সুশান্ত সিং রাজপুতের অস্বাভাবিক মৃত্যুর পরে, বিভিন্ন অভিযোগ উঠে আসছে বলিউডের অন্দরে। কেউ কেউ বলছেন, আজও বলিউড বাইরের কাউকে আপন করে নিতে পারে না। আবার কারও মতে স্বজনপোষণ চক্রের মধ্যে পড়ে হারিয়ে যান প্রতিভাবান অভিনেতারা। আর এই পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে সুশান্তের মৃত্যুকে সামনে রেখে সলমন খান ও তাঁর পরিবারের বিরুদ্ধে সুর চড়ালেন দাবাং-এর পরিচালক অভিনব সিং কাশ্যপ। তিনি বলেন, এ পরিণতি তাঁরও হতে পারত। কিন্তু তিনি হেরে যাননি। তিনি হেরে যাবেন না, মাথা নোয়াবেন না। কী অভিযোগ অভিনবের? তাঁর কথায়, ২০১০-এ দাবাং-এর পর তাঁর কেরিয়ারের ক্ষতি করার চেষ্টা করেছেন সলমন ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা। দাবাং-এর সাফল্যের পর থেকেই তাঁর সমস্ত প্রজেক্ট সাবট্যাজ করার চেষ্টা করেছন তাঁরা। মনের জোর তলানিতে ঠেকেছিল অভিনবের।

সোশ্যাল মিডিয়ায় এ নিয়ে দীর্ঘ পোস্ট করেন পরিচালক। লেখেন কেন ১০ বছর আগে দাবাং-টু থেকে বেরিয়ে আসতে বাধ্য হয়েছিলেন। আরবাজ খান, সোহেল খান ও তাঁর পরিবারের বিরুদ্ধে সরাসরি অভিযোগের আঙুল তুলেছেন দাবাং-এর পরিচালক। তাঁর দাবি, খান পরিবার তাঁর কেরিয়ার নিয়ন্ত্রণে রাখতে চেয়েছিল। তাঁকে বারবার হেয় করেছেন আরবাজ খান। শ্রী অষ্টবিনায়ক ফিল্মসের সঙ্গে তাঁর দ্বিতীয় প্রজেক্ট এই খান ভাইরাই হতে দেননি বলে অভিযোগ অভিনবের। তিনি লিখছেন, “আরবাজ খান ব্যক্তিগতভাবে সেখানকার প্রধান রাজ মেহতাকে ফোন করেন এবং ভয় দেখান আমাকে নিয়ে কাজ করলে ফল ভুগতে হবে। ফলে আমায় সাইনিং অ্যামাউন্ট ফেরত দিতে হয়েছিল এবং ভায়াকম পিকচারসে যাই। সেখানেও একই ঘটনা ঘটে।” তাঁর প্রজেক্ট মাঝ পথে আটকে যায় এবং ৯০ লক্ষ টাকা সুদ-সহ সাত কোটি টাকা সাইনিং অ্যামাউন্ট ফেরত দিতে হয়। #metoo মুভমেন্ট অঙ্গ হিসেবে এবার #metoo #BoycottSalmanKhan মুভমেন্ট করতে চাইছেন অভিনব কাশ্যপ।

সে সময় তাঁর পাশে দাঁড়ায় রিলায়েন্স এন্টারটেইনমেন্ট। বেসরম নিয়ে কাজ করা শুরু করেন অভিনব। এখানে একটা মারাত্মক অভিযোগ তুলেছেন পরিচালক। তাঁর মতে প্রজেক্ট নষ্ট করার জন্য বারবার হুমকি মেসেজ আসত তাঁর মোবাইলে। এমনকী তাঁর বাড়ির মহিলাদের ধর্ষণ করা হবে বলেও হুমকি দেওয়া হয়। এর প্রভাব পড়ে তাঁর পারিবারিক জীবনেও। শেষ পর্যন্ত বিবাহ বিচ্ছেদ ও পরিবারের সঙ্গে সমস্ত সম্পর্ক শেষ হয়।
পাশাপাশি, ট্যালেন্ট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানিগুলির বিরূদ্ধেও সরব হয়েছে পরিচালক। অভিনবের অভিযোগ, ট্যালেন্ট ম্যানেজাররা দালালের মতো কাজ করে। তাদের পাল্লায় পড়ে অনেক প্রতিভাবান, উঠতি নায়ক-নায়িকার পরিণতি অবর্ণনীয় হয়। ছেলে-মেয়ে নির্বিশেষে যৌনপেশায় যেতে বাধ্য হন তাঁরা। বলিউডে রুপালি পর্দায় স্টার হওয়ার বদলে তাঁরা হারিয়ে যান রাতের অন্ধকারে। বলিউডের এই অচেনা দিককে কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছেন অভিনব।
সরকারের কাছে সুশান্তের মৃত্যুর পূর্ণ তদন্ত অনুরোধ করেছেন পরিচালক। আর জানিয়েছেন তাঁকে শেষ করে না দেওয়া পর্যন্ত তিনি মাথা নোয়াবেন না। সুশান্তের মতো হার মানবেন না অভিনব।
