প্রিয়াঙ্কা হত্যায় ইন্টারনেট দেখে বাড়িতেই পিস্তল-কার্তুজ বানিয়েছিল জয়ন্ত! চক্ষু চড়কগাছ গোয়েন্দাদের

রিজেন্ট পার্ক কলেজ ছাত্রী হত্যায় উঠে এলো চাঞ্চল্যকর তথ্য। অভিযুক্ত জয়ন্ত হালদারকে জেরা করে লালবাজারের হোমিসাইড শাখার তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন, যে আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে খুন করা হয়েছে তা পুরোপুরি জয়ন্ত-এর “হ্যান্ড মেড”! অর্থাৎ, বাড়িতে বসেই বন্দুক এবং কার্তুজ বানিয়েছিল পেশায় গাড়ির ড্রাইভার জয়ন্ত। কোনও বেআইনি অস্ত্র কারবারির কাছ থেকে সে এই বন্দুক বা কার্তুজ কেনেনি বলেই গোয়েন্দাদের জানিয়েছে প্রিয়াঙ্কা খুনে অভিযুক্ত যুবক। আর এটা জানার পরই গোয়েন্দাদের চক্ষু চড়কগাছ!

প্রিয়াঙ্কার শরীরের বুলেটের আঘাত দেখে প্রথম সন্দেহটা আসে গোয়েন্দাদের। কার্তুজের আঘাত পেলে সাধারণত যে ক্ষতের চিহ্ন হয়, প্রিয়াঙ্কার শরীরে তা ছিল একেবারেই অন্যরকম। অন্য ধরনের বুলেট থেকে এই খুন বলে জানা যায় ময়না তদন্তের রিপোর্টে। তারপরই গোয়েন্দারা জেরা শুরু করে জয়ন্ত লকে। কোথা থেকে সে এই বন্দুক এবং বুলেট পেল? জেরায় জয়ন্ত জানায়, সে এই কার্তুজ-বন্দুক কোথাও থেকে কেনেনি। নিজে হাতে বাড়িতে বসে বানিয়েছে।

এ বিষয়ে জয়ন্তকে লাগাতার জেরা করতেই বেরিয়ে আসে আরও চাঞ্চল্যকর তথ্য। জানা যায়, প্রেমিকাকে খুন করতে বন্দুক কেনেনি সে। বাড়িতে বসে ইন্টারনেট ঘেঁটে নিজেই বানিয়েছে বন্দুক। এমনকী, কার্তুজও তারই হাতে বানানো।

সাধারণ কোনও ওয়ান শটার বন্দুক তৈরির ব্যারেল-হ্যামার ও লোহার পাত লাগে। ইন্টারনেট ঘেঁটে ঘেঁটে তা বুঝে নেয় জয়ন্ত। বিভিন্ন হার্ডওয়্যারের দোকান গিয়ে সে প্রয়োজনীয় কাঁচামাল জোগাড় করে ফেলে। শুধু তাই নয়, বন্দুক-কার্তুজ বানানোর জন্য ওয়েল্ডিং মেশিনও কিনে আনে, তারপর বাড়িতেই ঝালাই করে বানিয়ে ফেলে ওয়ান শটার। বল-বেয়ারিং ও আতস বাজির মশলা দিয়ে তৈরি করে ফেলে কার্তুজ।

আদৌ তার হাতে তৈরি বন্দুক কাজ করবে কিনা সে ব্যাপারে সংশয় ছিল জয়ন্তর মধ্যেও। তাই প্রেমিকার মৃত্যু নিশ্চিত করতে বন্দুক-কার্তুজের পাশাপাশি ছুরিও নিয়ে গেছিল জয়ন্ত। গুলি করার পর সেটা দিয়ে প্রিয়াঙ্কাকে কুপিয়েছে বলেও জেরায় স্বীকার করে সে।

পুলিশ সূত্রে জানা যাচ্ছে, খুনের পর তাড়াহুড়ো করে পালাতে গিয়ে বন্দুক ও একটি কার্তুজ ড্রেনে ফেলে দেয় জয়ন্ত। সেই সবকিছু উদ্ধার করেছে তদন্তকারীরা। জয়ন্তর বক্তব্যের সঙ্গে সবকিছু মিলিয়ে দেখা হবে। সেক্ষেত্রে তার রিজেন্ট পার্ক ঢালি পাড়ার বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে বন্দুক-কার্তুজ তৈরির উপকরণ খুঁজে বের করা হবে।

কিন্তু এরপরও প্রশ্ন থেকে যাচ্ছে। জয়ন্তর অতীত কোনও ক্রিমিনাল ট্র্যাক রেকর্ড নেই। তাহলে কীভাবে শুধুমাত্র ইন্টারনেট ঘেঁটে বন্দুক-কার্তুজ বানিয়ে ফেলল সে?

Previous articleশ্রীলেখা মিত্রের স্বজনপোষণের অভিযোগ নিয়ে এবার মুখ খুললেন শাশ্বত চট্টোপাধ্যায়
Next articleএকনজরে বাংলার করোনা আপডেট