মেট ফ্রেডেরিকসন৷

ডেনমার্কের সোশ্যাল ডেমোক্র্যাটদের নেতা। ২০১৯ সালের জুন মাসে, মাত্র ৪২ বছর বয়সে ডেনমার্কের প্রধানমন্ত্রী হন৷ ডেনমার্কের ইতিহাসে দ্বিতীয় মহিলা প্রধানমন্ত্রী৷ এবং সর্বকনিষ্ঠ প্রধানমন্ত্রীও৷

বিশ্বজুড়ে মহামারি৷ এই সংকটকালে বহু মানুষেরই বিয়ে পিছিয়ে গিয়েছে৷
এবার এই তালিকায় ঢুকে পড়লেন ডেনমার্কের প্রধানমন্ত্রী মেট ফ্রেডেরিকসন।
গত কয়েক মাস ধরেই ভালোবাসার মানুষ, বো টেংবার্গ-কে বিয়ে করার পরিকল্পনা করে চলেছেন মেট। তিন-তিনবার দিনক্ষণও স্থির হয়৷ কিন্তু দেশের স্বার্থে তিনবারই তাঁকে পিছিয়ে দিতে হলো বিয়ে৷ মেটের এমন সিদ্ধান্ত দেশের মানুষের কাছে তাঁর সম্মান বাড়িয়ে দিয়েছে কয়েকগুন।

১৮ জুলাই বিয়ের দিন স্থির করেছিলেন মেট ফ্রেডেরিকসন এবং বো টেংবার্গ৷ এর আগে দু-দু’বার বিয়ের দিন ঠিক হয়েছিলো গত তিনমাসের মধ্যে৷ কিন্তু প্রতিবারই বাধা হয়ে দাঁড়ায় মারণ মহামারির প্রকোপ৷ মহামারিতে দেশের মানুষ আতঙ্কিত, উদ্বিগ্ন, ভীত৷ দেশবাসীর পাশে থেকে প্রতিটি দিন মহামারির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে নেতৃত্ব দিচ্ছেন মেট৷ সংকটকালে মানুষের পাশ থেকে সরে যাবেন শুধু নিজে বিয়ে করবেন বলে ?
কখনই নয়৷ দেশের মানুষ ভরসা করে তাঁদের প্রধানমন্ত্রী মেট ফ্রেডেরিকসনকে৷ তাঁর মুখের দিকে তাকিয়ে আছেন এই সংকট থেকে উদ্ধার পেতে৷ তাই তিনবারই স্থগিত করলেন নিজের বিয়ে৷ মেট নিজেই জানিয়েছেন একথা৷ বলেছেন, “আমার এই সিদ্ধান্ত দেশের মানুষের স্বার্থে। মহামারি নিয়ে ইউরোপিয়ান কাউন্সিলের জরুরি বৈঠকে যোগ দিতেই হবে আমাকে৷ দু’দিনের এই বৈঠক হবে ১৭-১৮ জুলাই৷ আর আমাদের বিয়ের দিনটা আবার ঠিক হয়েছিলো ওই ১৮ জুলাই-ই৷ দেশের কাজ ফেলে বিয়ে করতে যাবো ? তা আবার হয় নাকি ? গত তিনমাসে এই নিয়ে তিনবার দিন ঠিক করেও বিয়ে পিছিয়ে দিচ্ছি ডেনমার্কের মানুষের স্বার্থে”৷

গত তিন মাসের বেশি সময় ধরে গোটা দুনিয়া স্তব্ধ হয়ে আছে মারণ মহামারির দাপটে৷ পরিস্থিতি অস্বাভাবিক ৷ বহু মানুষ অকালে বিদায় নিয়েছেন৷ কেউ ভাইরাসের সঙ্গে লড়াই চালাচ্ছেন৷ বহু মানুষ কাজ হারিয়েছেন লকডাউনের জেরে৷ এমন পরিস্থিতিতে ডেনমার্কের প্রধানমন্ত্রী মেট ফ্রেডেরিকসন নিজের জীবনের সেরা অনুষ্ঠানটি সেরে ফেলতে চাইছেন না৷
দেশের মানুষের এই দুর্দিনে নিজের বিয়ের আনন্দ করা দেশের প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে একদমই বেমানান বলেই মনে করেছেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রীর নেওয়া এমন নজিরবিহীন সিদ্ধান্ত দেশের মানুষ কৃতজ্ঞতার সঙ্গেই স্বীকার করছে৷ দেশবাসীর কাছে তাঁর সম্মানও বাড়িয়ে দিয়েছে কয়েকগুন।

ফেসবুকে নিজের প্রেমিক
বো টেংবার্গ-এর সঙ্গে একটি ছবি পোস্ট করে বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রী ফ্রেডেরিকসন লিখেছেন, “আমি এই সেরা মানুষটিকে বিয়ে করার জন্য অধীর আগ্রয়ে অপেক্ষা করছি। কিন্তু এটা কিছুতেই সহজে হচ্ছে না। এবার একটা বড় বৈঠক চলে এল সামনে। জুলাই মাসের ঠিক যে শনিবারটিতে আমাদের বিয়ের তারিখ ছিল, ওই দিনই ব্রাসেলসে জরুরি বৈঠকটি হবে। দেশের জন্য আমায় সেই বৈঠকে যেতেই হবে। তাই আমি আবার পরিকল্পনা বদল করলাম। একইসঙ্গে বো-এর ধৈর্যের প্রশংসাও করছি”।

বো টেংবার্গ-এর সঙ্গে মেট-এর পরিচয় হয় ২০১৪ সালে৷ ২০১৭ সালে এনগেজমেন্ট হয়। কিন্তু কিছুতেই আর বিয়েটা করা হচ্ছে না৷ তবে ফ্রেডেরিকসেন বলেছেন, “তিনবার চেষ্টা করেও পারলাম না৷ আশা করছি, খুব তাড়াতাড়ি বিয়েটা সেরে ফেলতে আমি সফল হবোই”৷

