Wednesday, August 27, 2025

আর কী কী দেখাবে আনন্দবাজার পত্রিকা!

Date:

Share post:

আর কী কী দেখাবে আনন্দবাজার পত্রিকা! শতাব্দী প্রাচীন সংবাদপত্রটির স্লোগান বেশ মনোহরণকারী… পড়তে হয় নইলে পিছিয়ে পড়তে হয়! ১জুন, ২০২০-র এডিশনটি হাতে নিলে আপনি নিশ্চিতভাবে থতমত খেয়ে বলবেন… পড়তে হয়, নইলে অজানা থেকে যায়, কিংবা মাঠের ভাষায়… হয় হয়, জানতি পারনি!

কেন? সংবাদপত্রের দ্বিতীয় পাতার একেবারে তলার দিক, যেখানে ভূপৃষ্ঠ এসে মেশে, সেখানে প্রিন্টার্স লাইন। সেখানে ৩১ মের এডিশনের সঙ্গে দুটি পরিবর্তন। এক, সম্পাদক অর্নিবাণ চট্টোপাধ্যায়ের জায়গায় ঈশানী দত্ত রায়, এবং দুই. সম্পাদকের নামের আগে বিশাল একটি বাক্য। যেখানে লেখা : পিআরবি অ্যাক্ট অনুযায়ী সংবাদ নির্বাচনের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক।

সংবাদপত্র জগতে এই দু’নম্বর বিষয়টি শুধু নতুন নয়, বিচিত্র এবং শতাব্দী প্রাচীন সংবাদপত্রে দেখতে পাওয়া নিশ্চিতভাবে বিস্ময় বাড়িয়ে দেয়। যিনি সম্পাদক, তিনিই যে সংবাদ নির্বাচনে শেষ কথা বলবেন, সেটা তো সর্বজনবিদিত। কোন আইন বলে তিনি এই দায়িত্ব পেয়েছেন, তা কি আদৌ লিখে জানানোর দরকার? রাজ্যে সরকার চালানোর প্রশ্নে মুখ্যমন্ত্রীই যে শেষ কথা বলবেন এটা যেমন বাস্তব ও আইনি সত্য, সংবাদপত্রের সম্পাদকের ক্ষেত্রেও নিয়মটা অনেকটা সেইরকম। তাহলে? যাঁরা সংবাদপত্রের সঙ্গে যুক্ত তাঁরা বলছেন, এই নতুন উপাধিটি যোগ করে আসলে নতুন সম্পাদকের উপর শুরুতেই অনাস্থা প্রকাশ করে ফেলেছে ম্যনেজমেন্ট। প্রশ্ন উঠেছে যদি কেউ অভিযোগ জানাতে চান, মানহানির চিঠি পাঠাতে চান, কিংবা আমন্ত্রণ জানাতে চান, তাহলে তিনি কাকে সম্বোধন করে পাঠাবেন? কারণ, নতুন সম্পাদক তো পিআরবি আইন বলে শুধু তাঁর টেবিলে আসা সংবাদগুলির নির্বাচনের দায়িত্বে। তাহলে? অথচ সংবাদপত্রের নতুন সম্পাদক ঈশানী তরুণ, দায়িত্বশীল, যোগ্য এবং টিম লিডার হিসাবে প্রমাণিত। কিন্তু সংবাদপত্রের সর্বোচ্চ দায়িত্ব পেয়ে প্রথমেই তাঁকে মনে করিয়ে দেওয়া হলো, ভোটের প্রার্থী নির্বাচন আপনি করতে পারবেন, কিন্তু কীভাবে প্রচার করা হবে, ইস্যু কী হবে তা আপনার দায়িত্ব নয়! এ কোন সাংবাদিকতার পাঠ আমরা শিখছি শতাব্দী প্রাচীণ পাঠশালা থেকে!

সদ্য প্রাক্তন সম্পাদক অনির্বাণ চট্টোপাধ্যায়ের দায়িত্ব থেকে সরে যাওয়া নিয়ে সংবাদ জগতে নানা কথা। শোনা যাচ্ছে তাঁর চুক্তি শেষ হয়ে গিয়েছিল, কিছু আইনি জটিলতা তৈরি হয়েছে তাঁকে ঘিরে, সবই হাওয়ায় ভেসে আসা, যার নির্দিষ্ট কোনও তথ্য নেই। কিন্তু তাঁর পরেই অফিসে আর একজন যোগ্য সিনিয়র ছিলেন, যিনি ওই পদে বসার অন্যতম দাবিদার ছিলেন। দেবাশিস ভট্টাচার্য। সাংবাদিক মহলে যিনি ‘মামা’ নামেই পরিচিত। দরকারে যিনি সরাসরি মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে যোগাযোগও রাখতেন প্রতিষ্ঠানের হয়ে। তাঁকে ডিঙিয়ে ঈশানীর সম্পাদক হওয়া নিশ্চিতভাবে কারও কারও কাছে বিস্ময়কর। যদিও এটা বাস্তব, ঈশানী যোগ্য ও যথার্থ।

কিন্তু ক্ষমতা হস্তান্তর করতে গিয়ে আনন্দবাজার পত্রিকা যে উদাহরণ তুলে ধরলো, তা সংবাদপত্র জগতে বেনজির এবং সাংবাদিকতার পাঠ ভুলিয়ে দেওয়ার পক্ষে যথেষ্ট।

spot_img

Related articles

একসঙ্গে গণেশ পুজোয়! সুনিতা বললেন ‘আমার গোবিন্দা শুধুই আমার’

বিচ্ছেদের যাবতীয় গুঞ্জন উড়িয়ে এক সঙ্গে গোবিন্দা-সুনিতা (Govinda-Sunita)। বুধবার বাড়ির গণেশ পুজোয় (Ganesh festival) ভেস্তে দিলেন নিন্দুকদের সব...

আমার ইতিহাস জড়িয়ে রয়েছে: মহারাষ্ট্র নিবাসের গণেশপুজোয় মন্তব্য মমতার

১০১ বছরে পড়ল কলকাতার মহারাষ্ট্র নিবাসের গণেশপুজো (Ganesh Pujo)। বুধবার, সেই পুজোর উদ্বোধন করলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়...

ক্যালকাটা কাস্টমসের কাছে হার, সুপার সিক্সের পথ কঠিন করে ফেলল মোহনবাগান

কলকাতা লিগে(CFL) সুপার সিক্সের পথ আরও কঠিন করে ফেলল মোহনবাগান(Mohun Bagan)। বিএসএসের কাছে জয়ের পর ক্যালকাটা কাস্টমসের(Calcutta Customs...

দেশ-বিদেশের মানচিত্রে পর্যটনে উজ্জ্বল বাংলা! সামনে বড় লক্ষ্য: ইন্দ্রনীল সেন 

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দূরদর্শী নেতৃত্বে দেশ-বিদেশের পর্যটন মানচিত্রে ইতিমধ্যেই গুরুত্বপূর্ণ স্থান করে নিয়েছে বাংলা। তবে এখানেই থেমে থাকতে...