তিনি মাঠে নেমে মাটিও কাটেন, আবার এলাকার মানুষের অভাব অভিযোগ শুনে তার সমাধানের চেষ্টাও করেন। তিনি আর কেউ নন, তৃণমূল মন্ত্রিসভার সদস্য স্বপন দেবনাথ।
তথাকথিত ‘মন্ত্রী’র প্রোফাইল ছেড়ে যখন তখন মাঠে নেমে কাজ করতে পিছপা হননি কখনও।প্রত্যেক রবিবার তিনি ১০০দিনের কাজে শ্রমিকদের সাহায্য করছেন। বিরোধীদের কটাক্ষ গায়ে মানছেন না তিনি । তবু তাঁর কাজের সমালোচনায় নেমেছে জেলার সিপিএম, বিজেপি, কংগ্রেস নেতৃত্ব।
গত রবিবারের ঘটনা ।পূর্বস্থলিতে বিলের পাশে বৃক্ষরোপণের জন্য গিয়েছিলেন মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ। বাসিন্দাদের অভিযোগ, বিলের জলে কচুরিপানা জমে যাওয়ায় স্নান করতে অসুবিধা হচ্ছে। সেই কথা শুনে স্নানঘাটে তিনি নিজেই নেমে পড়েছিলেন কচুরিপানা পরিষ্কার করতে। ফতুয়া-লুঙ্গি পরে, কাঁধে গামছা নিয়ে সোজা বিলে নেমে গিয়েছিলেন রাজ্যের ক্ষুদ্র, ছোট ও মাঝারি শিল্প দফতরের মন্ত্রী স্বপনবাবু । সবার সঙ্গে হাতে হাত লাগিয়ে কচুরিপানা পরিষ্কারও করেন।
প্রতি রবিবার পূর্বস্থলী-১ ব্লকের বাঁশদহ ও চাঁদের বিলের ধারে গাছের চারা লাগানো অভ্যাসে পরিণত করে ফেলেছেন তিনি। তাঁকে এভাবে কাজ করতে দেখে অনেকেই উৎসাহিত হয়েছেন।
এই রবিবারও পূর্বস্থলী ১ নং ব্লকের বাঁশদহ ও চাঁদের বিলের পাশে কেটে রাখা প্রায় ১০০ ঝুড়ি মাটি টানলেন মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ। ১০০দিনের কাজে সাহায্য করলেন শ্রমিকদের।
পূর্বস্থলী উত্তরের সিপিএম বিধায়ক প্রদীপ সাহা বলেন, ”মন্ত্রী নিজে করছেন ওইসব কাজ, দেখতে ভাল লাগে। কিন্তু মন্ত্রীর দায়িত্ব কাজ করিয়ে নেওয়া। যাদের ওই কাজ করার কথা তা করছে না। আর এই ধরনের কাজ করে বোঝাতে চান অন্যরা খারাপ, উনি ভাল। এটা ওনার নিজস্ব ঢং। তবে এত কিছু করেও তৃণমূল ২০২১এ ফিরতে পারবে না। ”
পূর্ব বর্ধমান জেলা যুব কংগ্রেস সভাপতি গৌরব সমাদ্দার বলছেন, ”একজন মন্ত্রী হিসেবে ওনার কাজ হচ্ছে সার্বিক উন্নয়ন। মাটি ফেলা ওনার কাজ না, ওনার দেখা উচিত ওখানকার রাস্তাঘাটের কাজকর্ম। ১০০ দিনের কাজে যে দুর্নীতি হচ্ছে, সেটা যাতে না হয়, সবাই যেন ঠিকঠাক ১০০ দিনের কাজ পায়, ওখানকার স্বাস্থ্য-শিক্ষা ব্যবস্থা ঠিকঠাক থাকে।” যদিও এইসব সমালোচনা পিছনে ফেলে মন্ত্রীমশাই মশগুল নিজের কাজে। তাঁর সাফ কথা, ইচ্ছে থাকলেই উপায় হয়।অন্যরা করেনি বলে আমিও করব না, এই তত্ত্বে আমি বিশ্বাসী নই। আমাকে দেখে যদি কেউ উৎসাহিত হয়, তবে আমার খাটনি সার্থক।