“ভাবছি, তুই কী ভাববি! কিন্তু নিজেকে আটকাতে পারছি না”, কার জন্য লিখলেন শুভশ্রী?

করোনা সংক্রমণ। সেটা থেকে বাঁচতে লকডাউন। মানুষের মৃত্যু। অর্থনীতির বেহাল দশা। এইসব মন খারাপের খবরের মধ্যে এক টুকরো খুশির হাওয়া এনে দিয়েছিলেন শুভশ্রী গঙ্গোপাধ্যায়। জানিয়েছিলেন মা হতে চলেছেন তিনি। তারপরে এল আমফান। চারিদিকে আরও ধ্বংসের ছবি। আরও হাহাকার। আরও অসহায়তা। এসব দেখে নিজের গর্ভস্থ সন্তানের জন্য কলম ধরলেন শুভশ্রী গঙ্গোপাধ্যায়। সন্তানের উদ্দেশে লিখলেন চিঠি। লিখলেন, “মনটা বড্ড খারাপ। সারাক্ষণ চেষ্টা করছি মনটাকে ঠিক রাখার, কিছুতেই পারছি না। সবাই বলে প্রেগনেন্ট হলে হাসিখুশি থাকতে হয়, কী করে থাকব বল তো! তোর কথা ভেবেই সব ভোলার চেষ্টা করছি। কিন্তু এত ধ্বংসস্তূপ আগে কখনও দেখিনি যে। কান্না চেপে রাখতে পারছি না। নিজের মনটাকে বোঝানোর চেষ্টা করছি যে, না এখন মন খারাপ করলে চলে না! ভাবছি তুই কী ভাববি? কিন্তু নিজেকে আটকে রাখতে পারছি না।”

সন্তানকে লেখা এই চিঠি নিজের ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টে পড়ে শুনিয়েছেন রাজ-ঘরণী।
চিঠির প্রতি ছত্রে ছত্রে উল্লেখ আছে অসহায়তার কথা। তিনি লিখেছেন, কলকাতার সবুজ দেখাতে পারলেন না সন্তানকে।
“৮২ হাজার ঘর ভেঙে গেল এই ঝড়ে। কী করছে এখন সেই গৃহহারা মানুষগুলো? তার ওপরে করোনার প্রভাব তো বাড়ছেই। এমনিই কম অভাব ছিল না ওদের। এখন মুখে তোলার অন্নটুকুও নেই। আশ্রয় বলতে মাথার ছাদটুকুই ছিল সেটাও উড়ে গেল।” এসব দেখে তিনি মন ঠিক রাখতে পারছেন না; জানিয়েছেন শুভশ্রী।
তাঁর লেখায় উঠে এসেছে আরও একটি শিশুর কথা। তিনি লিখছেন, “আজকে সারাদিন একটা ছবি সোশাল মিডিয়ায় ঘোরাফেরা করছে, বছর চারেকের একটা বাচ্চা বুক সমান জল পেরিয়ে খাবার নিতে এসেছে ত্রাণ শিবিরে। এরপরেও তোর কথা ভেবে কী করে বেশি বেশি খাই বলতো? এই তো আর কিছু বছর পরে তুইও ওর সমানই হবি। ও তো তোর মতোই। কী দোষ করেছিল ও?”
তবে চিঠির শেষের দিকে তিনি লিখেছেন এগুলো হয়তো প্রকৃতির প্রতি মানুষের অবহেলা নিপীড়নের প্রতিশোধ তবে ভাবী মায়ের আশা, বাংলা একদিন ঘুরে দাঁড়াবেই। ধীরে ধীরে স্বাভাবিক ছন্দে ফিরবে তিলোত্তমা।

Previous articleভারতে একদিনে করোনায় রেকর্ড আক্রান্ত ৬৯৭৭
Next articleশুভেচ্ছা জানিয়ে বাড়িতে থেকে ঈদ পালনের অনুরোধ মুখ্যমন্ত্রীর