চন্দন বন্দ্যোপাধ্যায়

বেড়েই চলেছে সংক্রমণ, করোনা আক্রান্তের সংখ্যা । এরই মাঝে লকডাউনে ছাড়ের ফলে রাস্তায় গাড়ির ভিড়ে যানজট। রীতিমতো ছন্দপতন। দু-চাকার দৌলতে সকাল থেকেই কার্যত স্তব্ধ হয়ে গিয়েছে শহর। বারাকপুরের থেকে শ্যামবাজার পৌঁছাতে সময় লেগেছে ঘন্টা তিনেক । আর তার মাঝে চোখে লাগার মতো অনুপস্থিত দুটো জিনিস- মাস্ক আর সামাজিক দূরত্ব!
যদিও সরকারি তরফে জানানো হয়েছিল আজ ১ জুন থেকে রাস্তায় মিলবে পর্যাপ্ত সরকারি ও বেসরকারি বাস। এজন্য রবিবার বৈঠকেও বসেছিল বাস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন। সেখানেই সিদ্ধান্ত হয়েছিল আনলক-১ –এ সোমবার থেকে বেসরকারি বাস রাস্তায় নামাতে গেলে সবার আগে ভাড়া বাড়াতে হবে। তবেই সরকারি নিয়ম মেনে রাস্তায় বের হবে বাস। কিন্তু সেই ভাড়ার তালিকা চূড়ান্ত না হওয়ায় সোমবার সকালে দেখা গেল কোনও বেসরকারি বাসই বের হলেন না রাস্তায়।
বাস মালিকদের বক্তব্য, সিটের সংখ্যা মেনে যাত্রী নিয়ে বাস চালালে বিরাট লোকসানের মুখে পড়তে হবে । তাই ভাড়া বাড়ানোর জন্য মঙ্গলবার ফের পরিবহন দফতরে স্মারকলিপি জমা দেওয়া হবে। কর্মীদের বক্তব্য, “এই পরিস্থিতিতে যাত্রী নিয়ে সংক্রমিত আমরাও হতে পারি, সরকার আমাদের জন্য কিছু না ভাবলে আমরা বের হতে পারব না।”
পরিবহণ দফতরের আধিকারিকরা বেসরকারি বাস মালিক ও বাস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সঙ্গে বৈঠকে বসেছিলেন। সেখানে সোমবার থেকে বাস চালানোর অনুরোধ করেছিলেন আধিকারিকরা। সিট ক্যাপাসিটি অনুসারে বাস চালানোর সিদ্ধান্ত হয় ওই দিন। বাস মালিকদের পক্ষ থেকেও অনুরোধ করা হয়েছিল বাসগুলি স্যানিটাইজ করার ক্ষেত্রে সরকার যাতে পদক্ষেপ নেয়। প্রাথমিকভাবে প্রশাসনের ইতিবাচক প্রতিশ্রুতি পেয়ে বাস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন জানিয়েছিল, সোমবার থেকে শহরে বেসরকারি বাস রাস্তায় নামছে। কিন্তু সোমবার কার্যত দেখা গেল উল্টো চিত্র। বাসের চালক ও কর্মীরা, কেউই কাজে যোগ দিলেন না।
যানচলাচল স্তব্ধ হয়ে যাওয়ায় অফিস যাওয়ার জন্য যারা ৬৯দিন পর রাস্তায় বেরিয়েছেন তারা অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছেন ঘন্টা তিনেক ধরে। কেউ কেউ আবার পায়ে হেঁটেই অফিসে পাড়ি দিয়েছেন । কিন্তু বাসের দেখা মেলেনি । হাতেগোনা সরকারি বাসে ওঠার সুযোগ পাননি অধিকাংশই ।
নজিরবিহীন পরিস্থিতিতে শহর কলকাতার বিরাট অংশের মানুষ ত্রস্ত, বিরক্ত, ক্ষুব্ধ। সেই ক্ষোভ উপচে পড়ছে রাস্তাতেও।
