Thursday, August 28, 2025

আমফান ইস্যুতে ফিরহাদ হাকিম ও পুরপ্রশাসনের সমালোচনা করায় তৃণমূল শোকজ করেছে মন্ত্রী সাধন পান্ডেকে।

চিঠি দিয়েছেন উত্তর কলকাতা জেলা সভাপতি সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়।
এখন বিতর্ক বেধেছে এই পত্রদাতাকে নিয়ে।
দলেও তীব্র প্রতিক্রিয়া।

এহেন বিপর্যয়ের সময় সাধনবাবু প্রকাশ্যে মুখ না খুললেই ভালো হত বলে মনে করেন দলের বড় অংশ। এটা তিনি ঠিক করেননি। আবার কোথাও কোনো ভুল ধরা মানেই দলের শত্রুতা নয়, এটাও বাস্তব। কোনো শুভানুধ্যায়ীও কোনো মুহূর্তে ক্ষোভ জানিয়ে ফেলতে পারেন।

কিন্তু তাঁকে সামলে নেওয়া যেত। তার বদলে শোকজ ইত্যাদির মাধ্যমে গুঁতিয়ে গুঁতিয়ে ক্ষত বাড়ানোটা চূড়ান্ত অপরিণত কাজ।

এখানে আবার সমস্যা পত্রদাতা নিয়ে।
পার্থ চট্টোপাধ্যায়, সুব্রত বক্সিরা সাধনবাবুকে চিঠি দিলে বিতর্ক হত না।
বিতর্ক সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় চিঠি দেওয়ায়।
তৃণমূলের বক্তব্য, দলের জেলা সভাপতি হিসেবে সুদীপ চিঠি দেওয়াই স্বাভাবিক।
দলেরই একাংশের বক্তব্য, দল ব্যাপারটা সবসময় ছাপানো বই অনুযায়ী চলে না।

আজ সাধনবাবুকে শৃঙ্খলাভঙ্গের জন্য যে সুদীপ শোকজ করছেন, তিনিই দলবিরোধী কাজের জন্য ছবছর সাসপেন্ড ছিলেন। 2004 লোকসভা ভোটে তিনি কংগ্রেসের সমর্থনে জোড়া মোমবাতি চিহ্নে নির্দল লড়ে ভোট কেটে তৃণমূলকে হারান। তাঁর স্ত্রী নয়না বন্দ্যোপাধ্যায় সেসময় ‘আনন্দলোক’ পত্রিকায় এক সাক্ষাৎকারে যে ভাষায় নেত্রীকে আক্রমণ করেছিলেন, তা বেনজির। সেটি এখন নতুন করে লিফলেট করার কাজ চালাচ্ছে একটি মহল। পরে 2009 সালের লোকসভা নির্বাচনের মুখে সাংবাদিক কুণাল ঘোষের সক্রিয়তায় সুদীপ দলে ফেরেন। নেত্রীকে বুঝিয়ে রাজি করিয়ে দিল্লিতে দুজনের দেখা করিয়ে সেই অধ্যায় শেষ করেছিলেন কুণাল। নেত্রীর বাড়িতে নৈশভোজের টেবিলে ভুল স্বীকার করে দলে ফিরে উত্তর কলকাতায় প্রার্থী হন সুদীপ।

এখন সেই সুদীপই শৃঙ্খলার প্রশ্নে সাধনকে শোকজ করায় দলের কর্মীদের বড় অংশ ক্ষুব্ধ। উত্তর কলকাতায় কেউ ইতিহাস ভোলেননি। যে কারণে এলাকার বিরাট অংশে লোকসভায় সুদীপ পিছিয়ে। তিনি জিতেছেন বিশেষ কয়েকটি পকেট থেকে।
যাঁরা মনে করছেন এই সময়ে সাধন মিডিয়াতে সরব হয়ে অন্যায় করেছেন, তাঁরাও বলছেন যে শোকজের গুরুত্বটাই চলে গেল সুদীপবাবু চিঠি দেওয়ায়। এখন ক্ষমতাসীন দলে সবই চলতে পারে। কিন্তু এতে সমস্যার স্থায়ী সমাধান হয় না। উল্টে ক্ষত বেড়ে থাকে।

সুদীপশিবিরের বক্তব্য, জেলা সভাপতি হিসেবে তিনি নির্দেশ পালন করেছেন। এখানে তাঁর আর কিছু করার নেই।

উত্তর কলকাতার রাজনীতিতে অবশ্য সাধনবাবু কোণঠাসা। অতীন ঘোষ, শশী পাঁজা, পরেশ পাল সকলেই সাধনবাবুর বিরোধী। ফলে আপাতত সাধন পান্ডের তরফে ব্যাকফুটে চলে যাওয়া ছাড়াও কিছু করার নেই। শুভানুধ্যায়ীরা তাঁকে শোকজের উত্তরে নরম দুঃখপ্রকাশের চিঠি দিয়ে জটিলতা কাটানোর পরামর্শ দিচ্ছেন।

 

Related articles

ফাঁকা কেন্দ্রগুলিতে দ্রুত ইআরও–এইআরও নিয়োগের নির্দেশ কমিশনের 

ফাঁকা পড়ে থাকা একাধিক বিধানসভা কেন্দ্রে দ্রুত ইলেক্টোরাল রেজিস্ট্রেশন আধিকারিক (ইআরও) এবং অ্যাসিসটেন্ট ইলেক্টোরাল রেজিস্ট্রেশন আধিকারিক (এইআরও) নিয়োগের...

নথিভুক্ত অথচ নিষ্ক্রিয় রাজনৈতিক দলগুলিকে শুনানিতে তলব করল কমিশন 

নির্বাচন কমিশনের নির্দেশে ফের সক্রিয় হল রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের দফতর। নথিভুক্ত হলেও কার্যত নিষ্ক্রিয় রাজনৈতিক দলগুলিকে শুনানিতে...

সুখবর! পুজোর আগে পার্ট টাইম কর্মীদের বেতন বাড়াল রাজ্য 

পুজোর আগে রাজ্যের আংশিক সময়ের কর্মীদের জন্য বড় সুখবর দিল নবান্ন। বিভিন্ন দফতর ও সরকার অধীনস্থ সংস্থায় কর্মরত...

অভিষেককে প্রাণনাশের হুমকি! হরিয়ানার আম্বালা থেকে গ্রেফতার মুর্শিদাবাদের যুবক

তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে প্রাণে মারার হুমকি দিয়ে গ্রেফতার হলেন এক যুবক। হরিয়ানার আম্বালা থেকে...
Exit mobile version