয়ে যান।

তবে শুনুন স্যার, আপনার সরকার পর্যাপ্ত অনুদান দিক বা না দিক, গোটা দেশ ‘ইশ! আহা রে!’ করুক বা না করুক, টুইটারে চর্চা হোক বা না হোক, আমাদের হাঁড়িতে আজ ভাত চাপুক বা না চাপুক, কাল শ্মশানে জায়গা থাকুক বা না থাকুক, কিন্তু পরশু… পরশু আমরা ফের উঠে দাঁড়াবো স্যার।

কারণ আমরা বাঙালি। আর এটা বাংলা।

স্যার, আপনি এবং আপনার দলের লোকেরা ছোটবেলায় ইতিহাসের পাতা ভালো করে ওল্টাননি বোধহয়, ওল্টালে বাঙালিদের সঠিক ভাবে চিনতে পারতেন। আমাদের জাত সম্বন্ধে একটা স্পষ্ট ধারণা তৈরি হতো। বুঝতে পারতেন বাংলা এখনো কেন অধরা আপনার। এবং এটাও জানতে পারতেন, যে বাঙালি লোকটা এই দেশের জাতীয় সংগীতটা লিখে গ্যাছেন, সেই লোকটাই আর একটা গান বাঙালিদের শিখিয়ে দিয়ে গ্যাছেন, ‘যদি তোর ডাক শুনে কেউ না আসে…’। এটা আসলে গান নয় স্যার। এটা আমাদের মন্ত্র।
আমাদের রক্তে মিশে আছে স্যার এই মন্ত্র।

তাই স্যার, আপনি কালকে এসে যাই করুন না কেন, আমরা যা মনে রাখার, তা নোট করে নিয়েছি। সামান্যতম, নূন্যতম সমস্তকিছুও মনে রাখা হবে স্যার।

ইতি,
এক পশ্চিমবঙ্গবাসী।

নীলাঞ্জন ঘোষ

Previous articleফের জায়গায় প্রতিষ্ঠিত করার লড়াই সৌরভের
Next articleআমফান বিধ্বস্ত এলাকা পরিদর্শনে রাজ্যে এলেন প্রধানমন্ত্রী